ওজন কমানোর জন্য নিজেকে যতরকম রুটিনে বাঁধা দরকার সবই করে ফেলেছেন। তার পরেও শরীরের যে গড়ন হবে বলে আশা করেছিলেন, তা হচ্ছে না। হয়তো ওজন সামান্য কমেছে। কিন্তু পেট বা কোমরের আয়তন কমছে না। ফলে পুজোয় শাড়ির ফাঁকে যে মেদহীন কোমর দেখা যাবে বলে আশা করেছিলেন, সে আশায় জল। পুরুষেরা পছন্দের ফিটেড টি-শার্ট জিন্স পরে কেতা দেখাবেন বলে ভেবেছিলেন, তা-ও কি শেষমেশ ভুলতে হবে? উঁহু, এই সমস্যারও সমাধান আছে।
পুষ্টিবিদ কাইলি সাকাড়িয়া জানাচ্ছেন, খাবারে রাশ টেনেও ভুঁড়ি না কমলে তার নেপথ্য কারণ মানসিক চাপও হতে পারে। মানসিক চাপ বাড়লে শরীরে কর্টিসল হরমোনের ক্ষরণ বেশি হয়। সেক্ষেত্রে ওই হরমোনকে নিয়ন্ত্রণ করতে পারলেই সমস্যার সমাধান হতে পারে।
কর্টিসল হরমোনকে নিয়ন্ত্রণ করবেন কী ভাবে?
পুষ্টিবিদ জানাচ্ছেন, পর্যাপ্ত ঘুম, শরীরচর্চা, ধ্যান, পর্যাপ্ত জলপান— ইত্যাদি শরীরে সুখী হরমোনের ক্ষরণ বৃদ্ধি করে। যা কর্টিসল নিয়ন্ত্রণ করতে পারে। এ ছাড়া শরীরে কর্টিসলের মাত্রা নিয়ন্ত্রণ করতে পারে কিছু খাবারও। সেগুলি কী কী তার একটি তালিকা দিয়েছেন পুষ্টিবিদ।
১। ম্যাগনেশিয়াম-যুক্ত খাবার: ম্যাগনেসিয়াম স্নায়ুতন্ত্রকে শান্ত করতে এবং পেশি শিথিল করতে সাহায্য করে। তাই এটি মানসিক চাপ কমাতে অত্যন্ত কার্যকরী। পালং শাক, অ্যাভোকাডো, বাদাম, কুমড়োর বীজ এবং ডার্ক চকোলেটে ম্যাগনেশিয়াম আছে।
২। ওমেগা-৩ ফ্যাটি অ্যাসিড: যেকোনও তৈলাক্ত মাছ, আখরোট এবং চিয়া বীজে রয়েছে ওমেগা থ্রি ফ্যাটি অ্যাসিড। যা মানসিক চাপ কমাতে, মস্তিষ্কের কার্যকারিতা উন্নত করতে এবং প্রদাহ কমাতে সাহায্য করে।
৩। ভিটামিন সি-যুক্ত খাবার: গবেষণায় দেখা গেছে যে ভিটামিন সি কর্টিসলের মাত্রা কমাতে সাহায্য করে এবং স্ট্রেসের বিরুদ্ধে শরীরের প্রতিরোধ ক্ষমতা বাড়ায়। আমলকি, পেয়ারা, কমলালেবু, আপেল, পেঁপে, ক্যাপসিকাম, ব্রকোলি-সহ বহু ফল এবং শাকসব্জিতে ভিটামিন সি রয়েছে।
৪। প্রোবায়োটিক-সমৃদ্ধ খাবার: অন্ত্রের স্বাস্থ্যও মানসিক চাপ কমানোর ক্ষেত্রে গুরুত্বপূর্ণ। দই, ছানা, পনিরের মতো প্রোবায়োটিক খাবার অন্ত্রের স্বাস্থ্য ভালো রাখে এবং মনকে শান্ত রাখতে সাহায্য করে।
৫। কমপ্লেক্স কার্বোহাইড্রেট: ওটস, ব্রাউন রাইস এবং অন্যান্য দানা শস্যে রয়েছে কমপ্লেক্স কার্বোহাইড্রেট। যা স্তিষ্কে সেরোটোনিন নামক 'ফিল-গুড' হরমোনের মাত্রা বৃদ্ধি করে। ফলে মন ভালো থাকে।
৬। প্রোটিন: মুরগির মাংস, ডিম বা ডালের মতো প্রোটিন সমৃদ্ধ খাবার স্ট্রেস মোকাবিলায় সাহায্য করে কারণ এগুলো ট্রিপটোফ্যান নামক অ্যামিনো অ্যাসিড সরবরাহ করে যা সেরোটোনিন উৎপাদনে সহায়ক।