নিত্যদিনের কাজেকর্মে, যাপনে অ্যালুমিনিয়ামের ব্যবহার থাকে না, এমন ভারতীয় পরিবারের সংখ্যা কমই আছে। সে অ্যালুমিনিয়ামের ভাতের হাঁড়ি হোক, দুধ রাখার প্যান, খাবার মুড়ে রাখার অ্যালুমিনিয়াম ফয়েল হোক বা জলের বোতল। এক এক বাড়িতে এক এক রকমের ব্যবহার। অনেকেই আছেন যাঁরা আবার অ্যালুমিনিয়ামের বাসনপত্র বাড়ি থেকে বার করে দিচ্ছেন, টিফিন মুড়তে আর অ্যালুমিনিয়াম ফয়েল ব্যবহার করছেন না। কারণ, অ্যালুমিনিয়াম থেকে নাকি ক্যানসারের ঝুঁকি বাড়ে। কিন্তু অ্যালুমিনিয়াম কি আদৌ শরীরের তেমন ক্ষতি করে?
অ্যালুমিনিয়াম খুবই সহজপ্রাপ্য একটি ধাতু, এই ধাতু খুব বেশি ভারী না আর খাবারে সঙ্গে খুব বেশি বিক্রিয়া করে না— বাসনপত্র কিংবা ফয়েল বানাতে অ্যালুমিনিয়াম ব্যবহার করা হয় মূলত এই তিনটি কারণে। অনেকেই ভাবেন অ্যালুমিনিয়ামের বাসনে রান্না করলে শরীরে তা জমা হয়, এই ধারণা কতটা ঠিক? ক্যানসার চিকিৎসক জয়েশ শর্মা বলেন, ‘‘অ্যালুমিনিয়াম খাবারের সঙ্গে তেমন ভাবে বিক্রিয়া করে না। খাবার তৈরির সময় যে মাত্রায় অ্যালুমিনিয়াম মেশে তা শরীরে গেলে কিডনি তা বার করে দেওয়ার ক্ষমতা রাখে। অ্যালুমিনিয়াম শরীরে জমা হয় না, কারণ এটি হালকা ধাতু। অ্যালুমিনিয়ামের পাত্রে রান্না করলে টক্সিসিটি হতে পারে, তবে এর থেকে ক্যানসারের ঝুঁকি একেবারেই নেই।’’
বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থা (হু)-র মতে, এক জন প্রাপ্তবয়স্ক প্রতি দিন প্রায় ৫ মিলিগ্রাম অ্যালুমিনিয়াম গ্রহণ করতে পারেন। মানুষের শরীরে এর চেয়ে বেশি অ্যালুমিনিয়াম চলে গেলে, তা নানাবিধ ক্ষতি করতে পারে। তবে অ্যালুমিনিয়ামের পাত্রে রান্না করলে কিংবা অ্যালুমিনিয়ামের ফয়েলে খাবার মুড়লে সেই মাত্রায় অ্যালুমিনিয়াম শরীরে যাওয়ার কথা নয়। চিকিৎসকের মতে, অ্যালুমিনিয়ামের বাসনপত্র বাড়ি থেকে বার করে দিতে হবে না বরং কিছু নিয়ম মেনে চললেই এর ক্ষতিকর প্রভাব এড়ানো সম্ভব।
১) খুব উচ্চ তাপমাত্রায় অ্যালুমিনিয়ামের বাসনে রান্না করবেন না।
২) টকজাতীয় কোনও রান্না অ্যালুমিনিয়ামের বাসনে করবেন না।
৩) অ্যালুমিনিয়ামের বাসনে খুব বেশি দিন টকজাতীয় কোনও খাবার ভরে রাখবেন না।