ডায়াবিটিসের রোগী এখন ঘরে ঘরেই। যাঁদের নিয়মিত ইনসুলিন নিতে হয়, বা ঘন ঘন শর্করা মাত্রা ওঠানামা করে, তাঁদের অনেকেই বাড়িতে শর্করা মাপার যন্ত্র রাখেন। সাম্প্রতিক বহু যন্ত্রেই খুব সহজে নির্ভুল ভাবে রক্তে শর্করার মাত্রা মাপা যায়।
কিন্তু জানেন কি, যে যন্ত্রে নিয়মিত শর্করা মাপছেন, তাতেও ভুল ফলাফল আসতে পারে? রক্ত পরীক্ষারও কিছু নিয়মকানুন আছে। এতে ভুল হলে সংক্রমণের ঝুঁকি বাড়তে পারে।
একই ল্যানসেটের ব্যবহার: রক্তে শর্করা মাপার কোনও কোনও যন্ত্র দেখতে হয় পেনের মতো। রক্ত সংগ্রহের জন্য তার মধ্যে থাকে সূক্ষ্ম সুচ, যেটিকে ‘ল্যানসেট’ বলা হয়। অনেকেই একই ল্যানসেট একাধিক বার ব্যবহার করেন। বার বার ব্যবহারে সুচ ভোঁতা হয়ে যায়। তা যেমন ব্যথার কারণ হতে পারে, তেমনই সংক্রমণের ঝুঁকি বেড়ে যায়। ল্যানসেট নিয়মিত বদলানো দরকার।
শর্করা পরীক্ষার স্ট্রিপস: ল্যানসেটের মাধ্যমে রক্ত বার করার পর সেই রক্তের ফোঁটা ফেলা হয় বিশেষ ধরনের স্ট্রিপে। সেই স্ট্রিপ মনিটর লাগানো যন্ত্রে ধরলে রক্তে শর্করার মাত্রা সেই সময় কত, তা জানা যায়। এই স্ট্রিপগুলি রাখারও নির্দিষ্ট পদ্ধতি রয়েছে। ঠিকমতো সংরক্ষণ করা না গেলে, এ থেকে ভুল রিডিং আসতে পারে। মেয়াদ-উত্তীর্ণ স্ট্রিপ ব্যবহারও সমস্যা বাড়াবে।
ভুল সময়: খাবার আগে বা পরে কখন রক্ত পরীক্ষা করছেন তার উপর শর্করার পরিমাণ নির্ভর করবে। অনেকে খাওয়ার পরেই শর্করার মাত্রা দেখেন। এটি কিন্তু সঠিক নিয়ম নয়। চিকিৎসকেরা বলছেন, প্রাতরাশ, দুপুরে বা রাতের খাওয়ার ঘণ্টা দুয়েক পরে রক্ত পরীক্ষা করা উচিত। খাওয়ার আগে করলে তা অন্তত আধ ঘণ্টা আগে করতে হবে।
দিল্লির ডায়াবিটিসের চিকিৎসক নরেন্দ্র সিংলার কথায়, শর্করা মাপার যন্ত্রটি কী ভাবে কাজ করে, কী ভাবে রক্ত পরীক্ষা করতে হবে, সে বিষয়ে সংশ্লিষ্ট যন্ত্রের নির্দেশিকাটি দেখে নেওয়া দরকার। রোগী যদি পদ্ধতিগত ভুল করেন, ভুল রিপোর্ট আসবে। সেই রিপোর্টের ভিত্তিতে চিকিৎসা হলে, ক্ষতি হতে পারে। সে কারণে কোনও কোনও চিকিৎসক পরামর্শ দেন, বাড়িতে শুধু যন্ত্রের উপর নির্ভর না করে, পেশাদার কোনও প্যাথোলজি সেন্টারে পরীক্ষা করিয়ে নেওয়ার।
কোন ভুল এড়াবেন?
রক্ত পরীক্ষার আগে অনেকেই হাত সাবান দিয়ে ধোন না। তা ছাড়া, যে আঙুল থেকে রক্ত নেওয়া হচ্ছে সেটিও স্পিরিট দিয়ে মুছে নেওয়া প্রয়োজন। অথচ এই ধাপটি অনেকেই বাদ দেন। চিকিৎসক সতর্ক করছেন, হাত না ধুয়ে রক্ত পরীক্ষা করলে সংক্রমণের আশঙ্কা থাকে।