Advertisement
E-Paper

ধুকপুক করে বুকের ডান দিক, ওলটপালট হয় সব অঙ্গপ্রত্যঙ্গ, প্রতি ১২ হাজারে ১ জনের হয় বিরল রোগ

বিরলের মধ্যে বিরলতম রোগ। প্রতি ১২ হাজার শিশুর এক জন এই রোগ নিয়ে জন্মায়। এর চিকিৎসাও খুব জটিল।

আনন্দবাজার ডট কম ডেস্ক

শেষ আপডেট: ০১ জুলাই ২০২৫ ১১:৪১
Dextrocardia is a rare congenital condition where the heart is positioned on the right side of the chest

বিরলের মধ্যে বিরলতম রোগ, এলোমেলো হয়ে যায় হার্ট ও বাকি অঙ্গপ্রত্যঙ্গ। ছবি: ফ্রিপিক।

বুকের এক্স রে করতে গিয়ে অনেক সময়েই প্রকাশ্যে আসে ব্যাপারটা। না হলে রোগটি ধরা খুব মুশকিল। বুকের ডান দিকটা ধুকপুক করতে থাকলে, তা সাধারণ সমস্যা ভেবে এড়িয়েই যান বেশির ভাগ মানুষ। শরীরের ভিতরে কী গোলমাল বেধে আছে, তা বোঝা তো সহজ নয়! বিশ্বে যত রকম বিরল রোগ আছে, তার মধ্যে একটি হল ডেক্সট্রোকার্ডিয়া। এমন এক শারীরিক সমস্যা, যেখানে,হৃৎপিণ্ড বাঁ দিকের বদলে থাকে বুকের ডান দিকে। বুকের ডান দিকে হার্ট নিয়েই জন্ম হয় শিশুর। এখানেই কিন্তু বিষয়টা থেমে থাকছে না। হার্ট যদি ডান দিকে থাকে, তা হলে তার সঙ্গে সামঞ্জস্য রেখে বাদবাকি অঙ্গগুলি কিন্তু নিজেদের অবস্থান বদলে ফেলে। তখনই শুরু হয় আসল সমস্যা।

হার্ট বাঁ দিকে থাকবে, তেমনটাই স্বাভাবিক। এখন যদি তা ডান দিকে চলে যায়, তা হলে সমস্যা হতে বাধ্য। রক্তনালিগুলি এমন ভাবে জট পাকিয়ে যাবে, যে রক্ত চলাচল স্বাভাবিক নিয়মেই হবে না। তখনই শুরু হবে যন্ত্রণা, বুক ধড়ফড় করা এবং কিছু ক্ষেত্রে শ্বাসকষ্টও। হার্টের চিকিৎসক দিলীপ কুমার জানাচ্ছেন, বিরলতম রোগ হল ডেক্সট্রোকার্ডিয়া। আগে থেকে বোঝার উপায় থাকে না, যে শিশু বুকের ডান দিকে হার্ট নিয়েই জন্মাচ্ছে। তখন সব কিছুই উল্টেপাল্টে যাবে। বুকের ডান দিকে হার্ট রয়েছে এমন অনেক রোগীই আছেন, যাঁদের যকৃৎ, প্লীহা, ফুসফুসের অবস্থান উল্টো দিকে। সে ক্ষেত্রে অস্ত্রোপচার করেই এই জটিলতা দূর করার চেষ্টা করা হয়।

এমন শারীরিক অবস্থা কেন হয়, তার সঠিক কারণ এখনও অবধি জানা যায়নি। এ দেশের ‘ন্যাশনাল ইনস্টিটিউট অফ সায়েন্স’ এবং আমেরিকার ‘জন হপকিন্স মেডিসিন’ থেকে এই বিষয়ে একাধিক গবেষণাপত্র প্রকাশিত হয়েছে। সেখানে গবেষকেরা জানিয়েছেন, প্রতি ১২ হাজার নবজাত শিশুর ১ জনের এই রোগ হতে পারে। এর জন্য জিনগত কারণও দায়ী। এই রোগটির নানা দশা আছে। অর্থাৎ, ডেক্সট্রোকার্ডিয়া অনেক রকম হয়। সকলের ক্ষেত্রেই যে লক্ষণ এক রকম হবে তা একেবারেই নয়।

ডেক্সট্রোকার্ডিয়ার নানা দশা

রোগটির একটি ধরন হল ‘সাইটাস সোলিটাস’। এখানে হার্ট ডান দিতে থাকলেও, বাকি অঙ্গগুলি উল্টেপাল্টে যায় না। তারা তাদের অবস্থানেই ঠিক থাকে। তবে হার্টের অবস্থা সময়ের সঙ্গে সঙ্গে খারাপ হতে থাকে। আর একটি অবস্থা হল ‘সাইটান ইনভার্সাস’ । এ ক্ষেত্রে হার্টের সঙ্গে সঙ্গে প্লীহা, লিভার এগুলির অবস্থানও বদলে যায়। আইসোলেটেড ডেক্সট্রোকার্ডিয়া আবার ভয়াবহ। সে ক্ষেত্রে শরীরের ভিতর অঙ্গপ্রত্যঙ্গের অবস্থানের অদলবদল তো হয়ই এবং তার কোনও লক্ষণও বোঝা যায় না। তলে তলে সব অঙ্গগুলি বিকল হতে শুরু করেছে কি না, তা ধরা পড়ে অনেক পরে।

ডেক্সট্রোকার্ডিয়া হলে ত্বক ও ঠোঁটের রং নীলচে হয়ে যেতে পারে। মাঝেমধ্যেই অজ্ঞান হয়ে যেতে পারেন রোগী। ঘন ঘন শ্বাসের সংক্রমণ হতে পারে। ক্লান্তি বাড়তে পারে। হৃৎস্পন্দন অনিয়মিত হয়ে যেতে পারে। বুকে মাঝেমধ্যেই ব্যথা হতে পারে রোগীর।

চিকিৎসা কি সম্ভব?

এমন রোগীর সংখ্যা বিরল। চিকিৎসক জানাচ্ছেন, এই বিরল রোগ আগে থেকে প্রতিরোধ করাও সম্ভব নয়। তাই একটা বয়সের পর সকলেরই স্বাস্থ্যপরীক্ষা করিয়ে নেওয়া জরুরি। বিশেষ করে হার্টের কিছু টেস্ট করিয়ে রাখা খুবই দরকার। তখন কোনও অস্বাভাবিকতা থাকলে সেটা ধরা পড়বে। হার্টের স্পন্দন যদি অনিয়মিত হয়ে যায়, তখন পেসমেকার বসাতেই হবে। না হলে অস্ত্রোপচার করার প্রয়োজন হবে।

Rare Disease Heart Disease Heart Problem
Advertisement

আরও পড়ুন:

Share this article

CLOSE

Log In / Create Account

We will send you a One Time Password on this mobile number or email id

Or

By proceeding you agree with our Terms of service & Privacy Policy