সুস্থ থাকতে প্রতিদিন নিয়ম করে অনেকেই হাঁটেন। আবার কেউ কেউ নিয়মিত দৌড়ন। শরীরকে সুস্থ রাখতে হাঁটার অভ্যাস খুবই উপকারী। শরীরচর্চার জন্য আলাদা করে সময় না থাকলে, শুধু হেঁটে বা দৌড়ে শরীরের ওজন নিয়ন্ত্রণ করা সম্ভব। একসঙ্গেই উচ্চরক্তচাপ, হার্ট অ্যাটাকের ঝুঁকি কমাতে হাঁটা এবং দৌড় উপকারী।
অল্প বয়সিরা যেমন ছুটতে পারেন, বয়স্কদের ক্ষেত্রে আবার অনেকেই হাঁটা পছন্দ করেন। হাঁটা বনাম দৌড়—বিভিন্ন সময়ে চর্চা চলতেই থাকে। ধরা যাক, কেউ ২ কিলোমিটার হেঁটেছেন। অন্য এক জন সেখানে ১ কিলোমিটার দৌড়েছেন। কোন ক্ষেত্রে উপকার বেশি?
চিকিৎসকেদের একাংশের মতে, হাঁটা এবং দৌড়, উভয়ের স্বাস্থ্যের পক্ষে উপকারী, তাই আলাদা করে কোনওটিকে অন্যের তুলনায় এগিয়ে রাখা সম্ভব নয়। বরং শারীরিক পরিস্থিতি এবং সময়-সহ একাধিক বিষয়কে মাথায় রেখেই কোনও ব্যক্তিকে হাঁটা এবং দৌড়ের মধ্যে কোনও একটি বেছে নেওয়া উচিত। সাধারণত ১ কিলোমিটার দূরত্ব দৌড়ে শেষ করতে ৬ থেকে ৮ মিনিট সময় লাগতে পারে। আবার ২ কিলোমিটার দূরত্ব হেঁটে শেষ করতে আধ ঘণ্টার মতো সময় লাগতে পারে। এখন যাঁর হাতে সময় কম, তিনি দৌড়তে পারেন। অন্যথায় হাঁটা যেতে পারে।
আরও পড়ুন:
তুলনা করলে দেখা যাবে, সমান দূরত্বের ক্ষেত্রে হাঁটার তুলনায় দৌড়লে, বেশি ক্যালোরি খরচ হয়। কোনও কোনও ক্ষেত্রে ২ কিলোমিটার হাঁটার পরিবর্তে ১ কিলোমিটার দৌড়লেও বেশি ক্যালোরি ঝড়তে পারে। হাঁটার পরিবর্তে দৌড়ের ক্ষেত্রে শরীর বেশি গরম হয়। ফলে হৃদ্পিণ্ডের গতিও বেড়ে যায়। অল্প সময়ে শরীরে রক্ত সঞ্চালনা বৃদ্ধি করতে দৌড় হাঁটার পরিবর্তে বেশি উপকারী।
আবার হাঁটা এবং দৌড়ের মধ্যে তুলনা করলে দেখা যাবে, দৌড়ের ক্ষেত্রে দেহের অস্থিসন্ধি, লিগামেন্টের উপরে চাপ সৃষ্টি হয়। ফলে চোটের আশঙ্কা থাকে। আবার আর্থ্রাইটিস, স্থূলত্ব বা হৃদ্রোগে আক্রান্ত ব্যক্তিদের ক্ষেত্রে দৌড়ের পরিবর্তে হাঁটতে বলা হয়।
হাঁটা এবং দৌড় অবশ্যই উপকারী। তাদের নিজ নিজ সুবিধা এবং অসুবিধাও রয়েছে। কোনও ব্যক্তির নিজের শারীরিক পরিস্থিতি বিচার করে তবে হাঁটা বা দৌড়নো উচিত। আধুনিক চিকিৎসাবিজ্ঞানে সপ্তাহে কমপক্ষে ৩০০ মিনিট শরীরচর্চার পরামর্শ দেওয়া হয়েছে। যদিও চিকিৎসকদের একাংশ জানিয়েছেন, ব্যস্ততার কারণে অনেকেই তা পূরণ করতে পারেন না। তাই লক্ষ্যমাত্রা পূরণ করতে এবং সুস্থ থাকতে হাঁটা বা দৌড়ের মধ্যে যে কোনও একটিকে বেছে নেওয়া যেতে পারে।