পুজোর ক’টা দিন ডায়েটের ধার ধারেন কেউই। পুজো মানেই দেদার খাওয়াদাওয়া, বন্ধুদের সঙ্গে জমিয়ে আড্ডা আর দিনভর ঘোরাঘুরি। আর ভূরিভোজ মানেই ভুঁড়ি বাড়বে অবধারিত ভাবেই। জল খাওয়া কম হবে। নরম পানীয় আর মদ্যপানেই গলা ভেজাবেন অনেকে। তাতে মন উৎফুল্ল হলেও, শরীর সায় দেবে না। ফলে পুজো মিটতেই ডিহাইড্রেশন, পেটের গোলমাল বা জ্বরে শরীর কাহিল হয়ে পড়বে। পুজোর প্রতি দিনই যদি ঘোরাঘুরি ও বিপুল খাওয়াদাওয়ার পরিকল্পনা থাকে, তা হলে শরীর ‘ডিটক্স’ করুন এখন থেকেই।
হজমের গোলমাল, ওজন বেড়ে যাওয়া, পেটের সমস্যা— জলের অভাবে এমন সব সমস্যা দেখা দেয়। সুস্থ থাকার অন্যতম ওষুধ জল-ই। উৎসবের আবহে তাই জল খাওয়ার কথা ভুললে চলবে না। চিকিৎসক রণবীর ভৌমিকের মতে, সকালে খালি পেটে এক থেকে দু’গ্লাস জল খাওয়া জরুরি। শরীরের যত্ন নিতে এটুকু তো করা যেতেই পারে। শরীরে জলের ঘাটতি পূরণ করতে একমাত্র পন্থা কিন্তু জল নয়। জলের বিকল্প হিসাবে ভরসা রাখা যেতে পারে আরও কয়েকটি পানীয়ে। যেগুলি জলের শূন্যস্থান কিছুটা হলেও পূরণ করতে পারে। রইল তেমন কয়েকটি পানীয়ের হদিস।
কোন ‘ডিটক্স’ কার জন্য?
১) সবচেয়ে পরিচিত ডিটক্স পানীয় হল ঈষদুষ্ণ জলে লেবুর রস। গ্যাস-অম্বলের সমস্যা থাকলে অথবা আলসার থাকলে, এই পানীয় খাওয়া যাবে না। যাঁদের শরীরে বেশি পটাশিয়াম সহ্য হয় না, তাঁদের জন্যও এই পানীয় বারণ।
২) জন কমবে ও শরীরে জলের ঘাটতি দূর হবে যদি নিয়মিত চুমুক দেন এই পানীয়ে। জলে শসার টুকরো ও বিভিন্ন রকম লেবু, যেমন কমলালেবু, বাতাবি লেবু বা মুসাম্বির টুকরো মিশিয়ে সেই জল পান করতে পারেন। এই ডিটক্স জল শরীর তরতাজা তো রাখেই, সৌন্দর্য বৃদ্ধিতেও সাহায্য করে।
আরও পড়ুন:
৩)পুদিনা পাতা, ধনে পাতা, মশলার মধ্যে আদা, দারচিনি, গোটা হলুদ, লবঙ্গ ইত্যাদি ভিজিয়েও ডিটক্স পানীয় তৈরি করা যায়। এই পানীয়ে এত বেশি অ্যান্টি-অক্সিড্যান্ট থাকে, যা অকালবার্ধক্য রোধ করতে পারে।
জলের ঘাটতি মেটাতে ভরসা হতে পারে কিছু পানীয়
আনারস-পুদিনার ডিটক্স
২ থেকে ৩ কাপ জল নিতে হবে। এ বার কাচের জারে জল নিয়ে তাতে এক কাপ আনারসের টুকরো, ৫-৬টি পুদিনা পাতা ভিজিয়ে রাখুন ঘণ্টা দুয়েক। তার পর সেই জল খেতে হবে। নিয়মিত খেলে বাড়তি ক্যালোরি ঝরে যাবে।
আপেল-দারচিনির ডিটক্স
একটি গোটা আপেল ছোট ছোট টুকরো করে কেটে নিতে হবে। এ বার একটি কাচের জারে জল নিয়ে আপেলের টুকরো ও ২-৩টি দারচিনির স্টিক ফেলে দিন। তাতে কিছু পুদিনা পাতাও মেশাতে পারেন। ঘণ্টা দুয়েক জারটি ফ্রিজে রেখে দিলেই তৈরি হয়ে যাবে ডিটক্স পানীয়। এই জল ওজন কমাবে, পাশাপাশি রক্তে শর্করার মাত্রাও কমাবে।
পালং শাকের ডিটক্স
পালং শাক এক কাপ, আধ কাপ ধনেপাতা, দুই থেকে তিন আঁটি পার্সলে, একটি আমলকি নিতে হবে। সমস্ত উপকরণ ভাল করে ধুয়ে নিয়ে মিক্সারে ভাল করে মিশিয়ে নিন। থকথকে একটি মিশ্রণ তৈরি হবে। সেটি ছেঁকে নিতে হবে। এই পানীয়ের সঙ্গে এক চিমটে নুন ও পাতিলেবুর রস মিশিয়ে খেয়ে নিন। রোজ সকালে খেলে শরীর থেকে টক্সিন বা দূষিত পদার্থ বেরিয়ে যাবে।