গলায়, ঘাড়ে বা কনুইতে কালচে দাগ দেখা দেয় অনেকের। ঘাড়ের কাছে চামড়া কুঁচকে যাওয়া, সেখানে ফুস্কুড়ি, চুলকানির সমস্যাও হয়। অনেকেই ভাবেন, ময়লা জমে কালচে দাগ হয়েছে। তা কিন্তু নয়। এই কালচে দাগ কিছু ক্ষেত্রে চর্মরোগের জন্য হয়ে থাকে, তা ছাড়া লিভারের অসুখ দেখা দিলে তার জন্যও এমন দাগ পড়ে গলায় বা ঘাড়ে। চিকিৎসাবিজ্ঞানের ভাষায় একে বলে ‘অ্যাকান্থোসিস নিগ্রিকানস’। লিভারে মেদ জমতে থাকলে এমন সমস্যা দেখা দেয়।
পাবমেড থেকে প্রকাশিত একটি গবেষণাপত্রে ‘অ্যাকান্থোসিস নিগ্রিকানস’-এর কারণ নিয়ে বিস্তারিত আলোচনা করেছেন গবেষকেরা। সেখানে বলা হয়েছে, রক্তে শর্করার মাত্রা বেড়ে গেলে অথবা সংশ্লিষ্ট ব্যক্তি ‘ইনসুলিন রেজিস্ট্যান্ট’ হলে ত্বকের মেলানিন রঞ্জকের তারতম্য দেখা দেয়। চামড়া কুঁচকে যেতে শুরু করে। টাইপ ২ ডায়াবিটিসের ক্ষেত্রেও রোগীর শরীরে এমন লক্ষণ দেখা দেয় অনেক সময়েই।
আরও পড়ুন:
গবেষকেরা জানাচ্ছেন, ‘ইনসুলিন রেজিস্ট্যান্স’-এর একটি কারণই হল লিভারের রোগ। লিভারে মেদ জমতে শুরু করলে রক্তে ইনসুলিনের ক্ষরণ বেড়ে যায়। তার মধ্যে যদি জাঙ্ক ফুড, ভাজাভুজি বেশি খাওয়া হয়, তা হলে মেটাবলিক সিনড্রোমও দেখা দেয়। এর ফলে শরীরে প্রদাহ বাড়তে থাকে। শুধু ফ্যাটি লিভার হলে তা কম ক্ষতিকর। তবে তার সঙ্গে যদি প্রদাহ দেখা দেয়, তা হলে ক্ষতি বেশি হয়। কারণ, এর থেকেই পরে ফাইব্রোসিস, সিরোসিস হতে পারে।
গলায় এমন দাগ দেখা দিলে দেরি না করে চিকিৎসকের কাছে যাওয়ারই পরামর্শ দিচ্ছেন গবেষকেরা। সেই সঙ্গে, জীবনযাপনে কিছু বদলও আনতে হবে। শুধু ওষুধের উপর নির্ভর করে থাকলে হবে না। প্যাকেটজাত, ভাজাভুজি, চিজ়যুক্ত খাবার, অতিরিক্ত চকোলেট খাওয়া বন্ধ করতে হবে। তার বদলে সুষম আহার প্রয়োজন। রোজ প্রচুর পরিমাণে শাকসব্জি, ফল খাওয়া জরুরি। ২টি করে মরসুমি ফল রাখুন রোজের খাদ্যতালিকায়। স্ন্যাক্স খাওয়ার ইচ্ছা হলে, শুকনো কড়াইয়ে নাড়া মুড়ি, চিঁড়ে, মাখনা রাখতে পারেন। চপ-কাটলেট খাওয়া চলবে না।স্বাদের জন্য নয়, স্বাস্থ্যের জন্য ভাল, এমন খাবার নির্বাচন করতে হবে।