সকালে বিছানা ছেড়ে ওঠার পরই মনে হয়, মাথাটা যেন ঘুরে গেল? রাস্তায় হাঁটতে হাঁটতে হঠাৎ চক্কর লাগে? মনে হয় যেন ভারসাম্য হারাচ্ছেন? এক নয়, একাধিক কারণ রয়েছে এর নেপথ্যে। অনেকেই কেবল দুর্বলতা বা রক্তচাপের সমস্যা ভেবে অবহেলা করেন। কিন্তু জানেন কি, মাথা ঘোরার কারণ অনেক সময়ে লুকিয়ে থাকে কানেও? মুখমণ্ডলের এই অঙ্গের ভিতরের নানা কার্যকলাপ এর সঙ্গে জড়িয়ে থাকে।
মানুষের অন্তঃকর্ণ সমগ্র শরীরের ভারসাম্য রক্ষা করে। অন্তঃকর্ণ হল তরলভর্তি ক্ষুদ্র একটি অংশ, যা মাথার নড়াচড়া বা দিকবদল বুঝে মস্তিষ্কে সঙ্কেত পাঠায়। সেই প্রক্রিয়ায় সামান্য বিচ্যুতি ঘটলেই ভারসাম্য নষ্ট হয়। ফলে মাথা ঘোরা শুরু হয়। কানের ভিতরে থাকা তরল বেশি বা কম হয়ে গেলেও ভারসাম্য বিঘ্নিত হয়। এতে হাঁটলে বা নড়াচড়া করলে ঘোর ঘোর লাগতে পারে।
কানের অসুখে মাথা ঘোরার কারণ কী?
১. অন্তঃকর্ণের তরলের ভারসাম্য নষ্ট হলে মাথা ঘোরাতে পারে।
২. কানে সংক্রমণ বা প্রদাহ হলে অথবা ঠান্ডা লাগলে কানে চাপ পড়ে। ফলে মস্তিষ্কে ভুল সঙ্কেত যায়, শরীর বুঝতে পারে না কোন দিকে স্থির থাকতে হবে।
৩. কানের ভিতরে থাকে ক্যালসিয়ামের ক্ষুদ্র ক্ষুদ্র কণা, যেগুলি দেহের ভারসাম্য বজায় রাখার জন্য দায়ী। সেগুলি নিজের জায়গা থেকে অন্যত্র সরে গেলে মাথা ঘুরতে পারে বিশেষ করে ঘুমের সময় পাশ ফিরলে বা নীচে তাকালে এমনটা ঘটতে পারে।
এমন সময়ে কী করা উচিত?
• এ সব সময়ে তৎক্ষণাৎ এক জায়গায় বসে বা শুয়ে পড়ুন এবং চোখ বন্ধ রাখুন।
• দিকবদল করার সময়ে তা়ড়াহুড়ো করবেন না। ধীরে ধীরে মাথার ভঙ্গি পাল্টানো উচিত।
• কানের কারণে মাথা ঘুরলে বেশি করে জল পান করুন, শরীরকে জলশূন্য হতে দেবেন না।
• পাশাপাশি, নিয়মিত ঘড়ি ধরে ঘুমোন ও শরীরকে বিশ্রাম দিন।
• ঘুমের সময়ে বালিশ খুব উঁচু করবেন না, আবার একেবারে নিচুও যেন না থাকে।
• কানের ভিতর বার বার কাঠি ঢুকিয়ে খোঁচানোর অভ্যাস ত্যাগ করুন। এতে সংক্রমণ বাড়ে, ভারসাম্যও বিঘ্নিত হতে পারে।
• তবে ঘন ঘন মাথা ঘোরার সমস্যা দেখা দিলে ইএনটি চিকিৎসকের সঙ্গে দেখা করুন।
কানকে অবহেলা করবেন না, শরীরের ভারসাম্য ও সুস্থতা, দুই-ই এর উপর নির্ভর করে।