Advertisement
E-Paper

ডেঙ্গি নিয়ে উদ্বেগ বাড়ছে, শুধু লক্ষণ দেখে ওষুধ নয়, কোন কোন পরীক্ষা অবশ্যই করাতে হবে?

তিন দিনের বেশি জ্বর মানেই অ্যান্টিবায়োটিক খেয়ে ফেললেন, তা নয়। তলে তলে ডেঙ্গি ভাইরাস শরীরে বাসা বেঁধেছে কি না, তা ধরতে কিছু টেস্ট করিয়ে নিতেই হবে। ইদানীং ঘরে ঘরে জ্বর হচ্ছে। তাই সাবধান থাকতে হবে।

আনন্দবাজার ডট কম ডেস্ক

শেষ আপডেট: ১৩ অগস্ট ২০২৫ ১০:৪৬
For acute dengue diagnosis, what type of tests is necessary

সাধারণ জ্বর না ডেঙ্গি, বুঝতে কিছু টেস্ট করিয়ে নিন। ফাইল চিত্র।

সন্ধ্যা-রাতে ডেঙ্গি মশার দাপট। কলকাতাতেও ডেঙ্গি আক্রান্তের খোঁজ মিলেছে। ডেঙ্গির প্রকোপ কতটা বেড়েছে, সে ব্যাপারে নিশ্চিত তথ্য না থাকলেও, চিকিৎসকেরা সাবধান থাকারই পরামর্শ দিচ্ছেন। এমনিতেও ভাইরাল জ্বরের প্রকোপ বেড়েছে। সেই জ্বর সাধারণ ভাইরাস না ডেঙ্গি ভাইরাসের কারণে, তা বোঝা প্রায় অসাধ্য। অনেক সময়ে উপসর্গও খুবই সাধারণ দেখা দিচ্ছে, পরে পরীক্ষা করিয়ে হয় ফ্যালসিপেরাম ম্যালেরিয়া বা ডেঙ্গি ধরা পড়ছে। তাই উপসর্গ দেখে ওষুধ খেয়ে নিলে হিতে বিপরীত হবে। জ্বর যদি তিন দিনের বেশি থাকে এবং কিছু চেনা লক্ষণ বোঝা যায়, তা হলে কিছু পরীক্ষা অবশ্যই করিয়ে নিতে হবে।

ডেঙ্গি শনাক্ত করতে কী কী পরীক্ষা করাতে হবে?

জ্বর হওয়ার অন্তত পাঁচ দিন পরে যত ক্ষণ না এলাইজা পরীক্ষায় আক্রান্তের রক্তে নির্দিষ্ট অ্যান্টিবডি পাওয়া যাচ্ছে, তত ক্ষণ কাউকে 'ডেঙ্গি আক্রান্ত' বলে ঘোষণা করা যায় না। রক্তে ডেঙ্গির জীবাণু রয়েছে কি না, তা জানতে সবচেয়ে কার্যকরী পরীক্ষাটি হল এলাইজা টেস্ট। পাশাপাশি দ্রুত ডেঙ্গি শনাক্তকরণের জন্য এনএস-১ টেস্টও চালু রয়েছে।

ডেঙ্গির জ্বর থাকে ৩-৭ দিন। ওই সময়ে প্রচণ্ড শারীরিক দুর্বলতা থাকে, গায়ে হাত-পায়ে ব্যথা হয়, তীব্র মাথা যন্ত্রণা এবং হালকা শ্বাসকষ্টও হতে পারে। এই বিষয়ে চিকিৎসক রণবীর ভৌমিক জানান, রোগের বাড়াবাড়ি হলে তখন শরীরে জলের ঘাটতি হতে থাকে, রক্তচাপ আচমকা কমে যায়, হৃৎস্পন্দনের হার বেড়ে যেতে পারে। এই সব লক্ষণ দেখেই ওষুধ কিনে খেয়ে ফেলা বা নেটমাধ্যম ঘেঁটে বিভিন্ন ঘরোয়া টোটকা ব্যবহার করতে শুরু করলেই মুশকিল। আগে রক্ত পরীক্ষা করাতে হবে। তাতে ডেঙ্গি ধরা পড়লে তবে চিকিৎসা শুরু হবে।

১) প্রথম যে টেস্টটি করাতে হবে তা হল, এনএস১ অ্যান্টিজেন টেস্ট। এই টেস্টের রিপোর্ট দেখে বোঝা যাবে শরীরে ভাইরাসের সংক্রমণ হয়েছে কি না।

২) এর পর ‘আইজিএম’ ও ‘আইজিজি’ অ্যান্টিবডি টেস্ট করা জরুরি। এতে ধরা পড়বে ভাইরাসটি ডেঙ্গিরই ভাইরাস কি না।

৩) কমপ্লিট ব্লাড কাউন্ট বা সিবিসি পরীক্ষাও জরুরি। এই পরীক্ষায় রক্তের প্লেটলেট সংখ্যা, শ্বেত রক্তকণিকা এবং অন্যান্য উপাদানের পরিমাণ মাপা হয়। ডেঙ্গি হলে প্লেটলেটের সংখ্যা কমতে থাকবে যা পরবর্তীতে গিয়ে ডেঙ্গি হেমারেজিক জ্বরের কারণ হয়ে উঠতে পারে।

৪) আরও একটি পরীক্ষা আছে যার নাম ‘নিউক্লিক অ্যাসিড অ্য়ামপ্লিফিকেশন টেস্ট’ (এনএএটি)। এই পরীক্ষাটি আরটি-পিসিআর পরীক্ষার মতো, যা কোভিডের সময়ে করা হয়েছিল। ভাইরাসের জিনগত বৈশিষ্ট্য ধরা পড়ে এতে। কী ধরনের ডেঙ্গি ভাইরাস শরীরে বাসা বেঁধেছে, তা ধরতে হলে এই পরীক্ষাটি করা আবশ্যক। তবে এই টেস্ট কিছু নির্দিষ্ট গবেষণাগারেই হয়ে থাকে।

চিকিৎসক জানাচ্ছেন, ডেঙ্গি ধরতে অনেকে শুধু এনএস-১ টেস্ট করান। এতে ডেঙ্গি ধরা পড়ে না। এনএস-১ পজিটিভ রোগীদের বড় একটা অংশই যে ডেঙ্গিতে আক্রান্ত, তার প্রমাণ পেতে বেশ দেরি হয়ে যায়। ফলে হেমারেজিক ডেঙ্গির ক্ষেত্রে রোগীর অবস্থা আয়ত্তের বাইরে চলে যেতে পারে। তাই এনএস-১ পজিটিভ হলেই সংশ্লিষ্ট ব্যক্তিকে নজরদারিতে রাখলে বিপর্যয় এড়ানো যেতে পারে। আরও একটি বিষয় খেয়াল রাখতে হবে। এনএস-১ ও এলাইজা টেস্টের পরে ডেঙ্গি-পজিটিভ এলে সেই রোগীকে আলাদা রেখে চিকিৎসা শুরু করতে হবে। ডেঙ্গি রোগী যদি স্বাভাবিক ভাবে ঘুরে বেড়ান, তা হলে রোগ অনেকের মধ্যে ছড়ানোর আশঙ্কা থেকে যায়। এডিস ইজিপ্টাই মশা ওই সব ব্যক্তিকে কামড়ালে ডেঙ্গির জীবাণু মশার শরীরে প্রবেশ করে। সেই মশা তার পরে যত জনকে কামড়াবে, প্রত্যেকের শরীরেই প্রবেশ করবে ডেঙ্গির জীবাণু। তাই সাবধান থাকতেই হবে।

Dengue Dengue Virus
Advertisement

আরও পড়ুন:

Share this article

CLOSE

Log In / Create Account

We will send you a One Time Password on this mobile number or email id

Or

By proceeding you agree with our Terms of service & Privacy Policy