দুশ্চিন্তা আর উদ্বেগ কাটিয়ে ওঠা সহজ নয়। ঘুম ভেঙে উঠেই একরাশ দুশ্চিন্তা চেপে বসে মাথায়। সারা দিন অফিসের কাজে মানসিক চাপ আরও বাড়ে। চাকরি, স্বাস্থ্য, আর্থিক অবস্থা, ব্যক্তিগত সম্পর্ক নিয়ে নানা রকম দুশ্চিন্তা লেগেই থাকে। কিছুতেই মন শান্ত হতে চায় না। এই উদ্বেগ, দুশ্চিন্তার কারণে রাতে যেমন ঠিকমতো ঘুম হয় না, তেমনই দিনভর অশান্তি, উৎকণ্ঠা কাজ করে মনে। মনকে চিন্তামুক্ত রাখতে কেউ পরামর্শ দেন মেডিটেশন করার, আবার কেউ বলেন যোগাসন করতে। তবে জাপানিরা দুশ্চিন্তা হলেই ৫টি কাজ করেন। সেই কৌশল মানলে মনের অস্থিরতা কমতে পারে অনেকটাই। কী কী সেই কৌশল?
দুশ্চিন্তা কাটাতে কী কী কাজ করেন জাপানিরা?
ইকিগাই
জীবনের উদ্দেশ্য খুঁজে বার করা। কোন কাজটি পছন্দ করছেন, কোন খাবার ভাল লাগে, কোন জায়গায় ঘুরতে যেতে পছন্দ করেন, সেগুলি আগে মনে করার চেষ্টা করুন। সম্ভব হলে তার তালিকা বানান। চিন্তা কাটাতে সেই কাজগুলিই করুন, যা মন থেকে আপনি পছন্দ করেন। যে কাজটি করছেন তার উদ্দেশ্য কী, কোন লক্ষ্যে এগোচ্ছেন, তা-ও জানা জরুরি। তা হলে যতই কাজটি নিয়ে উদ্বেগ থাকুক না কেন, দুশ্চিন্তা কমই হবে।
শিনরিন-ইয়োকু
জাপানিরা একে বলেন ‘ফরেস্ট বেদিং’। মন খারাপ থাকলে প্রকৃতির মাঝে কিছুটা সময় কাটানোই ভাল। যদি পাহাড় বা জঙ্গলে ঘুরতে যেতে পারেন তা হলে ভাল হয়। না হলে গাছপালা রয়েছে এমন জায়গায় হাঁটুন বা কিছু সময়ে থাকুন। তা হলেই দুশ্চিন্তা কমে যাবে।
কাইজ়েন
অতীত নিয়ে মাথা ঘামাতে রাজি নন জাপানিরা। যে কাজটি হয়ে গিয়েছে তা নিয়ে না ভেবে, বরং ছোট ছোট পদক্ষেপে সাফল্যের দিকে এগিয়ে যেতে হবে। লক্ষ্য স্থির রেখে রোজ একটু একটু করে নিজের দক্ষতা বাড়ানোর চেষ্টা করতে হবে। জাপানিরা মনে করেন, দুশ্চিন্তা করা বা উদ্বেগে ভোগার চেয়ে ভাল, আগামী দিনের পরিকল্পনা নিয়ে ভাবা ও সেই পথে নিজেকে এগিয়ে নিয়ে যাওয়া।
আরও পড়ুন:
ওয়াবি-সাবি
গতির সঙ্গে তাল মিলিয়ে চলা। নিজেকে যে সব কাজেই নিপুণ ও পারদর্শী দেখাতে হবে তা নয়। বরং নিজের সামর্থ্য অনুযায়ী কাজ করলেই সাফল্য আসবে। অতীত নিয়ে না ভেবে বর্তমান সময়ে বাঁচাকে বেশি গুরুত্ব দেন জাপানিরা। তাঁরা মনে করেন, নিজেকে পারদর্শী দেখানোর চেষ্টাই মনের চাপ বাড়ায়। তাই সে পথে পা না বাড়ানোই ভাল। সবাই সব কাজে দক্ষ হন না, তাই নিজের যোগ্যতা অনুযায়ী কাজ করাই ভাল।
জ়ানসিন
মনঃসংযোগ বাড়ানোর পদ্ধতি। জাপানিরা মনে করেন, দুশ্চিন্তা হলে মন বিভ্রান্ত হয়, একাগ্রতা কমে। তাই কোনও কাজে মনোযোগ বাড়ালে মানসিক চাপও কমবে। জ়ানসিন মনকে একাগ্র করার উপায়, এতে মনোযোগ ও ধৈর্য বাড়বে এবং মনের অস্থিরতাও কমবে।