সকালে গরম, রাতে ঠান্ডা। খুসখুসে কাশি আর বন্ধ নাক এই আবহাওয়ার নিত্যসঙ্গী। ঠান্ডা লাগলে কারও নাক থেকে কলের জলের মতো অনবরত সর্দি বেরোতে থাকে, আবার কারও ক্ষেত্রে মিউকাস ঘন হয়ে যায়। সে ক্ষেত্রে শ্বাস-প্রশ্বাসের সমস্যা হয়। মুক্তি পেতে বারে বারে নাক ঝাড়ার প্রবণতা বৃদ্ধি পায়।
নাক ঝাড়লে সাময়িক ভাবে ‘নেজ়াল প্যাসেজ’ উন্মুক্ত হয় ঠিকই, তবে চিকিৎসকেরা বলছেন, তাতে উপকারের চেয়ে ক্ষতির আশঙ্কাই বেশি। এমনকি, কানের পর্দা ফেটেও যেতে পারে। শহরের এক বেসরকারি হাসপাতালের কান-নাক-গলার চিকিৎসক সৌত্রিক কুমার আনন্দবাজার অনলাইনকে বলেন, “সবচেয়ে বড় সমস্যা হল নাক থেকে রক্ত পড়া। নাক ভীষণ স্পর্শকাতর ইন্দ্রিয়। তার ভিতর যে সূক্ষ্ম, পাতলা ঝিল্লি থাকে, সেগুলি সামান্য ধাক্কা বা চাপেই ছিঁড়ে যেতে পারে। ফলে সেখান থেকে রক্তপাত শুরু হয়। সেটা সারতেও অনেক সময় লাগে।”
আরও পড়ুন:
নাক ঝাড়লে কানের ক্ষতি হয়?
নাকের সঙ্গে কান এবং গলার সরাসরি যোগ রয়েছে। সৌত্রিকের কথায়, “নাক ঝাড়লেই যে কানের পর্দা ফেটে যাবে, এমনটা নয়। তবে কারও যদি কানের পর্দা পাতলা হয় বা আগে থেকে কানে কোনও সমস্যা থেকে থাকে, তা হলে সাবধান হওয়াই ভাল। এ ছাড়া যাঁদের সাইনুসাইটিস রয়েছে, তাঁরা যদি সজোরে বার বার নাক ঝাড়তে যান, তা হলে পরিস্থিতি জটিল হতে পারে।”
কী ভাবে নাক ঝাড়লে সমস্যা মিটবে?
নাক ঝাড়া যে কোনও পরিস্থিতিতেই খারাপ। তবে সৌত্রিকের মতে, “সঠিক পদ্ধতি মেনে যদি রোজ নেতি করা যায়, তা হলে বন্ধ নাকের সমস্যা থাকবে না। নাসারন্ধ্রে জমা ধুলোবালি, ব্যাক্টেরিয়াও বেরিয়ে যাবে। তাই বলে কলের জল হাতে নিয়ে নাক দিয়ে টানতে যাবেন না। স্যালাইন ওয়াটার পেলে খুব ভাল। না হলে ফোটানো জল ব্যবহার করা যেতে পারে।”
আরও পড়ুন:
কী ভাবে নেতিক্রিয়া করতে হয়?
· প্রথমে পরিষ্কার পাত্রে পরিমাণ মতো জল ফুটিয়ে নিন। নাকের ভিতর কাটা-ছেঁড়া, ঘা না থাকলে এক চিমটে নুনও দিতে পারেন।
· ভাল করে ফুটিয়ে গ্যাস বন্ধ করে দিন। জলের তাপমাত্রা প্রায় স্বাভাবিক হয়ে এলে নেতিক্রিয়ায় তা ব্যবহার করা যাবে।
· নেতিক্রিয়ার জন্য বিশেষ এক ধরনের কাচের পাত্র পাওয়া যায়। হাতের কাছে সেটি না থাকলে বিকল্প হিসাবে ড্রপার ব্যবহার করতে পারেন।
· এ বার বেসিনের সামনে একটু ঝুঁকে দাঁড়ান। মাথা যে কোনও এক পাশে হেলিয়ে রাখতে হবে।
· এ বার ফোটানো জল ড্রপারের সাহায্যে হেলানো দিকের উল্টো পথ দিয়ে প্রবেশ করাতে হবে। অর্থাৎ, বাঁ দিকে মাথা হেলিয়ে রাখলে ডান নাসারন্ধ্র দিয়ে জল প্রবেশ করাতে হবে। খেয়াল করে দেখবেন, ডান নাসাপথ দিয়ে প্রবেশ করা জল বাহিত হয়ে বাঁ দিক দিয়ে বেরিয়ে যাবে।
· একই ভাবে ডান দিকে মাথা হেলিয়ে, বাঁ নাসারন্ধ্র দিয়ে জল প্রবেশ করাতে হবে। বাঁ নাসাপথ দিয়ে প্রবেশ করা জল ডান দিক দিয়ে বেরিয়ে যাবে।