ওজন কমানোর জন্য অনেকেই এখন অলিভ অয়েল ডায়েটের দিকে ঝুঁকছেন। স্বাস্থ্য ভাল রাখার জন্যও পুষ্টিবিদেরা অলিভ অয়েল খাওয়ার পরামর্শ দিয়ে থাকেন। অলিভ অয়েল ডায়েটের রয়েছে প্রচুর স্বাস্থ্যগুণ। হজমেও সহায়ক। খারাপ কোলেস্টেরলের মাত্রা কমাতেও অলিভ অয়েল ভাল। তবে তেল সঠিক ভাবে সংরক্ষণ করতে না পারলে বা তেলের রকমফের না জেনে ভুল ভাবে ব্যবহার করলে এর গুণাগুণ নষ্ট হতে পারে, বলছেন পুষ্টিবিদেরা।
স্যালাড থেকে শুরু করে অমলেট, রকমারি খাবারে অলিভ অয়েলের ব্যবহার হয়। কাঁচা তেলও খাওয়া হয়। তবে অলিভ অয়েলেরও রকমফের রয়েছে। কোনও অলিভ অয়েলের গায়ে লেখা ভার্জিন, কোনওটিতে এক্সট্রা ভার্জিন। কোনওটি আবার রিফাইনড অলিভ অয়েল। কোনটি রান্না করে খাওয়ার জন্য আর কোনটি স্যালাডে কাঁচা মেশানোর জন্য, তা জানতে হবে।
এক্সট্রা ভার্জিন অলিভ অয়েলে সবচেয়ে বেশি মাত্রায় অ্যান্টি-অক্সিড্যান্ট মেলে। গন্ধও হয় সু্ন্দর। স্যালাডে মিশিয়ে বা স্যালাডের সঙ্গে যে সস্ খাওয়া হয়, সেই ডিপে ব্যবহারের জন্য এটি ভাল। ভার্জিন অলিভ অয়েলও স্যালাডে খাওয়া যায়। এতে রান্নাও করা যায়।
অলিভ অয়েল দিয়ে রান্নার সময় আর কী কী মাথায় রাখবেন?
১) অলিভ অয়েল দিয়ে রান্না করার সময় গ্যাসের আঁচ বাড়ানো চলবে না। ঢিমে আঁচে রান্না করতে হবে। তা না হলে স্বাদও বিগড়ে যাবে আর স্বাস্থ্যগুণও পাওয়া যাবে না। অলিভ অয়েল ভাল হলেও উচ্চ তাপমাত্রার ছাঁকা তেলে ভাজাজাতীয় খাবার খেলে কিন্তু লাভ হবে না। বরং সে সব খাবার সাঁতলে বা হালকা ভেজে খাওয়া চলে, তাতে তেলটি ব্যবহার করতে পারেন।
২) খুব ভাল হয় যদি রান্নার একেবারে শেষে উপর থেকে অলিভ অয়েল ছড়িয়ে দিতে পারেন। স্যুপ, পাস্তা, রোস্টেড কবাব, গ্রিলড সব্জির উপর থেকে অলিভ ছড়িয়ে দিলে স্বাদও বা়ড়বে আর স্বাস্থ্যগুণও পাওয়া যাবে। অলিভ অয়েলের সঙ্গে খুব বেশি চড়া মশলা যেমন রসুন, আদা, গরমমমশা মেশাবেন না। এতে তেলের স্বাদ নষ্ট হয়ে যায়।
আরও পড়ুন:
৩) সঠিক পদ্ধতিতে তেল সংরক্ষণ করতে না পারলে অলিভ অয়েলের গুণ নষ্ট হয়ে যায়। বাতাসের সংস্পর্শে এসে অলিভ অয়েল চট করে খারাপ হয় না ঠিকই, তবে অন্ধকার স্থানে রাখলেই এটি ভাল থাকবে। রোদের তাপে তেল নষ্ট হয়ে যেতে পারে। বায়ু নিরোধী কাচপাত্রে অলিভ অয়েল থাকলে ‘অক্সিডেশন’ বা বাতাসের সংস্পর্শে এসে নষ্ট হয়ে যাওয়ার ঝুঁকিও কমবে। প্লাস্টিকের পাত্রে বা বার বার খোলা-বন্ধ করা হয় এমন পাত্রে তেল ঢেলে না রাখাই ভাল। অলিভ অয়েল ফ্রিজে রাখার দরকার হয় না।
৪) ভাল মানের অলিভ অয়েলে অলিভের গন্ধ এবং সোনালি আভা থাকবে। রং ঘোলাটে হয়ে গেলে বুঝতে হবে সেটি আর ততটা ভাল নেই। সাধারণত সঠিক ভাবে বোতলে সংরক্ষণ করতে পারলে অলিভ অয়েল ১২-২৪ মাস ভাল থাকে। তা সত্ত্বেও তেলের মেয়াদ উত্তীর্ণ হওয়ার তারিখ দেখে নেওয়া দরকার।
৫) একই অলিভ অয়েলকে বার বার ব্যবহার করবেন না। এতে তেলের গুণ নষ্ট হয়ে যায়, সঙ্গে এমন সব যৌগ তৈরি হয় যা স্বাস্থ্যের ক্ষতি করে।