Advertisement
E-Paper

মস্তিষ্কের জিনের গঠন বদলে দেয় অ্যালঝাইমার্স, দুই পুরনো ওষুধে রোগ জব্দ করার উপায় পেলেন গবেষকেরা

আমেরিকার গবেষকেরা তাঁদের এক গবেষণায় দাবি করেছেন, নতুন ওষুধ নয়, বরং পুরনো কিছু ওষুধে অ্যালঝাইমার্সের নিরাময় সম্ভব হতে পারে। সে ওষুধ দু’টি আবার ক্যানসারের চিকিৎসায় বহু বছর ধরে ব্যবহৃত হয়ে আসছে।

আনন্দবাজার ডট কম ডেস্ক

শেষ আপডেট: ১০ নভেম্বর ২০২৫ ১৮:০৩
New study identified two promising medicines that can reverse Alzheimer\\\\\\\\\\\\\\\'s Brain Damage

ভুলে যাওয়ার রোগ সারবে দু’টি পুরনো ওষুধেই। গ্রাফিক: আনন্দবাজার ডট কম।

বয়সকালে অ্যালঝাইমার্সে স্মৃতি চলে যাচ্ছে অনেকের। তালিকাটা দিন দিন লম্বা হচ্ছে। কমবয়সিরাও রয়েছেন এই তালিকায়। অ্যালঝাইমার্স ধরা পড়লে চিকিৎসকেরা স্পষ্টই বলে দেন যে, নিরাময়ের কোনও উপায় নেই। রোগটিকে ধরেবেঁধে রাখতে শুধু কিছু থেরাপি করা যায় মাত্র। অ্যালঝাইমার্স শুধু যে ভুলে যাওয়ার রোগ, তা তো নয়! এতে রোগীর স্বভাব, ব্যক্তিত্বেও বদল আসে। এই বদলকে নিয়ন্ত্রণে রাখার চিকিৎসা রয়েছে, শুধু রোগ নিরাময়ের উপায় এখনও অধরা। এই নিয়ে গবেষণাও চলছে। আমেরিকার গবেষকেরা তাঁদের এক গবেষণায় দাবি করেছেন, নতুন ওষুধ নয়, বরং পুরনো কিছু ওষুধে অ্যালঝাইমার্সের নিরাময় সম্ভব হতে পারে। সে ওষুধ দু’টি আবার ক্যানসারের চিকিৎসায় বহু বছর ধরে ব্যবহৃত হয়ে আসছে।

আমেরিকার অ্যালঝাইমার্স রিসার্চ অ্যাসোসিয়েশনের গবেষকেরা রোগটির চিকিৎসাপদ্ধতি খুঁজতে গিয়ে দু’টি ওষুধকে চিহ্নিত করেন— লেট্রোজ়োল এবং ইরিনোটিক্যান। এর মধ্যে লেট্রোজ়োল ওষুধটির ব্যবহার হয় স্তন ক্যানসারের চিকিৎসায় এবং ইরিনোটিক্যান ওষুধটির প্রয়োগ করা হয় ফুসফুস ও কোলন ক্যানসারের চিকিৎসায়। ওষুধ দু’টি আমেরিকার ফুড অ্যান্ড ড্রাগ অ্যাডমিনিস্ট্রেশনের অনুমোদন পেয়েছে। গবেষকেরা এই দু’টি ওষুধ ইঁদুরদের খাইয়ে দেখেছেন, তাদের উপর খুব ভাল কাজ করছে। স্মৃতিলোপ পেয়ে যাওয়া ইঁদুরদের মস্তিষ্কে ধীরে ধীরে বদল ঘটছে। মস্তিষ্কের জিনের বিন্যাসেও বদল এসেছে।

অ্যালঝাইমার্স রোগটিতে মস্তিষ্কে জিনের বিন্যাসে বদল আসে। এই বদলকে আবার স্বাভাবিক অবস্থায় ফিরিয়ে নিয়ে যাওয়া এক প্রকার অসম্ভব কাজ। তাই এর চিকিৎসাপদ্ধতিও জটিল। গবেষকেরা দেখেছেন, বিটা-অ্যামাইলয়েড নামক এক প্রকার প্রোটিন মস্তিষ্কে অধিক মাত্রায় জমতে জমতে ‘প্লাক’ তৈরি করে। এই অ্যামাইলয়েড প্লাকের কারণে স্নায়ুতে জট পাকিয়ে যায়। ফলে স্নায়ু থেকে সঙ্কেত আদানপ্রদানে বাধা আসে। এতে মস্তিষ্কের কোষগুলিরও ক্ষয় হতে থাকে। তাতেই স্মৃতির পাতা ধূসর হয়ে যায়।

অ্যালঝাইমার্স রোগের বিকাশে বিশেষ কিছু জিনের ভূমিকা গুরুত্বপূর্ণ। যদিও বেশির ভাগ ক্ষেত্রে বয়স বৃদ্ধির সঙ্গে রোগটি হয় এবং এর নির্দিষ্ট কারণ পুরোপুরি জানা নেই। তবে কিছু জিনের পরিবর্তন রোগের ঝুঁকি বৃদ্ধি করতে পারে। দেখা গিয়েছে, ‘এপিওই’ নামের একটি জিন এই রোগের জন্য অনেকাংশে দায়ী। জিনটিতে বদল ঘটলে মস্তিষ্কের ক্রিয়াকর্মই এলেমেলো হয়ে যায়। তখন নানা স্নায়বিক রোগের প্রাদুর্ভাব ঘটে।

সান ফ্রান্সিসকোর ইউনিভার্সিটি অফ ক্যালিফোর্নিয়া ও গ্ল্যাডস্টোন ইউনিভার্সিটির গবেষকেরা অ্যালঝাইমার্স প্রতিরোধে লেট্রোজ়োল এবং ইরিনোটিক্যান ওষুধ দু’টির কার্যকারিতা নিয়ে গবেষণা করছেন। তাঁরা দাবি করেছেন, ক্যানসারের চিকিৎসার জন্য তৈরি ওষুধ দু’টি মস্তিষ্কের প্রদাহ কমাতে সাহায্য করে। ঠিক যে যে কারণে জিনের রাসায়নিক বদল ঘটতে পারে বা মস্তিষ্কে প্রোটিন জমার মতো পরিস্থিতি তৈরি হয়, সেই কারণগুলিকে ঘটতে বাধা দেবে ওই দুই ওষুধ। যদিও মানুষের উপর ওষুধ দু’টির পরীক্ষা এখনও পুরোদমে শুরু হয়নি। সেটি হলে আরও বিস্তারিত ভাবে জানা যাবে।

Alzheimer's Disease Brain Diseases
Advertisement

আরও পড়ুন:

Share this article

CLOSE

Log In / Create Account

We will send you a One Time Password on this mobile number or email id

Or

By proceeding you agree with our Terms of service & Privacy Policy