সহজ পদ্ধতি। তাতেই ক্লান্তি দূর হবে সারা শরীর থেকে। গাঁটে গাঁটে ব্যথা কমবে, পেশির জোর বাড়বে, এমনকি দুশ্চিন্তাও উধাও হবে মাত্র মিনিট দশেকের মধ্যেই। এমনও কি সম্ভব? জাপানিরা শিখিয়ে দিয়েছেন এমন এক পদ্ধতি যা সারা শরীর থেকে টক্সিন দূর করতে পারে অল্প সময়ে। বাতের ব্যথায় নাজেহাল হোন বা মানসিক চাপে বিধ্বস্ত— জাপানিদের কৌশল মেনে চললে ওষুধ খাওয়ার প্রয়োজনই হবে না।
সহজ করে বললে পা ভিজিয়ে রেখেই যাবতীয় ব্যথাবেদনা দূর করার উপায় শিখিয়েছেন জাপানিরা। এটি জাপানের বহু প্রাচীন এক পদ্ধতি যার নাম ‘আশি-ইউ’। অর্থাৎ, ‘জাপানিজ় ফুট-সোক’। ঈষদুষ্ণ জলে পা ভিজিয়ে রাখতে হবে ১০-১৫ মিনিট। তাতেই সব সমস্যার সমাধান হবে। এখন মনে হতেই পারে, ব্যথা দূর করতে হালকা গরম জলে অনেকেই পা ভিজিয়ে রাখেন। তাতে আর নতুন কী আছে! কিন্তু জাপানি পদ্ধতিতে শুধু পা ভেজানোর কথা বলা হয়নি। এর সঙ্গে আরও কয়েকটি কাজও করতে হবে।
কী এই ‘আশি-ইউ’?
বড় গামলার মতো পাত্রে উষ্ণ জল ভরুন। এমন ভাবে পা রাখতে হবে যাতে গোড়ালি অবধি সম্পূর্ণ ডুবে থাকে। জলের তাপমাত্রা আরামদায়ক হওয়া উচিত। এই জলে সামান্য সৈন্ধব লবণ, রোজ়মেরি মেশাতে হবে। চাইলে ল্যাভেন্ডার অয়েলও মেশাতে পারেন। এ বার পা ভিজিয়ে রাখতে হবে ১০-১৫ মিনিট। ২০ মিনিট অবধিও পা ভেজাতে পারেন।
পা যত ক্ষণ জলে ডুবিয়ে রাখবেন তত ক্ষণ মন স্থির রাখতে হবে। ওই সময়ে কথা বলা বা মোবাইল দেখা চলবে না। হালকা কোনও মিউজিক বা গান চালিয়ে রাখতে পারেন। দুই হাত কোলের উপর রেখে গভীর ভাবে শ্বাস নিতে ও ছাড়তে হবে। অর্থাৎ, যত ক্ষণ পা ভিজবে ততটা সময়ে ডিপ ব্রিদিং করতে থাকুন। এতে মন স্থির হবে, মনঃসংযোগ বাড়বে। মানসিক চাপ ধীরে ধীরে কমতে থাকবে। মিনিট ১৫ বা ২০ পরে পা তুলে নিয়ে শুকনো তোয়ালে দিয়ে মুছে মোজা পরে নিন।
আরও পড়ুন:
উপকারিতা কী কী?
জাপানের এই পদ্ধতির উপকারিতা বিজ্ঞানসম্মত ভাবে প্রমাণিত। দেশের ন্যাশনাল ইনস্টিটিউট অফ হেল্থের গবেষণা বলছে, জাপানিজ় ফুট-সোক পদ্ধতির অনেক উপকারিতা রয়েছে। গরম জল রক্তনালিকে প্রসারিত করে, ফলে পা ও সারা শরীরে রক্ত সঞ্চালন ঠিকমতো হয়। এটি হার্টের স্বাস্থ্যের জন্য খুবই ভাল।
পায়ের স্নায়ু ও পেশির কার্যকারিতা বৃদ্ধি করে এই পদ্ধতি। ফলে যেমন পেশির সক্রিয়তা বাড়ে, তেমনই মানসিক চাপও কমে।
কম ঘুমের সমস্যায় যাঁরা ভুগছেন বা অনিদ্রার জন্য ওষুধ খেতে হয়, তাঁদের জন্য খুবই উপকারী এই পদ্ধতি। রাতে শোয়ার আগে মিনিট ১৫ এই ভাবে পা ভিজিয়ে রাখলে, ভাল ঘুমও হবে এবং ঘুমের সময়ে দুশ্চিন্তা এসে ঘিরে ধরবে না। মানসিক প্রশান্তি থাকবে।
উষ্ণতা লোমকূপকে খুলে দেয় এবং মৃদু ঘামের মাধ্যমে শরীর থেকে টক্সিন বা বর্জ্য পদার্থ বার করে দিতে সাহায্য করে।
অতিরিক্ত উদ্বেগ বা উৎকণ্ঠায় যাঁরা ভোগেন, মাঝেমধ্যেই ‘প্যানিক অ্যাটাক’ হয়, তাঁরা এই পদ্ধতিকে কাজে লাগিয়ে দেখতে পারেন। এতে মন ভাল থাকবে, উদ্বেগ অনেক কমে যাবে।