পুজোয় পেটপুজো হবে না, তা তো হতে পারে না। মণ্ডপসজ্জা যতটা সুন্দর, তার চারপাশে খাবারের সম্ভার ততটাই লোভনীয়। কোথাও রোল-চাউমিনের দোকানে লাইন, কোথাও ফুচকা স্টলের সামনে ভিড় দেখার মতো। তা ছাড়া নানা রকম জ়াঙ্ক ফুড তো রয়েছেই। এত রকম খাবারের প্রলোভন সামলানো বড়দের জন্যই কষ্টকর, সেখানে ছোটরা তো পছন্দের খাবার খেতে চাইবেই। রাত জেগে ঠাকুর দেখা, ঘড়ির কাঁটার তোয়াক্কা না করে যখন খুশি খাওয়াদাওয়া এই ক’টা দিনে চলবেই। সব সময়ে বারণ করলে তাদের মনও খারাপ হবে। তাই সব দিক সামলেই শিশুর স্বাস্থ্যের খেয়াল রাখতে হবে বাব-মাকে।
পুজোর ক’দিন একটু-আধটু বাইরের খাবার খেতেই পারে শিশু, তবে কিছু নিয়ম মানতে হবে। ইচ্ছাপূরণ করেও স্বাস্থ্যরক্ষা করা যায়। যদি বাবা-মায়েরা কিছু কৌশল মেনে চলেন।
পুজো পছন্দমতোই খাওয়াদাওয়া হোক, তবে মেনে চলুন কিছু বিষয়
রোল-চাউমিন বা বিরিয়ানি, যা-ই খাক, তা যেন পরিমিত হয়। ভাল কোনও রেস্তরাঁয় গিয়ে খেলে ভাল। ঝাল যতটা কম দেওয়া যায় ভাল।
নরম পানীয় একেবারেই দেবেন না। রাস্তা থেকে কেনা শরবত, বরফের গোলা বা আইসক্রিম কিনে দেবেন না। শিশু বায়না করলে ভাল কোনও মিল্ক শেক কিনে দিতে পারেন। তবে বাবা-মায়েরা দেখে নেবেন, তা যেন মেয়াদ উত্তীর্ণ না হয়।
রাস্তায় যে রোল বিক্রি হয়, তাতে যে মাংস দেওয়া হয়, তা টাটকা হয় না বেশির ভাগ সময়েই। তাতে নানা রকম প্রিজ়ারভেটিভও মেশানো থাকে। তাই শিশু যদি এক দিন বাইরের রোল খায়, তা হলে বাকি দিনগুলিতে বায়না করলে বাড়িতেই বানিয়ে নিন। ময়দার সঙ্গে সামান্য আটা মিশিয়ে পরোটা বানাবেন। তাতে সিদ্ধ মাংস ও নানা রকম সব্জি দিন। সস্ না দিয়ে লেবুর রস দিন। নুন কম দিয়ে বরং গোলমরিচ দিন।
আরও পড়ুন:
চাউমিনের ক্ষেত্রেও একই পন্থা অনুসরণ করুন। এক দিন বাইরে খেলে পরের দিন বাড়িতেই বানিয়ে দিন। প্রচুর সব্জি, চিকেন বা ডিম দিয়ে রাইস নুডল্স বানিয়ে দিন। যদি অলিভ তেল ব্যবহার করতে পারেন, তা হলে খুব ভাল হয়। স্বাদও বাড়বে, আর শিশু খেতেও চাইবে।
পুজো মানেই মিষ্টিমুখ করতে হবে। সে ক্ষেত্রে ছানার মিষ্টি খেতে পারেন। মিষ্টির মধ্যে রসগোল্লা খাওয়াতে পারেন। অন্যান্য মিষ্টির তুলনায় এই মিষ্টি স্বাস্থ্যকর। ভাজা মিষ্টি এড়িয়ে যাওয়াই ভাল।
প্রচুর পরিমাণে জল খাওয়াতে হবে শিশুকে। ফল ও শাকসব্জি খাওয়াতে হবে নিয়ম করে। সেই সঙ্গেই জরুরি হালকা ব্যায়াম। স্কিপিং, স্পট জগিং করাতে পারেন শিশুকে।
পুজোর ক’দিন অনিয়ম হবে, তাই শরীর‘ডিটক্স’ রাখা খুব জরুরি।এইসময়ে শিশুকে ডিটক্স পানীয় দিন, এতে গ্যাস-অম্বল হবে না আবার খাবার হজমও হবে।তার জন্য বাড়িতেই জলে শসার টুকরো ও বিভিন্ন রকম লেবু, যেমন পাতিলেবু, বাতাবিলেবু বা মুসম্বির টুকরো মিশিয়ে সেই জল একটু একটু করে খাওয়ান। বাইরে বেরোলে বোতলে করে নিয়ে যান। এতে শরীরে জলের ঘাটতিও হবে না, শিশুও সুস্থ থাকবে।