চিজ়, মাখনে মাখামাখি, সাদা অথবা লাল সসে ডোবানো পাস্তা খেতে ভালবাসেন অনেকেই। কিন্তু ভালবাসলেই তো হল না। ওজন কমাতে গেলে বা ডায়াবিটিস থাকলে, এমন লোভ সংবরণ করতেই হয়।
পাস্তা সাধারণত ময়দা দিয়ে তৈরি হয়। এর সঙ্গে চিজ়, মাখন যোগ হলে ক্যালোরিও বেড়ে যায় অনেকটাই। এই খাবারের গ্লাইসেমিক ইনডেক্স বেশি।
ফলে কারও ওজন বেশি হলে, স্থূলতার মতো সমস্যা থাকলে বা ডায়াবিটিস হলে পাস্তা এড়িয়ে চলার পরামর্শই দেন পুষ্টিবিদেরা। তবে এক বিশেষ উপায়ে পাস্তাকে করে তোলা যায় তুলনামূলক স্বাস্থ্যকর।
মুম্বইয়ের পুষ্টিবিদ দীপশিখা জৈনের পরামর্শ পাস্তা রান্না করে যদি সেটা ৭-৮ ঘণ্টা ফ্রিজে রেখে ঠান্ডা করা হয় তা হলে পাস্তার তুলনামূলক ভাবে আরও স্বাস্থ্যকর হয়ে উঠবে। এতে ‘রেজ়িস্ট্যান্ট স্টার্চ’-এর পরিমাণ বৃদ্ধি পাবে। বিষয়টা কী? পুষ্টিবিদের মতে, পাস্তা রান্নার পর ফ্রিজে রেখে ঠান্ডা করে নিলে এতে ‘রেজ়িস্ট্যান্ট স্টার্চ’ বেড়ে যাবে। তাতেই বদলাবে এর গুণাগুণ। রেজিস্ট্যান্ট স্টার্চের শুধু গ্লাইসেমিক ইনডেক্স কম নয়, এটি হজমেও সহায়ক।
কী লাভ হবে এতে?
· এটি স্টার্চকে দ্রুত চিনিতে পরিণত হতে বাধা দেয়।
· শর্ট চেন ফ্যাটি অ্যাসিড তৈরি করে, ভাল ব্যাকটেরিয়া বৃদ্ধিতে সাহায্য করে।
· শর্ট চেন ফ্যাটি অ্যাসিড থেকে তৈরি হয় ব্যুটিরেট নামে এক ধরনের উপাদান, যা অন্ত্রের স্বাস্থ্য ভাল রাখে।
পুষ্টিবিদ অনন্যা ভৌমিক বলছেন, ‘‘রেজ়িস্ট্যান্ট স্টার্চ জাতীয় খাবারে গ্লাইসেমিক ইনডেক্স কম হয়। গ্লাইসেমিক ইনডেক্স একটি সূচক বা স্কেল যা নির্দিষ্ট পরিমাণ খাবার খাওয়ার পরে রক্তে শর্করার মাত্রা নির্ধারণ করে। কোনও খাবারের জিআই ইনডেক্স বেশি হওয়ার অর্থ, সেটি খেলে রক্তে শর্করার মাত্রা দ্রুত বৃদ্ধি পাবে। এ ক্ষেত্রে পাস্তার গ্লাইসেমিক ইনডেক্স কমে যাওয়ায় ডায়াবিটিস থাকলেও তা খাওয়া যাবে। ’’ তবে অনন্যা মনে করাচ্ছেন, ফ্রিজের ঠান্ডা করা পাস্তা নয়, বরং সেটি গরম করে তবেই খাওয়া উচিত। গরম করার ফলে রেজ়িস্ট্যান্স স্টার্চ সামান্য কমতে পারে, পুরোটা নয়।রেজ়িস্ট্যান্ট স্টার্চের উপকারিতা অনেক। পুষ্টিবিদ দীপশিখা জানাচ্ছেন, রেজ়িস্ট্যান্ট স্টার্চ হজম করা অনেক বেশি সহজ। তা ছাড়া এই খাবারে সামগ্রিক ভাবে ক্যালোরির পরিমাণও খানিকটা কমে যায়।
পুষ্টিবিদ মুগ্ধা প্রধানের পরামর্শ, রান্নার পর পাস্তা ঠান্ডা করে নেওয়ার। এতে রেজ়িস্ট্যান্ট স্টার্চ বাড়বে। তখন এটি খেলে ওজন কমার ভয় যেমন থাকবে না, তেমনই ডায়াবিটিস থাকলেও এটি খেলে ততটা ক্ষতি হবে না।
তবে, কৌশল পাল্টেও এই ধরনের খাবার নিয়মিত খাওয়ার পরামর্শ দিচ্ছেন না পুষ্টিবিদেরা।