বাতের ব্যথা কমানো থেকে মরসুমি সংক্রমণ ঠেকিয়ে রাখা, শীতকালে কোন আচার খেলে জব্দ হবে রোগবালাই

ভাত, রুটি-পরোটা কিংবা খিচুড়ি— সঙ্গে এক চামচ আচার থাকলে আর কী-ই বা চাই? টক-ঝাল-মিষ্টি এই খাদ্য থাকলে বাকি রান্নার স্বাদ কেমন হল, তা নিয়ে আর বিশেষ ভাবতে হয় না। কিন্তু আচার কি শুধুই স্বাদের জন্য খাওয়া হয়? না কি স্বাস্থ্যেরও যত্ন চিতে পারে? আচারের প্রসঙ্গ উঠলে ঘোর স্বাস্থ্য সচেতন মানুষও হিসাব গুলিয়ে ফেলেন, ডায়েট নিয়ে চর্চা বাদ দিয়ে মন ভাল করা বয়ামে চামচ ডোবান। আচারের গুণ জানলে অবাক হবেন। যে কোনও ধরনের আচারই হজমে সাহায্য করে। এ ছাড়া, আচারে থাকে নানা ধরনের অ্যান্টি-অক্সিড্যান্ট, ভিটামিন সি ও ই। এতে উপস্থিত নানা ধরনের ভাল ব্যাক্টেরিয়া, যা শরীরের রোগ প্রতিরোধ শক্তি বাড়ায়। অনেক ক্ষেত্রেই দেখা গিয়েছে, পেশিতে টান ধরলে এক চামচ আচার খেলেই রেহাই মেলে।

এক এক ধরনের আচারের স্বাস্থ্যগুণ এক এক রকম। শীতকালে রোজের খাদ্যতালিকায় রসুনের আচার রাখলে কী উপকার পেতে পারেন, জানেন?

১) ইদানীং কম বয়সেও হৃদ‌্‌রোগের ঝুঁকি বাড়ছে। বিভিন্ন গবেষণায় দেখা গিয়েছে, যে সব হার্টের রোগী নিয়মিত রসুন খান, তাঁরা অনেক বেশি সক্রিয় থাকেন। তাই রোজের খাবারে রসুনের আচার রাখলে হৃদ্‌যন্ত্র ভাল থাকে। বেশি মাত্রায় রসুন খেলে রক্তে খারাপ কোলেস্টেরলের মাত্রা কমে এবং ভাল কোলেস্টেরলের মাত্রা বাড়ে।

২) শীতকাল মানেই জ্বর-সর্দি-কাশির সমস্যা শুরু হয় ঘরে ঘরে। এই সময় নিয়মিত রসুনের আচার খেলে শরীরের রোগ প্রতিরোধ ক্ষমতা বাড়বে। মরসুমি সংক্রমণ থেকে রেহাই পেতে সাহায্য করে রসুন।

৩) রসুন রক্তে আয়রন শোষণের মাত্রা বাড়ায়। শরীরে আয়রনের ঘাটতি হলে রক্তাল্পতার সমস্যা শুরু হয়, শরীরে বাসা বাঁধে একাধিক রোগ। তাই রোজের খাদ্যতালিকায় রসুনের আচার রাখলে রক্তাল্পতার সমস্যা কমে।

৪) রসুনে থাকে ভিটামিন বি ৬ এবং সি, ফাইবার, ম্যাগনেশিয়াম, ক্যালশিয়ামের মতো উপাদান। তা মেদ ঝরানোর ক্ষেত্রে দারুণ উপকারী। রসুন খেলে শরীরের বিপাক হার বাড়ে। ফলে বেশি মাত্রায় ক্যালোরি ঝরে। রসুনে এমন কিছু যৌগ আছে, যা মেদ গলানোর প্রক্রিয়াকে তরান্বিত করে।

৫) রসুন প্রদাহ কমাতেও সাহায্য করে। শীতকালে বাতের ব্যথা বাড়ে। বাতের ব্যথা থাকলে রোজের ডায়েটে রসুনের আচার রাখতে পারেন। এই টোটকাতেই কমবে ব্যথা।

কী ভাবে দশ মিনিটেই বানাবেন এই আচার?

৫০০ গ্রাম রসুন নিয়ে তার খোসা ছাড়িয়ে নিন। মাইক্রোওয়েভ অভেনে ২০ সেকেন্ড গরম করে নিলেই সহজেই রসুনের খোসা ছাড়িয়ে ফেলতে পারবেন। এ বার একটি বাটিতে রসুনের মধ্যে দু’চামচ হলুদ গুঁড়ো, দু’চামচ লঙ্কাগুঁড়ো, এক চামচ মৌরিগুঁড়ো, স্বাদমতো নুন, আর তিনটি লেবুর রস ভাল করে মিশিয়ে নিন। এ বার কড়াইতে সর্ষের তেল গরম করে তাতে সাদা সর্ষে ফোড়ন দিন। এ বার তেলটি ঢেলে দিন রসুনের মিশ্রণে। মিশ্রণটি কাচের শিশিতে ভরে ৭ থেকে ১০ দিন রোদে রাখুন। তৈরি হয়ে যাবে দারুণ সুস্বাদু আচার।