মহিলাদের মধ্যে হিমোগ্লোবিনের মাত্রা কমে যাওয়ার সমস্যা প্রায়ই দেখা যায়। লোহিত রক্তকণিকার আয়রন সমৃদ্ধ প্রোটিন হল হিমোগ্লোবিন, যা ফুসফুস থেকে শরীরের কলাকোষে অক্সিজেন বহন করে। শরীরের টিস্যুতে পর্যাপ্ত অক্সিজেন বহন করার জন্যই হিমোগ্লোবিনের মাত্রা পর্যাপ্ত রাখা দরকার। হিমোগ্লোবিনের মাত্রা যখন স্বাভাবিকের চেয়ে কম থাকে তখন বুঝতে হবে রোগী রক্তাল্পতা বা অ্যানিমিয়ায় ভুগছেন।
রক্তাল্পতা হলে শরীরে ক্লান্তি ও দুর্বলতা দেখা দেয়। শ্বাসকষ্ট, মাথা ঘোরা, দ্রুত বা অনিয়মিত হৃৎস্পন্দন—এমন নানা লক্ষণ দেখা দিতে পারে। এ ক্ষেত্রে অবশ্যই চিকিৎসকের পরামর্শ নেওয়া দরকার। প্রয়োজন হতে পারে ওষুধের।
তবে ওষুধ ছাড়াও রক্তে হিমোগ্লোবিনের মাত্রা ঠিক রাখা যায়, যদি নিয়ম করে আয়রন সমৃদ্ধ খাবার খাওয়া যায়। তবে শুধু আয়রন রয়েছে এমন সব্জি বা ফল খেলেই হল না, দেখা দরকার সেই পুষ্টি শরীর গ্রহণ করতে পারছে কি না। উদ্ভিজ্জ উৎস থেকে ‘নন হিম’ আয়রন মেলে। এই ধরনের আয়রন মানব শরীর ঠিক মতো শোষণ করতে পারে না। তবে ভিটামিন সি থাকলে, আয়রন শোষণ সহজ হয়।
তাই বেছে নিন এমন ফলের জুটি যেখানে আয়রন এবং ভিটামিন সি দুই-ই মিলবে। শরীর আয়রন শোষণ করতে পারলে কমবে রক্তাল্পতার ঝুঁকিও।
পেয়ারা এবং বেদানা: ভিটামিন সি-এর উৎস হিসাবে লেবুকেই ধরা হয়। তবে পেয়ারাও সেক্ষেত্রে পিছিয়ে থাকে না। ভিটামিন সি, ফাইবার-সহ নানা পুষ্টিগুণে ভরপুর ফলটি। বেদানায় রয়েছে আয়রন যা হিমোগ্লোবিনের প্রধান উপাদান। কিন্তু মানব শরীর উদ্ভিজ্জ উৎস থেকে আয়রন সরাসরি ভালোভাবে শোষণ করতে পারে না। পেয়ারাতে থাকা ভিটামিন সি, বেদানার আয়রনকে রক্তে শোষিত হতে সাহায্য করে, যা লোহিত রক্তকণিকা তৈরির প্রক্রিয়ায় গতি আনে।
খেজুর এবং কমলালেবু: খেজুর শক্তির অন্যতম উৎস। পুষ্টিগুণে ভরপুর। খেজুরে মেলে আয়রন আর কমলালেবুতে ভিটামিন সি। খেজুরে পাওয়া যায় ‘নন-হিম’ আয়রন যা শরীর সহজে গ্রহণ করতে পারে না। কমলালেবুতে থাকা ভিটামিন সি থাকার ফলে খেজুরের আয়রন শোষণ করা শরীরের পক্ষে সহজ হয়। বিশেষত রক্তাল্পতা হলে বা হিমোগ্লোবিনের মাত্রা কম থাকলে এই ফল দু’টি একসঙ্গে খাওয়া যেতে পারে।
কালো আঙুর এবং আমলকি: কালো আঙুরে কিছুটা হলেও আয়রন মেলে। তা ছাড়া এতে রয়েছে ভিটামিন সি। তা ছাড়া আমলকিও ভিটামিন সি-এর অন্যতম উৎস। ফলে দুই ফল অল্প কিছুটা একসঙ্গে খেলে শরীর আয়রন এবং ভিটামিন সি উভয়ই পাবে।
ভিটামিন সি শুধু আয়রন শোষণে সাহায্য করে না, বরং রোগ প্রতিরোধ ক্ষমতা বৃদ্ধিতেও এর গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা রয়েছে। ফলে ভিটামিন সি এবং আয়রন সমৃদ্ধ ফল খেলে শরীর ভাল থাকবে। শারীরিক এবং মানসিক স্বাস্থ্যের জন্যই ফল ভাল