শীত এলে শারীরিক কসরত করতে আর ইচ্ছা করে না। বয়স্করা আরও বেশি জবুথবু হয়ে যান। অথচ সুগার বেশি হলে হাঁটাহাঁটি করারই পরামর্শ দেন চিকিৎসকেরা। হার্টের রোগ থাকুক বা উচ্চ রক্তচাপ, অন্য ব্যায়াম করতে না পারলেও হাঁটাহাঁটি করা যায়। তবে কথা হল কী ভাবে ও কত ক্ষণ হাঁটবেন। বাড়ির প্রবীণ সদস্যেরা ভাবেন বেশি ক্ষণ হাঁটলে বা খুব জোর গতিতে হাঁটলে হার্টের ক্ষতি হতে পারে। তা কিন্তু নয়। হাঁটার বিশেষ পদ্ধতি রয়েছে। বয়স্করা ঠিক কী ভাবে হাঁটলে তাঁদের শরীর ভাল থাকবে এবং রক্তে শর্করার মাত্রাও কমবে, তা শিখিয়ে দিয়েছেন জাপানিরা।
জাপানি পদ্ধতিতে হাঁটার অনেক উপকারিতা আছে। এই পদ্ধতির নাম ‘হাই-ইনটেনসিটি ইন্টারভাল ওয়াকিং’। সহজ করে বললে, বেশি সময় ধরে হাঁটা ও বিরতি নিয়ে হাঁটা। এমন হাঁটায় গতি কিন্তু মাঝেমধ্যেই বদলাতে হবে। খুব জোরে হাঁটতে হবে তা যেমন নয়, আবার খুব ধীরেসুস্থে হাঁটবেন তা-ও নয়। পুরোটাই গতি নিয়ন্ত্রণ ও সময় ধরে হয়। হাঁটতে হাঁটতে আবার খানিক ফ্রি-হ্যান্ড ব্যায়ামও করে নেওয়া যায়। জাপানি পদ্ধতিতে হাঁটলে ক্লান্তি কম আসবে এবং বুক ধড়ফড়ও করবে না।
কী ভাবে হাঁটবেন?
প্রথম ৫ মিনিট হবে ‘ওয়ার্ম আপ’। এই সময়ে ধীর গতিতে হাঁটতে হবে। অর্থাৎ, শরীরকে আগে মানিয়ে গুছিয়ে নিতে হবে। যদি এই পদ্ধতিটি ১০ মিনিট করতে চান, তা-ও পারেন। সবটাই নির্ভর করবে শারীরিক সক্ষমতার উপরে। ৫-১০ মিনিট ধীর পায়ে হাঁটার পর গতি বৃদ্ধি করতে হবে। পরবর্তী ৫-১০ মিনিট খুব দ্রুত গতিতে হাঁটতে হবে। ভয় নেই, এতে ক্ষতি হবে না। কারণ ‘ওয়ার্ম আপ’ পর্বেই শরীরের পেশি সক্রিয় হয়ে যায়, রক্ত সঞ্চালন বাড়ে, কাজেই জোরে হাঁটতে গেলে পায়ে টান ধরা বা বুক ধড়ফড় করার মতো সমস্যা হবে না। তার পর আবার গতি কমিয়ে ফেলুন। পরের ৫ মিনিট ধীর গতিতে হাঁটতে হবে। অন্তত ২০-৩০ মিনিট রাখুন এই ভাবে হাঁটার জন্য। এই ভাবে হাঁটলে একঘেয়েমি আসবে না। আর ২০-৩০ মিনিট সময় কাঁটায় কাঁটায় ব্যবহার করা যাবে।
আরও পড়ুন:
উপকার কী হবে?
জাপানি পদ্ধতিতে যে কেউ হাঁটতে পারেন। তবে প্রবীণদের সুবিধা হল, তাঁদের শরীরচর্চা করার প্রতি ভয় কাটবে। প্রথমে ধীরে, পরে জোরে ও আবার ধীরে— এই পদ্ধতিতে হাঁটলে তাঁরা ক্লান্ত হয়ে পড়বেন না। এতে হাঁটার প্রতি আগ্রহও তৈরি হবে, মনের জোরও বাড়বে। পেশির শক্তি বৃদ্ধি হবে। সারা শরীরে রক্ত সঞ্চালন ঠিক ভাবে হবে।পায়ের ব্যথা থাকলে তা কমে যাবে। হাঁটুর ব্যথা নিয়ে যাঁরা হাঁটতে ভয় পান, তাঁরা এই পদ্ধতি অনুসরণ করে সুফল পেতে পারেন। এতে শরীরের ভারসাম্য বাড়বে। ঝুঁকে হাঁটা, হাঁটার সময়ে বারে বারে পড়ে যাওয়ার প্রবণতা কমবে। ওজন কমাতে চাইলে, জাপানি পদ্ধতিতে হাঁটা অভ্যাস করতে পারেন।