ছোটবেলায় জ্বর হলেই জোর করে দুধ-সাবু খাওয়াতেন মায়েরা। তখন খেতে ভাল না লাগলেও এখন হাসিমুখেই খেয়ে ফেলেন অনেকে। কারণ, সেই সাবু এখন ডায়েটের অঙ্গ হয়ে উঠেছে। ডায়েট করার প্রথম শর্তই হল বাইরের খাবার না খাওয়া। প্রতি দিন কাজে বেরোনোর আগে বা বাড়ি ফিরে এমন রান্না করতে হবে, যা চটজলদি হয়ে যায়। এ ক্ষেত্রে সাবু অনেকেরই পছন্দের একটি খাবার। সাবু একেবারেই ‘গ্লুটেন’মুক্ত। তাই শুধু উপবাস ভঙ্গের উপলক্ষেই নয়, স্বাস্থ্য সচেতন অনেকেই সাবু খেয়ে থাকেন শরীরের কথা ভেবে। কিন্তু সাবু কি সত্যিই স্বাস্থ্যকর? সাবুতে আদৌ কোনও পুষ্টিগুণ আছে কি?
সাবু ‘রিফাইন্ড’ খাবার। দিল্লিবাসী চিকিৎসক শুভম বৎস বলেন, ‘‘সাবুদানাকে যতটা স্বাস্থ্যকর মনে হয়, আদতে ততটাও কিন্তু নয়। অনেকেই একে ‘সুপার ফুড’ মনে করেন বটে, তবে এই ধারণা ভুল। সাবুদানার প্রায় ৯০ শতাংশ থাকে কার্বোহাইড্রেট। এতে প্রোটিন, ফাইবার আর ভিটামিন প্রায় থাকে না বললেই চলে।’’
আরও পড়ুন:
চিকিৎসকের মতে, সাবুদানা রক্তে শর্করার পরিমাণে হেরফের ঘটাতে পারে। তা ছাড়া সাবুর ‘গ্লাইসেমিক ইনডেক্স’ অনেকটাই বেশি। নিয়মিত ডায়েটে এই খাবার রাখলে শরারে ইনসুলিন হরমোনের ভারসাম্য বিগড়ে য়েতে পারে। তাই ডায়াবিটিস আক্রান্তদের জন্য এই খাবার মোটেও ভাল নয়। এ ছাড়া বেশি সাবু খেলে বিপাকহারের সঙ্গে সম্পর্কযুক্ত রোগগুলিও বেড়ে যেতে পারে।
তবে রক্তে শর্করা নিয়ে যদি কোনও সমস্যা না থাকে, সে ক্ষেত্রে মাঝেমধ্যে সাবু খাওয়া যেতেই পারে। সাবুর মধ্যে ফোলেট নামক একটি খনিজ রয়েছে। এই উপাদানটি ভ্রুণের বৃদ্ধি ও স্বাস্থ্যরক্ষা করতেও সাহায্য করে। কারও কারও মতে, সাবু শিশুর জন্মের পূর্ববর্তী জটিলতা দূর করে। তাই অন্তঃসত্ত্বাদের জন্য এই খাবার আদর্শ বলে মনে করেন অনেকে। চিকিৎসক শুভম বলেন, ‘‘সাবুদানাকে যদি দই, বাদাম কিংবা অনেকটা সব্জি দিয়ে খাওয়া হয়, তা হলে এর শর্করার মাত্রা কিছুটা হলেও ব্যালান্স হয়।’’ তবে ডায়াবেটিকদের এবং যাঁদের ওজন বেশি তাঁদের রোজের ডায়েটে সাবুদানা রাখার বিষয় সতর্ক করেছেন চিকিৎসক।