কাচপাত্রে জ্বলন্ত মোমবাতি। হেলালেই গায়ে পড়ল তরল মোম। উষ্ণ মোম অবশ্য হাতে জ্বালা ধরাচ্ছে না। বরং তরল সেই মোম গায়ে মাখছেন সমাজমাধ্যম প্রভাবী। রূপচর্চায় এখন চর্চা মোমবাতির ময়েশ্চারাইজ়ার নিয়ে, যাকে বলা হচ্ছে 'ক্যান্ডেল ময়েশ্চারাইজ়ার'।
একাধিক ভিডিয়োতে দেখা যায়, তরল মোম গায়ে মাখছেন ভিডিয়োর অন্য প্রান্তে থাকা কোনও মহিলা। দাবি করছেন, এতেই নাকি মিলবে আর্দ্রতা, ত্বক হবে মসৃণ। কেউ কেউ গলে যাওয়া মোমে যোগ করছেন এসেনশিয়াল অয়েল। তা দেখেই কি পরখ করে দেখতে চান? কিন্তু এমন ত্বকচর্চায় চিকিৎসকেরাও সহমত তো?
মুম্বইয়ের ত্বকের চিকিৎসক রিঙ্কি কপূরের কথায়, হতে পারে হালকা গরম মোমের প্রলেপ আরামদায়ক মনে হচ্ছে, কিন্তু ত্বকে আর্দ্রতার বর্ম পরাতে তা সক্ষম নয়। দীর্ঘ ক্ষণ ত্বককে ময়েশ্চারাইজ় তা করতে পারে না। একই সঙ্গে তিনি জানাচ্ছেন, কোনও কোনও ময়েশ্চারাইজ়ারে মোমের ব্যবহার হয়। কিন্তু তা ত্বকের রন্ধ্রমুখ আটকে দেয়, ফলে সেগুলি মোটেই ভাল নয়। ময়েশ্চারাইজ়ার ত্বকের খেয়াল রাখার জন্যই তৈরি হয়েছে। তবে গরম মোমে উল্টে ত্বকের ক্ষতিও হতে পারে। আচমকা গরম মোম গায়ে লাগলে, চামড় লাল হয়ে যেতে পারে, জ্বালা করতে পারে। ত্বক পুড়ে গেলে তা থেকে আর এক সমস্যা হবে।
আরও পড়ুন:
ময়েশ্চারাইজ়ারের কাজ কী?
ত্বককে আর্দ্রতা জোগানো এবং সেই আর্দ্রতা ধরে রাখতে সাহায্য করাই ময়েশ্চারাইজ়ারের কাজ। ত্বকের সুরক্ষা-বর্ম হিসাবেও কাজ করে এটি।
ত্বকের বিভিন্ন ধরন হয়। এবং মরসুম ভেদে ত্বকের প্রকৃতি অনুযায়ী ময়েশ্চারাইজার বেছে নেওয়ার প্রয়োজন পড়ে।
তৈলাক্ত ত্বক: এই ধরনের ত্বক উপর থেকে তেলতেলে হলেও, ত্বকের নীচের অংশে আর্দ্রতার অভাব হয়। এই ধরনের ত্বকের জন্য উপযোগী হল লোশন বা হাইড্রেটিং জেল। ভিটামিন সি, সেরামাইড রয়েছে এমন ময়েশ্চারাইজ়ার তৈলাক্ত ত্বকের জন্য ভাল।
শুষ্ক ত্বক: শুষ্ক ত্বকে আর্দ্রতা ধরে রাখার জন্য একটু ঘন, ক্রিম জাতীয় ময়েশ্চারাইজ়ার ভাল। তবে তাতে ভিটামিন সি, ওমেগা থ্রি ফ্যাটি অ্যাসিড, ফসফোলিপিড জাতীয় উপাদান থাকলে ভাল হবে।
স্পর্শকাতর ত্বক: স্পর্শকাতর ত্বকের জন্য অ্যালো ভেরা, ক্যামোমাইল রয়েছে এমন ময়েশ্চারাইজ়ার ভাল।
তবে, মোমবাতির সমস্ত উপাদান কতটা ত্বক-বান্ধব, তা নিয়ে প্রশ্ন থাকতে পারে। মোম তৈরির সময়েও রাসায়নিকের ব্যবহার হয়। তা ছাড়া গরম মোম সরাসরি ত্বকে ব্যবহার করা কখনই ভাল নয়, বলছেন ত্বকের চিকিৎসক।