ভারী ব্যাগের কারণে কাঁধের ব্যথা কিন্তু মারাত্মক আকার ধারণ করতে পারে। প্রতীকী ছবি।
ল্যাপটপ, চার্জার, ডায়েরি, জলের বোতল, টিফিন বাক্স— এক ব্যাগে সব কিছু। সেই সংসার ভরা ব্যাগ পিঠে নিয়ে রোজ অফিস যাওয়া-আসা। ব্যাগেরও একটা নিজস্ব ওজন রয়েছে। গণপরিবহণে যাতায়াত করেন বেশির ভাগ মানুষই। এক কাঁধে দীর্ঘ ক্ষণ ভারী পিঠ-ব্যাগ নিয়ে যাতায়াত করার ফলে সমস্যা বাড়তে থাকে। ঘাড়ে, পিঠে ব্যথা মাঝেমাঝে জানান দেয় ভারী ব্যাগ বয়ে নিয়ে যাওয়ার কুফল। ভারী ব্যাগের কারণে কাঁধের ব্যথা কিন্তু মারাত্মক আকার ধারণ করতে পারে। অনেকেই এই সমস্যায় ভোগেন। ব্যথানাশক ওষুধ খাওয়ার ফলে ব্যথা সেই মুহূর্তে সেরে গেলেও পরবর্তীতে সমস্যা হতে পারে।
শরীরের ওজনের থেকে ব্যাগের ওজন যেন খুব বেশি না হয়। এক কাঁধে ব্যাগের ভারসাম্য রাখতে গিয়ে শিরদাঁড়া সোজা করতে খুব সমস্যা হয়। শিরদাঁড়ায় চাপ পড়ে। দীর্ঘ সময় ধরে কাঁধে ও শিরদাঁড়ায় এই বিষম ভার বহন করলে পেশি, শিরা ও হাড়ের গঠনের পরিবর্তন হতে শুরু করে। যা স্পন্ডিলাইটিসের আকার নেয়। ঘাড়ে এবং পিঠে এ ধরনের রোগের আশঙ্কা বাড়ে। ফলে পেশি খুব দ্রুত দুর্বল হয়ে পড়ে। ভারী ব্যাগ এক কাঁধে নিয়ে হাঁটলে কিছু ক্ষণ পরেই হাঁপ ধরে, ব্যাগের ভার অসহনীয় হয়ে পড়ে। ব্যথা শুরু হয়। এমন হলে অতি অবশ্যই চিকিৎসকের পরামর্শ নিন। এ ছাড়া নিজেদেরও একটু সতর্ক থাকা প্রয়োজন। ছোট ছোট সচেতনতায় সমস্যা অনেকটা দূরে থাকবে। কী কী মেনে চলবেন?
১) ভারী বা হালকা— পিঠ-ব্যাগ সব সময় দু’কাঁধে নেওয়ার চেষ্টা করুন। যাতে দু’কাঁধে সমান চাপ পড়ে। অনেকেই এক কাঁধে পিঠ-ব্যাগ নেন। এই অভ্যাস অস্বাস্থ্যকর। অসুবিধাজনকও। তার চেয়ে দু’কাঁধে পিঠ-ব্যাগ নিলেই ভাল।
২) পিঠ-ব্যাগ ব্যবহার করলে মাথায় রাখুন, যাতে ব্যাগের ফিতে সমান চওড়া হয়। অনেক সময় ব্যাগের ফিতেগুলি উপর-নীচে হয়ে যায়। এতে এক কাঁধে বেশি চাপ পড়ে। অন্য কাঁধে তুলনায় কম চাপ থাকে। এই ভারসাম্যহীনতার কারণে ব্যথা বেশি হয়।
৩) চিকিৎসকরা বলেন, শরীরের থেকে বেশি ওজন কোনও ভাবেই বওয়া ঠিক নয়। অর্থাৎ কারও ওজন ৬০ কেজি হলে, সর্বাধিক ৬ কেজির বেশি বহন করা যাবে না।
৪) এক টানা এক কাঁধে ভারী পিঠ-ব্যাগ নেবেন না। ১০-১৫ মিনিট অন্তর কাঁধ বদলে নিন। তবে ঘণ্টা খানেকের বেশি এক টানা কাঁধে ব্যাগ রাখবেন না।
৫) সব সময় কাঁধে না নিয়ে মাঝে মাঝে পিঠ-ব্যাগ হাতে ঝুলিয়ে নিন। এতে ক্ষতির আশঙ্কা কিছুটা হলেও কমে।
৬) খাওয়াদাওয়ার প্রতিও বিশেষ নজর দিতে হবে। ক্যালশিয়াম, ভিটামিন ই-সমৃদ্ধ খাবার বেশি করে খেতে হবে। এতে হাড় ও পেশি শক্তিশালী হবে। মাছ, মাংস এবং দুধ রোজকার ডায়েটে রাখুন। দুগ্ধজাতীয় খাবারে ক্যালশিয়ামের পরিমাণ বেশি। ফলে এই ধরনের খাবার বেশি করে খান। সঙ্গে প্রচুর পরিমাণে সবুজ শাকসব্জি খান।
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy