Advertisement
E-Paper

খাওয়ার পরে গলা-বুক জ্বালা মানে অম্বল, অ্যাসিড রিফ্লাক্স না-ও হতে পারে, নেপথ্যে কারণ গুরুতর

ঘন ঘন অম্বল, বুকজ্বালা, বুকে ব্যথার কারণ অ্যাসিড রিফ্লাক্স না-ও হতে পারে। অ্যান্টাসিডে সে রোগ সারবে না। তা হলে উপায় কী?

আনন্দবাজার ডট কম ডেস্ক

শেষ আপডেট: ২৫ জুন ২০২৫ ১৬:১৯
Frequent acid reflux and bloating may not be just gut issues, signaling more serious condition like a hiatus hernia

অম্বল,বুকজ্বালার আসল কারণ কী হতে পারে? ছবি: ফ্রিপিক।

বিয়েবাড়ি গিয়ে ভালমন্দ খেয়ে ফেললেন, তার পরেই গলা-বুক জ্বালায় অস্থির। বাড়িতেও যে দিন পাত পেড়ে মাছ বা মাংস বেশি খেয়ে ফেলেন, সে দিন অম্বল অবধারিত। গ্যাস-অম্বলের সমস্যায় যাঁরা বেশি ভোগেন, তাঁরা হয়তো ভাবতে পারেন কিছু খেলেই অম্বল হওয়ার অর্থ হল ‘অ্যাসিড রিফ্লাক্স’-এর সমস্যা অথবা ‘জিইআরডি’, অর্থাৎ ‘গ্যাস্ট্রোইসোফেজিয়াল রিফ্লাক্স ডিজ়িজ়’। এই দু’টিই হল হজমের ব্যাধি। তবে সব ক্ষেত্রে অম্বল হওয়া মানেই যে হজমের ব্যাধি হবে, তা না-ও হতে পারে। তা হলে কারণটা কী?

ঘন ঘন অম্বল, বুক জ্বালা, বুকে ব্যথার কারণ অ্যাসিড রিফ্লাক্স না হয়ে হাইটাস বা হাইটাল হার্নিয়াও হতে পারে। হার্নিয়ার কথা অনেকেই জানেন, তবে হাইটাস হার্নিয়া অতটা পরিচিত অসুখ নয়। এটি এমন এক রোগ, যাতে খাদ্যনালির ক্ষতি হয়। যে পথে খাবার পাকস্থলীতে গিয়ে পৌঁছোয়, তাকে বলে খাদ্যনালি বা ইসোফেগাস। মূল সমস্যাটা হয় সেখানেই।

হার্নিয়া আর হাইটাস হার্নিয়ার মধ্যে তফাত কোথায়?

একটি বালতির মধ্যে ফুটো হয়ে গেলে জল বাইরে বেরিয়ে আসবে। হার্নিয়াও তা-ই। পেটের সামনের দিকে থাকে পেশির স্তর। সেখানে থাকে অন্ত্র, নালি, চর্বি ইত্যাদি। কিন্তু পেটের মধ্যে কোথাও ফুটো হয়ে গেলে এই ভিতরের পদার্থগুলি বাইরে বেরিয়ে আসতে চাইবে। একেই হার্নিয়া বলে।

আর হাইটাস হার্নিয়ার ক্ষেত্রে তা হয় উল্টো। এই রোগে পাকস্থলী, পেটের নাড়িভুঁড়ি সব ঠেলে উপরে উঠে আসতে শুরু করে। পেটের ভিতরের সব কিছু যদি বুকের দিকে উঠে আসতে থাকে, তা হলে খাবার পাকস্থলীতে পৌঁছোবে না, হজমও ঠিকমতো হবে না। খাবার বিপাকের জন্য পাকস্থলী থেকে যে অম্লরস বার হয়, তা খাদ্যনালি দিয়ে উপরে উঠতে শুরু করবে। তখন অ্যাসিড রিফ্লাক্স বা জিইআরডি-র সমস্যা দেখা দেবে। কিছু ক্ষেত্রে দেখা যায়, অ্যাসিড রিফ্লাক্স হল উপসর্গ মাত্র, আসল কারণই হল হাইটাস হার্নিয়া, যে কারণে অম্বলের সমস্যায় ভোগেন অনেকে।

হাইটাস হার্নিয়ার জন্য যে শুধু অম্বল হবে, তা নয়, এই রোগ অগ্ন্যাশয়েরও ক্ষতি করে। যিনি ভোগেন, তাঁর শ্বাসকষ্ট হতে পারে, খাবার গিলতে সমস্যা হতে পারে। এমনকি মলের সঙ্গে রক্তও বেরোতে পারে। এই রোগ থাকলে পেট ফাঁপার সমস্যা সহজে কমবে না, আলসারের লক্ষণও দেখা দিতে পারে। রোগের বাড়াবাড়ি হলে গলার স্বরেও বদল আসতে পারে।

হাইটাস হার্নিয়া শুধু ওষুধে সারে না। রোগীর অবস্থা দেখে ল্যাপারোস্কোপি করেন চিকিৎসকেরা। ‘ল্যাপারোস্কোপিক ফান্ডোপ্লিকেশন’ নামে এক ধরনের অস্ত্রোপচারের পদ্ধতি আছে, যা কাটাছেঁড়া না করেই করা হয়। খাদ্যনালি ও পাকস্থলীতে ক্ষত হলে, তা মেরামত করার জন্যই এই সার্জারি করা হয়।

হাইটাস হার্নিয়া থেকে বাঁচতে খাওয়াদাওয়ায় অবশ্যই নিয়ন্ত্রণ আনা জরুরি। বেশি তেলমশলা দেওয়া খাবার দিনের পর দিন খেতে থাকলে, তার থেকে এই রোগ হওয়া অস্বাভাবিক নয়। হাইটাস হার্নিয়ার আরও একটি কারণ হল স্থূলত্ব। ওজন বাড়তে থাকলে এই সমস্যা দেখা দিতে পারে। তা ছাড়া বয়স্কেরাও এই রোগে ভোগেন। এ দেশে ৫০ থেকে ৬৫ বছর বয়সি অন্তত ৬০ শতাংশের হাইটাস হার্নিয়া আছে। তার থেকেও আশ্চর্যের ব্যাপার হল, রোগটি নিয়ে সচেতনতাও তেমন নেই। গ্যাস-অম্বলের সমস্যা ভেবে অনেকেই এড়িয়ে যান, ফলে রোগটি ধরাও পড়ে না। পরবর্তী সময়ে গিয়ে মাল্টিপল আলসার ধরা পড়লে তখন রোগটির চিকিৎসা শুরু হয়। তাই গোড়া থেকেই সাবধান হওয়া জরুরি।

Hernia acidity Acidity Problem Acid Reflux GERD Symptoms
Advertisement

আরও পড়ুন:

Share this article

CLOSE

Log In / Create Account

We will send you a One Time Password on this mobile number or email id

Or

By proceeding you agree with our Terms of service & Privacy Policy