Advertisement
E-Paper

‘শত্রু’ ভেবে তেল খাওয়া ছেড়েছেন? দু’সপ্তাহ পরে ফল কী হতে পারে জানেন?

ওজন ঝরিয়ে সুস্বাস্থ্যের অধিকারী হতে গেলে রান্নায় বাদ দিতে হবে তেল! দু’ সপ্তাহ তেল খাওয়া পুরোপুরি ছাড়লে ভাল হবে না মন্দ, কী বলছেন পুষ্টিবিদেরা?

আনন্দবাজার ডট কম ডেস্ক

শেষ আপডেট: ০৮ এপ্রিল ২০২৫ ১১:০২

ছবি: সংগৃহীত।

সমাজমাধ্যমে চোখ রাখলেই এখন পাওয়া যাবে তেল ছাড়া মাংস, জল দিয়ে লুচি তৈরির কৌশল। পরোটা হোক বা সব্জি— কী ভাবে বিনা তেলে রাঁধা যায় সুস্বাদু পদ, তা নিয়েই এখন চর্চা।

সুস্থ থাকতে হলে জীবন থেকে বাদ দিতে হবে তেল, এমনটাই বিশ্বাস করেন অনেকে। ওজন ঝরাতে গেলেও শত্রু হিসেবে চিহ্নিত হচ্ছে ভোজ্য তেল এবং চিনি। স্বাস্থ্য সম্পর্কে সচেতন হতে গিয়ে অনেকেই নিয়মিত রান্না থেকে বাদ দিচ্ছেন তেল, আবার কেউ তেল খাচ্ছেন নামমাত্র।

তেল ছাড়া টানা দু’সপ্তাহ খাবার খেলে সত্যি কি ওজন কমবে, লাভ হবে, আপনি নিশ্চিত তো?

তেল নিয়ে সব ভাবনা যে সঠিক নয়, বলছেন পুষ্টিবিদেরা। বরং ভোজ্য তেল খাওয়া একেবারে ছেড়ে দিলে এবং ফ্যাট জাতীয় খাবার বাদ দিলে তার ফল খারাপ হতে পারে, সতর্ক করছেন পুষ্টিবিদ কণিকা মলহোত্র। বরং হজম থেকে বিপাকহারে এর নেতিবাচক প্রভাব পড়তে পারে বলছেন তিনি। পুষ্টিবিদ শম্পা চক্রবর্তী বলছেন, ‘‘ভোজ্য তেল শরীরের জন্য অত্যন্ত জরুরি। একজন সুস্থ প্রাপ্তবয়স্ক পুরুষ দিনে ৩০ মিলিলিটার বা ৫-৬ চা-চামচ তেল রান্নায় খেতে পারেন। মহিলাদের ক্ষেত্রে সেটি ১৫ মিলিলিটার বা ৩ চা-চামচ পর্যন্ত হতে পারে। এটুকু তেল রান্নায় না থাকলে বরং নানা রকম শারীরিক সমস্যা হতে পারে।’’

তেল না খেলে কোন প্রভাব পড়বে শরীরে?

তেলে থাকে ফ্যাট। এই ফ্যাটের প্রয়োজন হয় ভিটামিন এ, ডি, ই, কে ভিটামিন শোষণে। ফ্যাটে দ্রবীভূত ভিটামিনগুলির সঠিক উপকার পেতে হলে স্বাস্থ্যকর ফ্যাট দৈনন্দিন খাবারে থাকা খুবই জরুরি। পুষ্টিবিদ কণিকা বলছেন, শরীরে একেবারেই তেল না গেলে বদহজম, পেটফাঁপার মতো সমস্যাও দেখা দিতে পারে। প্রভাব পড়তে পারে বিপাকহারে।

তেল বাদ দিলে দৈনন্দিন খাবারে ক্যালোরির পরিমাণ অনেকটাই কমবে। ওজন কমাতে তা কার্যকর হলেও খিদে, হরমোনের ভারসাম্যে এর প্রভাব পড়তে পারে।

ক্ষুদ্রান্ত্রে থাকা ‘মাইসেলস’ ফ্যাটে দ্রবণীয় ভিটামিন শোষণে সাহায্য করে। প্রয়োজনীয় ফ্যাটি অ্যাসিড শরীরে না পৌঁছলে মাইসেলসের কর্মক্ষমতা হ্রাস পায়। ভিটামিন সি শোষিত না হলে, তার প্রভাব পড়বে রোগ প্রতিরোধ ক্ষমতায়। ভিটামিন ডি-এর অভাবে হাড় দুর্বল হতে শুরু করবে।

আর কী প্রভাব পড়বে শরীরে?

ত্বক এবং চুল: ত্বকের লালিত্য কিন্তু ফ্যাট থেকেই আসে। তেল ফ্যাটি অ্যাসিডের জোগান দেয়। শরীর যদি প্রয়োজনীয় ফ্যাট না পায়, তা হলে ত্বক শুষ্ক হয়ে যাওয়ার পাশাপাশি জেল্লা হারাবে। চুলেও ক্ষেত্রেও তাই হবে।

কর্মক্ষমতা: বিভিন্ন কাজের জন্য শরীরকে শক্তি জোগাতেও ফ্যাটের ভূমিকা থাকে। তেল পাকাপাকি বাদ দিলে কাজে যেমন তার প্রভাব পড়বে মেজাজও বিগড়ে যেতে পারে। ফ্যাটি অ্যাসিডের অভাব হলে নিউরোট্রান্সমিটারে এর অভাব হতে পারে। তারই প্রভাব পড়তে পারে মেজাজে।

পুষ্টিবিদ শম্পা বলছেন, ‘‘তেল ছাড়াও শরীরে ফ্যাটি অ্যাসিডের জোগান দেওয়া সম্ভব। কেউ যদি খাবার তালিকায় কাঠবাদাম, আখরোট, মুরগির মাংস, ডিম রাখেন, তা হলে শরীর তার প্রয়োজনীয় ফ্যাট পেয়ে যাবে।’’ বাদাম ছাড়া বিভিন্ন ধরনের বীজ, সামুদ্রিক মাছে ওমেগা থ্রি ফ্যাটি অ্যাসিড পাওয়া যায়। এতে থাকে স্বাস্থ্যকর ফ্যাট, যা শরীরের জন্য উপযোগী।

তবে তিনি বার বার মনে করাচ্ছেন, তেল হিসাবে রান্নায় উদ্ভিজ্জ উৎস থেকে প্রাপ্ত ভোজ্য তেলই খাওয়া ভাল। যেমন সর্ষের তেল, সূর্যমুখীর তেল, অলিভ অয়েল, সয়াবিন তেল, রাইসব্র্যান অয়েল খাওয়া যেতে পারে।

Health Tips Diet Tips
Advertisement

আরও পড়ুন:

Share this article

CLOSE

Log In / Create Account

We will send you a One Time Password on this mobile number or email id

Or

By proceeding you agree with our Terms of service & Privacy Policy