আলোনা সেদ্ধ খাবার নয়, বরং মশলার সঠিক মিশেল খাবারে স্বাদ আনার পাশাপাশি যত্ন নেবে শরীরের। ভারতীয় মশলার স্বাদ-গন্ধের খ্যাতি সর্বত্র। তবে তার পুষ্টিগুণও কম নয়। ভারতে দীর্ঘ দিনের রন্ধনপ্রণালী মেনেই রান্নায় ধনে, জিরে, গোলমরিচ, হলুদ ব্যবহার করা হয়।
তবে ভারতীয় স্নায়ুরোগের চিকিৎসক মনে করাচ্ছেন মশলার গুণের কথা। কর্নাটকের চিকিৎসক প্রশান্ত কাটাকোল সমাজমাধ্যমে সুস্থ থাকার নানা পরামর্শ দিয়ে থাকেন। তিনি জানাচ্ছেন, মস্তিষ্ককে কর্মক্ষম রাখার উপাদান মজুত রয়েছে ভারতীয় হেঁশেলেই। তা ছাড়া মশলার এতটাই গুণ যা সামগ্রিক ভাবে শরীর ভাল রাখতে সাহায্য করে।
জিরে: নিরামিষ খাবারে বা আমিষেও ব্যবহার হয় জিরে। মাঝের ঝোল হোক বা গা মাখা তরকারি, জিরে ফোড়নে বা জিরে গুঁড়ো মশলা হিসাবে দেওয়া হয়। চিকিৎসক বলছেন, জিরে হজমকারক। পিত্তরস এবং হজমে সহায়ক উৎসেচকের উৎপাদনে তা সাহায্য করে। অক্সিডেটিভ স্ট্রেস কমিয়ে শরীর সুস্থ রাখতেও তা কার্যকর। এতে মেলে আয়রন। জিরেতে প্রদাহনাশক উপাদানও রয়েছে।
দারচিনি: দারচিনি রক্তে চিনির মাত্রা নিয়ন্ত্রণে রাখতে সাহায্য করে। বিশেষত যাঁদের ইনসুলিন সেনসিটিভিটি এবং টাইপ ২ ডায়াবিটিস রয়েছে, তাঁদের জন্য দারচিনি খাওয়া অত্যন্ত ভাল।
ইনসুলিন সেন্সিটিভিটি নিয়ন্ত্রণ করে ওজন কমাতে সহায়ক দারচিনি। এতে রয়েছে প্রচুর অ্যান্টি-অক্সিড্যান্ট। শরীরে তৈরি হওয়া ফ্রি র্যাডিক্যালস কোষের ক্ষতি করে, অক্সিডেটিভ স্ট্রেস তৈরি করে। তা কমিয়ে মস্তিষ্কের কোষ পুনরুজ্জীবিত করতে সাহায্য করে দারচিনি। অ্যালঝাইমার্সের মতো বেশ কিছু স্নায়বিক অসুখের ঝুঁকি কমে এতে।
আদা: হজমের সমস্যা, পেট ফাঁপা এবং বমি বমি ভাব দূর করতে দারুণ কার্যকর। এতে থাকা জিনজেরল শক্তিশালী অ্যান্টি-অক্সিড্যান্ট এবং প্রদাহনাশক উপাদান। মিয়েঅক্সিডেটিভ স্ট্রেস এবং প্রদাহ কমিয়ে সচল রাখতে এটি পরোক্ষ ভাবে সাহায্য করে। বয়সজনিত মস্তিষ্কের অসুখের ঝুঁকিও এতে কমে।
কী ভাবে খাবেন?
মশলা হিসাবেই এগুলি রান্নায় ব্যবহার করা হয়। তবে পুষ্টিগুণ পেতে হলে জলে আদা থেঁতো করে ফুটিয়ে নিন। এতে সামান্য দারচিনি এবং জিরে যোগ করুন। ফোটানো জল ছেঁকে চায়ের মতো পান করুন। সকাল-সন্ধ্যা এক কাপ করে খেলে শরীর ঝরঝরে লাগবে, হজমের সমস্যাও কমবে।