শাকসব্জি বা বাড়ির বেঁচে যাওয়া খাবার তাজা রাখতে সাহায্য করে রেফ্রিজারেটর। তাই বাড়িতে ফ্রিজ সব সময়েই পরিষ্কার রাখা উচিত। অন্যথায় পরিবারের সদস্যদের রোগে আক্রান্ত হওয়ার আশঙ্কা বৃদ্ধি পায়। কিন্তু ফ্রিজ পরিস্কার রাখার অজুহাতে অনেকেই ফ্রিজের অন্দরসজ্জার দিকে মন দেন। সমাজমাধ্যমেও তার পর সেই ছবি ভাইরাল হয়। বিষয়টি ‘ফ্রিজস্কেপিং’ নামে পরিচিত। কিন্তু এই ধরনের অভ্যাস থেকে নানা বিপত্তিও হতে পারে।
আরও পড়ুন:
‘ফ্রিজস্কেপিং’ কী?
অন্দরসজ্জার অংশ হিসেবে বাড়ির গোছগাছ করা হয়। গোছানো অন্দরমহল মনের উপর ইতিবাচক প্রতিক্রিয়া তৈরি করে। একই ভাবে ফ্রিজের মাত্রাতিরিক্ত অন্দরসজ্জাকে বলা হয় ‘ফ্রিজস্কেপিং’। অনেক সময় এই ধারণার বশীভূত হয়ে কারও ফ্রিজের ভিতরে ফুলের টব, বেতের ঝুড়ি, ফোটোফ্রেম, এমনকি ব্যটারি চালিত লাইটও দেখা যায়! ছবি তোলার জন্য চিত্তাকর্ষক হলেও এই প্রবণতা স্বাস্থ্যের ক্ষেত্রে কি উপকারী?
সমস্যা কোথায়
খাবার যাতে টাটকা থাকে, তার জন্য ফ্রিজ ব্যবহৃত হয়। খাবারের সঙ্গে স্বাস্থ্যের যোগসূত্র রয়েছে। তাই পুষ্টিবিদ এবং মনোবিদদের দাবি, ফ্রিজ কখনই অন্দরসজ্জার জায়গা হতে পারে না। পুষ্টিবিদ শ্রাবণী মুখোপাধ্যায় এই ধরনের কোনও ‘ট্রেন্ড’ থেকে মানুষকে দূরে থাকার পরামর্শ দিলেন। বললেন, ‘‘ফ্রিজের মধ্যে যদি কেউ গাছ রাখেন, তা হলে সময়ের সঙ্গে সেই গাছ থেকে খাবারে জীবাণুর সংক্রমণ হতে পারে।’’ কারণ ফ্রিজের মধ্যে একটি নির্দিষ্ট তাপমাত্রা থাকে। সূর্যালোকের অভাবে গাছে সালোকসংশ্লেষ করতে না পারলে, তখন সেখানে জীবাণুর সংক্রমণ বাড়তে পারে।
ফ্রিজের বাইরে সজ্জা রান্নাঘরকে আকর্ষণীয় করে তুলতে পারে। ছবি: এআই।
একই সঙ্গে অন্দরসজ্জার কোনও জিনিস খাবারের কাছে দীর্ঘ সময় থাকলে তা থেকে ব্যক্তির শরীরে নানা ধরনের সংক্রমণ হতে পারে বলেই জানালেন তিনি। পাশাপাশি, ফ্রিজের মধ্যে রাখা কাঠ বা বেতের তৈরি অন্দরসজ্জার কোনও জিনিস আর্দ্রতা শুষে নিতে পারে। তার ফলে ফ্রিজের মধ্যে মাপমাত্রার পার্থক্য ঘটে। ফলে খাবার দ্রুত নষ্টও হয়ে যেতে পারে। শ্রাবণীর স্পষ্ট বক্তব্য, ‘‘সুস্থ থাকতে হলে ফ্রিজের বাইরেটা নানা ভাবে সাজিয়ে তুলুন, কিন্তু ভিতরটা কখনওই নয়!’’
পরিচ্ছন্ন ফ্রিজ এবং সুস্থ জীবন
বর্ষাকালে ফ্রিজে দ্রুত ছত্রাকের সংক্রমণ ঘটে। ঠান্ডা পরিবেশ জীবাণুদের বংশবৃদ্ধিতে সাহায্য করে। ফলে ফ্রিজের গায়ে এবং ভিতরের দিকে কালো বা সবজে ছোপ তৈরি হয়। বছরের এই সময়ে সপ্তাহে তাই নিয়ম করে অন্তত এক বার গরম জলে ফ্রিজ পরিষ্কার করা উচিত। শ্রাবণী বললেন, ‘‘অনেক সময়ে যে পাত্রে ফ্রিজের মধ্যে খাবার রাখা হয়, তা পরিষ্কার করা হয় না। অপরিচ্ছন্ন পাত্র থেকেও মারাত্মক কোনও সংক্রমণের ঝুঁকি বেড়ে যায়।’’ শ্রাবণীর মতে, খাবার রাখার পাত্র তিন দিন অন্তর ভাল করে পরিষ্কার করা উচিত।