Advertisement
E-Paper

চোখে ঝাপসা দেখা মানেই পাওয়ার বেড়ে যাওয়া নয়, রেটিনার সমস্যাও হতে পারে! কী ভাবে বুঝবেন?

ঝাপসা দেখা মানেই অনেকেই মনে করেন এই সমস্যা চোখের পাওয়ার বৃদ্ধির কারণে হচ্ছে। তবে এই সব লক্ষণ কিন্তু রেটিনার সমস্যাও হতে পারে। রেটিনার ম্যাকুলায় ছিদ্র হলে দৃষ্টিজনিত এমন সমস্যা দেখা দিতে পারে। কী ভাবে সতর্ক হবেন?

আনন্দবাজার ডট কম ডেস্ক

শেষ আপডেট: ২০ নভেম্বর ২০২৫ ১৪:১৩
রেটিনার সমস্যা বুঝবেন কী করে?

রেটিনার সমস্যা বুঝবেন কী করে? ছবি: সংগৃহীত।

কারও মুখের দিকে তাকালেই মনে হচ্ছে, মুখটা কালো ও ঝাপসা। টিউবলাইটের দিকে তাকালে মনে হচ্ছে, লাইটের মাঝখানে যেন গর্ত রয়েছে! চোখে এ রকম সমস্যা কয়েক দিন ধরেই হচ্ছে? অনেকেই মনে করেন এই সমস্যা চোখের পাওয়ার বৃদ্ধির কারণে হচ্ছে। তবে এই সব লক্ষণ কিন্তু রেটিনার সমস্যা থেকেও হতে পারে। রেটিনার ম্যাকুলায় ছিদ্র হলে দৃষ্টিজনিত এমন সমস্যা দেখা দিতে পারে। এ ক্ষেত্রে যত দ্রুত সম্ভব, চিকিৎসা শুরু না করলে দৃষ্টিশক্তি হারানোর সম্ভাবনা বেড়ে যায়। মানসিক চাপ, ঘুমের অভাব, বয়সজনিত ম্যাকুলার ডিজেনারেশন এবং ডায়াবেটিক ম্যাকুলার এডিমা— রেটিনার কার্যকারিতা কমে যাওয়ার নেপথ্যে এই কারণগুলিকেই দায়ী করেন চিকিৎসকেরা।

রেটিনার রোগের উপসর্গ

বয়সজনিত ম্যাকুলার ডিজেনারেশন: মূলত ৫০ বছরের পরে এই সমস্যা শুরু হয়। এ ক্ষেত্রে রেটিনার একেবারে মধ্যভাগ(ম্যাকুলা) ক্ষতিগ্রস্ত হয়। এই রোগে পড়তে অসুবিধা হয়, গাড়ি চালাতে গেলে সমস্যা হয়, এমনকি ব্যক্তিকে চিনতেও সমস্যা হতে পারে।

ডায়াবেটিক রেটিনোপ্যাথি: ডায়াবেটিক রেটিনোপ‌্যাথির ক্ষেত্রে প্রাথমিক পর্যায়ে রেটিনার রক্তবাহী সরু ধমনীগুলি দুর্বল হয়ে পড়ে। ফলে এক প্রকার ফ্লুইডের ক্ষরণ শুরু হয়। দৃষ্টিশক্তি কমতে শুরু করে। পরবর্তী পর্যায়ে ধমনীতে রক্ত চলাচলের সমস‌্যা আরও বেড়ে যায়। ফলে রেটিনার সব অংশে ঠিক মতো অক্সিজেন পৌঁছোতে পারে না। অনেক ক্ষেত্রে চোখে রক্তক্ষরণ শুরু হয়, অন্ধত্বের ঝুঁকিও তৈরি হয়। দৃষ্টিশক্তি ঝাপসা হয়ে যায়, রং চিনতে সমস্যা হয়, পড়তে অসুবিধা হয়, চোখের সামনে হঠাৎ করে অন্ধকার নেমে আসে, কখনও আবার আলোর ঝলকানি চোখে পড়ে। বয়স্ক ব্যক্তি যাঁরা দীর্ঘ দিন ধরে ডায়াবিটিসে ভুগছেন তাঁদের এই রোগ ধরা পড়ে।

রেটিনাল ভেন অক্লিউশন: সাধারণত বয়স্কদেরই এই সমস্যা হয়। রেটিনার ধমনীগুলি ব্লক হয়ে গিয়ে দৃষ্টিশক্তি কমে যায় এ ক্ষেত্রে।

রেটিনোপ্যাথি অফ প্রিম্যাচিউরিটি: সদ্যোজাতদের মধ্যে এই সমস্যা দেখা যায় অনেক সময়। যে সব শিশুর জন্মের সময় ওজন অনেকটা কম হয়, তাদের এই সমস্যা হতে পারে।

প্রাথমিক পর্যায়ে রেটিনার সমস্যার লক্ষণ ও উপসর্গগুলি শনাক্ত করা এবং সময় মতো চিকিৎসকের সাহায্য নেওয়া ভীষণ গুরুত্বপূর্ণ। এই সমস্যা থেকে প্রতিকার পেতে মানসিক চাপ কমানোর দিকে নজর দিতে হবে। মানসিক চাপ নিয়ন্ত্রণে রাখা, নিয়মিত চক্ষু পরীক্ষা করা আর সময় মতো ওষুধ নিয়ে রেটিনার এই সব সমস্যা প্রতিরোধ করা যেতে পারে।

কী ভাবে রেটিনার সমস্যা এড়িয়ে চলবেন?

১) ডায়াবিটিস, উচ্চ রক্তচাপ, কোলেস্টেরলের সমস্যা ধরা পড়লে সেই রোগগুলিকে নিয়ন্ত্রণে রাখতে হবে। সময় মতো ওষুধ খাওয়া, নির্দিষ্ট সময় অন্তর চিকিৎসকের পরামর্শ নিতে হবে।

২) বয়সজনিত ম্যাকুলার ডিজেনারেশনের অন্যতম কারণ হতে পারে ধূমপান। তাই রেটিনার সমস্যা এড়াতে ধূমপান বন্ধ করতে হবে।

৩) অতিবেগনি রশ্মি থেকে রেটিনাকে বাঁচাতে রোদে বেরোলে ভাল সানগ্লাস পরুন।

৪) মানসিক চাপ থেকে দূরে থাকতে হবে। এর জন্য নিয়মিত শ্বাসের ব্যায়াম, যোগাসন, ধ্যান করতে হবে। পড়াশোনা কিংবা কলেজের কাজকর্ম ছাড়াও এমন কোনও কাজে মন দিন, যা আপনার করতে ভাল লাগে। মাঝেমাঝে ঘুরতে যান, বন্ধুবান্ধবের সঙ্গে সময় কাটান।

৫) ঘুমোনোর আগে ইলেক্ট্রনিক ডিভাইস থেকে দূরে থাকুন। সারা দিনের স্ক্রিন টাইম কমাতে হবে। প্রয়োজনের বাইরে ল্যাপটপ, ফোন, কম্পিউটার না ধরাই ভাল।

৬) এ ছাড়াও খাওয়াদাওয়ার উপরেও নজর রাখতে হবে। বেশি করে মরসুমি ফল, শাকসব্জি, লিন প্রোটিন, শস্যজাতীয় খাবার ডায়েটে রাখতে হবে।

৭) চোখের সমস্যা না থাকলেও বছরে অন্তত এক বার চোখের পরীক্ষা করান।

Eye Care Tips Eye Health Tips
Advertisement

আরও পড়ুন:

Share this article

CLOSE

Log In / Create Account

We will send you a One Time Password on this mobile number or email id

Or

By proceeding you agree with our Terms of service & Privacy Policy