খেতে বড্ড ভালবাসেন। তবে এখন খাবার সামনে দেখেও অরুচি আসে। কিছু খেলেই পেটে জ্বালা করে। গ্যাস-অম্বলের সমস্যায় ভুগছেন সারা ক্ষণ। এমন হলে কিন্তু অবহেলা করবেন না। হতেই পারে, এই উপসর্গ পেপটিক আলসারের প্রাথমিক লক্ষণ। আলসার শব্দের অর্থ ‘ক্ষত’। এই ক্ষত পরিপাকতন্ত্রের বিভিন্ন অংশে হতে পারে এবং তা থেকে পরবর্তী কালে জটিলতার সৃষ্টি হতে পারে। খাদ্যনালিতে অধিক মাত্রায় অ্যাসিড উৎপন্ন হলে এই রোগ হয়। তা ছাড়া ‘এইচ পাইলোরি’ নামক একটি ব্যাক্টেরিয়া থেকেও সংক্রমণ হতে পারে। এই সংক্রমণের ফলেই ক্ষুদ্রান্ত্রের ভিতরে আলসার দেখা দিতে পারে। এই আলসার থেকে কিন্তু পরবর্তী কালে হতে পারে গুরুতর সমস্যা। তাই আলসার সম্পর্কে সচেতন হোন শুরু থেকেই।
অনেকেরই ধারণা, ঝাল, তেল, মশলাদার খাবার খেলেই বুঝি আলসার হয়। এই ধারণা কিন্তু ভুল। কেবল ঝাল বা মশলাদার খাবার আলসারের জন্য দায়ী নয়। তবে এই সব খাবার রোগের তীব্রতা কয়েক গুণ বাড়িয়ে তোলে। ধূমপান এবং মদ্যপানের অভ্যাস পরিপাকতন্ত্রে আলসারের সম্ভাবনা কয়েক গুণ বাড়িয়ে দেয়। কর্মব্যস্ত জীবনে কাজের চাপে আমরা অনেকে খেতেও ভুলে যাই। দীর্ঘ ক্ষণ খালি পেটে থাকলেও আলসারের ঝুঁকি বাড়ে। চিকিৎসকের পরামর্শ ছাড়া ব্যথা উপশমের ওষুধ খাওয়া বন্ধ করুন। জেনে নিন, আলসারের কোন কোন লক্ষণ দেখলে সতর্ক হবেন।
১) খাবার পেটে পড়লেই পেটে ব্যথা হয়, এমন ক্ষেত্রে আপনার আলসার হয়ে থাকতে পারে। অনেক সময় দীর্ঘ ক্ষণ খালি পেটে থাকলেও পেটে অসহ্য যন্ত্রণা হয়। এই লক্ষণগুলি দেখলে এড়িয়ে যাবেন না।
২) পেপটিক আলসারের ক্ষেত্রে খাবার খাওয়ার দু’-তিন ঘণ্টা পরেও পেটে ব্যথা হতে পারে। খাবার খাওয়ার পর যদি এমনটা প্রায়ই ঘটে, সে ক্ষেত্রে তা আলসারের লক্ষণ হতে পারে।
৩) বুক জ্বালা করলে অনেকেই অম্বলের সমস্যা ভেবে এড়িয়ে যান। ঘন ঘন এমনটা হলে কিন্তু তা আলসারের লক্ষণ বলে ধরে নেওয়া যেতে পারে। তবে এ ক্ষেত্রে অবশ্যই চিকিৎসকের পরামর্শ নেওয়া জরুরি।
৪) সারা ক্ষণ গা গোলানো, বমি-বমি ভাবের সমস্যায় ভুগলে অবশ্যই আলসার হয়েছে কি না, তা পরীক্ষা করিয়ে নিন। সাধারণত আলসার হলেও এই উপসর্গগুলি দেখা দেয়। তাই ফেলে রাখবেন না।
৫) পরিপাকতন্ত্রের আলসার কিন্তু প্রাণঘাতী হতে পারে। এই রোগের কারণে খাদ্যনালিতে রক্তক্ষরণও হতে পারে। সে ক্ষেত্রে বমি কিংবা মলের সঙ্গে রক্ত বেরিয়ে আসে। চিকিৎসা না করিয়ে ফেলে রাখলে এই আলসার থেকে সহজে মুক্তি মেলে না। এবং বেশি বাড়াবাড়ি হলে মৃত্যুও ঘটতে পারে।