সংক্রমিত খাবার ও জল থেকে মস্তিষ্কে ফিতাকৃমির লার্ভা তৈরি হয়। আর তা থেকেই নিউরোসিস্টিসারকোসিসের মতো রোগের হানা দেওয়ার ঝুঁকি থাকে। সংক্রমিত খাবার বা জলের মাধ্যমে ফিতাকৃমির ডিম শরীরে প্রবেশ করলে লার্ভা রক্তপ্রবাহে ঘুরে মস্তিষ্কে সিস্ট তৈরি করে। এর ফলে খিঁচুনি, মাথা ব্যথা, স্নায়ুর রোগ ও মৃগী হতে পারে। সেই পরিস্থিতি কখনও কখনও প্রাণনাশকও হয়ে উঠতে পারে।
সম্প্রতি এই রোগ সম্পর্কে সমাজমাধ্যমে বিস্তারিত জানালেন গুরুগ্রাম নিবাসী স্নায়ুরোগ চিকিৎসক প্রিয়ঙ্কা শেহরাওয়াত। তাঁকে একটি পডকাস্টে জিজ্ঞাসা করা হয়, ‘‘আজকাল মাথায় পোকা হওয়ার রোগ নিয়ে খুব আলোচনা হচ্ছে চারদিকে। কী সেটি?’’ চিকিৎসক বললেন, ‘‘সহজ ভাষায় যাকে মাথার পোকা বলা হয়, সেই রোগের নাম, নিউরোসিস্টিসারকোসিস। আসলে শিশুদের মধ্যে খিঁচুনির সবচেয়ে সাধারণ সংক্রামক কারণ হল এটিই।’’
মস্তিষ্কে পোকা হওয়ার রোগ আসলে কী? ছবি: সংগৃহীত।
কী ভাবে এই রোগ হয়?
সব্জি বাজার থেকে কিনে আনার পর ভাল ভাবে না ধুলে, বা না সেদ্ধ করলে, সব্জির গায়ে মাটি থেকে যায়। আর সেই মাটিতেই থাকতে পারে বিশেষ এক প্রকার কৃমির (টিনিয়া সোলিয়াম) ডিম। লেটুস, বাঁধাকপির মতো সব্জিতে এই ঝুঁকি সবচেয়ে বেশি। কারণ এগুলিতে একাধিক পরত থাকে। সেগুলির মধ্যে লুকিয়ে থাকতে পারে কৃমির ডিম। চিকিৎসক বলছেন, ‘‘ওই কৃমির ডিমগুলি আমাদের শরীরের অ্যাসিডের সংস্পর্শে এসেও মরে না। এক মাত্র ভাল ভাবে সেদ্ধ করলে বা ফুটিয়ে নিলে সেগুলি মরে যায়। কিন্তু অনেক সময়ে সেটি না ঠিক ভাবে না করলে এই ডিমগুলি শরীরে প্রবেশ করে। আর অন্ত্র থেকে রক্তপ্রবাহের মাধ্যমে মস্তিষ্কে পৌঁছে যায় ডিমগুলি। মস্তিষ্ক বুঝতে পারে, শরীরে ভিন্দেশি কোনও বস্তু প্রবেশ করেছে। তার ফলেই মস্তিষ্কে প্রতিক্রিয়া দেখা যায়। কৃমির ডিম বা কণাকে ধারণ করার জন্য তার চারপাশে একটি স্ফীতি তৈরি হয়। এই স্ফীতিই খিঁচুনি বা মাথাব্যথার কারণ হয়ে দাঁড়ায়। আমার কাছে যত শিশুকে খিঁচুনির সমস্যা নিয়ে আসা হয়, তাদের মধ্যে একাধিক ক্ষেত্রে রোগের কারণ এটিই।’’ আর তাই সব্জি খুব ভাল করে ধুয়ে নেওয়ার পরামর্শ দিচ্ছেন চিকিৎসক।