আঙুলের ডগায় সুচ ফোটানোর ঝক্কি নেই। রক্তে শর্করার মাত্রা কমছে না বাড়ছে, তা দিব্যি জেনে নিচ্ছেন স্মার্টফোনের অ্যাপেই। কখন ইনসুলিন নেবেন, কতটা মাত্রায় নেবেন, তা-ও বলে দিচ্ছে স্মার্টফোনই। এই অভ্যাস যে কতখানি বিপদের দিকে ঠেলে দিচ্ছে, সে বিষয়ে সতর্ক করল আমেরিকার ‘ফুড অ্যান্ড ড্রাগ অ্যাডমিনিস্ট্রেশন’ (এফডিএ)।
স্মার্টফোনে এখন ‘গ্লুকোজ় মনিটর’ ব্যবহার করেন অনেকেই। এর নানা ধরনের অ্যাপ্লিকেশন রয়েছে। তাতে দিনের বিভিন্ন সময়ে রক্তে শর্করার মাত্রা কত, তা দেখা যায়। কেবল তা-ই নয়, রক্তে শর্করা বশে রাখতে কতটা পরিমাণে ইনসুলিন নিতে হবে, কী কী ওষুধ খেতে হবে তা-ও জানা যায় এই সব অ্যাপে। আর বিপদ ঘনাচ্ছে সেখানেই।
আরও পড়ুন:
এফডিএ-র আধিকারিকেরা জানাচ্ছেন, প্রতি দিন রক্ত পরীক্ষা কেন্দ্রে গিয়ে শর্করার মাত্রা পরীক্ষা করানো সকলের পক্ষে সম্ভব হয় না। কিন্তু চিকিৎসার প্রয়োজনেই দিনের কোন সময়ে রক্তে শর্করার মাত্রা কেমন থাকে, তার স্পষ্ট ধারণা রাখতে বলেন চিকিৎসেকরা। বাড়িতে বসেই আঙুলের ডগায় সুচ ফুটিয়ে রক্ত পরীক্ষা করা যায়, এমন কিট ব্যবহার করার পরামর্শ দিয়ে থাকেন তাঁরা। তবে রোজ সকালে ঘুম থেকে উঠে বা দুপুরে খাওয়ার পরে হাতে সুচ ফোটানোর কাজটি করতে ভাল লাগে না অনেকেরই। তাই এমন মোবাইল অ্যাপ বা স্মার্টওয়াচ ভরসার যোগ্য হয়ে উঠছে। কিন্তু অনেকেই বুঝছেন না, রক্ত পরীক্ষা না করে শর্করার মাত্রা কত তা সঠিক ভাবে বলা সম্ভব নয়। এই সব ডিভাইস মেডিক্যাল হিস্ট্রি দেখে এবং কৃত্রিম বুদ্ধিমত্তার (এআই) প্রয়োগে শরীরের তাপমান মেপে রিডিং দেয় অনেক সময়েই। ফলে ‘রিয়্যাল-টাইম’-এ বা সেই সময়ে রক্তে শর্করার মাত্রা কেমন রয়েছে, সেই সংক্রান্ত যে তথ্য দেখানো হয়, তা সঠিক না-ও হতে পারে।
এফডিএ আরও জানাচ্ছে, ‘সিভিয়ার হাইপোগ্লাইসেমিয়া’ বা ‘সিভিয়ার হাইপারগ্লাইসেমিয়া’ হয়েছে কি না বা তার আশঙ্কা আছে কি না, এমন তথ্য কিন্তু স্মার্টফোন বা স্মার্টওয়াচে নির্ভুল ভাবে দেওয়া সম্ভব নয়। তাই কেউ যদি চিকিৎসকের পরামর্শ না নিয়েই কেবলমাত্র মোবাইল ডেটা দেখে ওষুধ খেতে বা ইনসুলিন নিতে শুরু করেন, তা হলে বিপদ ঘনাতে দেরি হবে না।