চিকিৎসকদের কাছে গেলেই হুঁশিয়ারি মেলে— 'ওজন কমান, না হলে কিন্তু ভুগতে হবে'। স্থূলতার কারণে শরীরে বাসা বাঁধে হাজার রোগব্যাধি। তাই ওজন বাড়লেই বহু মানুষ ভিড় জমান জিমে গিয়ে। পুজো আসতেও আর বেশি দিন নেই। হালফ্যাশনের শাড়িই হোক বা ক্রপ টপ, ছিপছিপে না হলে কোনওটিই মানাবে না। তাই এখন থেকে রোজ শরীরচর্চা করতে শুরু করেছেন। এক দিনও বাদ দিচ্ছেন না। যেমন ভাবেই হোক, সপ্তাহের সাত দিন সময় বার করে জিমে গিয়ে ঘাম ঝরাচ্ছেন অনেকেই। সে কারণে গা-হাত-পায়ে প্রবল ব্যথাও হচ্ছে। একটু কষ্ট সহ্য করে যদি পুজোর আগে কেজি পাঁচেক ওজন কমিয়ে ফেলা যায় তা হলে মন্দ কী! কিন্তু সমস্যা তো আছেই। ফিটনেস প্রশিক্ষকেরা বলছেন, এই ভাবে বিশ্রামহীন শরীরচর্চার ফল কিন্তু উল্টো হতে পারে।
আসলে শরীরচর্চা করার সময়ে পেশিতন্তুগুলি অনেক সময়ে ছিঁড়ে যায়। যেগুলি সাধারণত খালি চোখে দেখা যায় না। বিশ্রাম নিলে সেই ক্ষত নিরাময় হয়। সপ্তাহে সাত দিনই একটানা ব্যায়াম করলে সেই ক্ষত সারে না। উল্টে ক্ষতের উপর ক্ষত সৃষ্টি হয়। অতিরিক্ত পরিশ্রম করলে বিশ্রামের সময়ও বেশি লাগবে।
সপ্তাহে ক’দিন শরীরচর্চা করলে ক’দিন বিশ্রাম নেওয়া উচিত?
শরীরচর্চার ধরনের উপরেও বিশ্রাম নেওয়ার প্রয়োজনীয়তা-অপ্রয়োজনীয়তা নির্ভর করে। ফিটনেস প্রশিক্ষক অনুপ আচার্য বলেন, ‘‘দ্রুত ওজন কমাতে যাঁরা এখন জিমে গিয়ে কঠোর শরীরচর্চা করছেন, তাঁদের কিন্তু সপ্তাহে চার দিনের বেশি ভারী শরীরচর্চা না করাই ভাল। সপ্তাহে এক দিন কার্ডিয়ো ব্যায়াম করতে পারেন। তবে বিশ্রামের জন্য হাতে দু’দিন রাখতেই হবে।’’
অনেকেই মনে করেন, বিশ্রাম নেওয়া মানে সারাটা দিন শুয়ে-বসে কাটানো। এমন ধারণা কিন্তু একেবারেই ঠিক নয়। ক্ষত নিরাময়ের জন্য বিশ্রাম নিলেও হালকা জগিং করাই যায়। সবচেয়ে ভাল হয় টানা তিন দিন শরীরচর্চা করার পর এক দিন বিশ্রাম নিলে। আবার, দু’দিন শরীরচর্চা করার পর এক দিন বিশ্রাম নেওয়া যেতেই পারে। ফিটনেস প্রশিক্ষক রাজা সাহা বলেন, ‘‘পুজোর দু’মাস আগে জিমে ভর্তি হন অনেকেই। দ্রুত মেদ কমাতে তাঁরা দু’ থেকে তিন ঘণ্টার ব্যায়াম করেন, তাঁদের কার্ডিয়ো, স্ট্রেংথ ট্রেনিং, ওয়েট ট্রেনিং, হাই ইনটেনসিটি ইন্টারভ্যাল ট্রেনিং— সবই করানো হয়। সপ্তাহে পাঁচ দিনের বেশি এই সব ব্যায়াম করার পরামর্শ দিই না আমি। এর বেশি ব্যায়াম করলে শরীরের উপর খারাপ প্রভাব পড়তে বাধ্য।’’