সারা বছর চা-কফি খেলেও শীতে যেন এই একই পানীয়ের স্বাদ দ্বিগুণ হয়ে যায়। দিনের শুরুতে অথবা সন্ধ্যা নামার পরে গরম কফিতে চুমুক দিয়ে বড়ই আরাম। কেতাদুরস্ত নামের ভিড়ে অনেকেই বুঝতে পারেন না, কোনটি তাঁর জন্য ভাল, স্বাস্থ্যের জন্য উপযুক্ত। লাতে, না কি এসপ্রেসো না কি ক্যাপুচিনো, অথবা কালো কফি? কোন কফি কতটা খাওয়া উচিত, সে বিষয়েও বিস্তারিত জেনে নেওয়া ভাল। সম্প্রতি ভিডিয়োয় সে কথা জানিয়েছেন পুষ্টিবিদ রেশমী রায়চৌধুরী।
যাঁরা রোজ কফি খান, তাঁদের জন্য পুষ্টিবিদের সতর্কতা, গ্যাসট্রাইটিস বা অম্বল হওয়ার প্রবণতা বেড়ে যেতে পারে। রেশমীর পরামর্শ, যাঁদের কফির নেশা রয়েছে, তাঁরা কিছু দিনের জন্য অভ্যাস পাল্টে ডিক্যাফ খেতে পারেন। তবে সব রকমের কফির সঙ্গে পরিচয় হয়ে যাওয়া ভাল। নিজের স্বাস্থ্যের সঙ্গে মানানসই কফিটি তা হলে বেছে নিতে সুবিধা হবে। ৬ রকমের কফির সম্পর্কে জানাচ্ছেন পুষ্টিবিদ।
কোন কফি খাবেন আপনি? ছবি: সংগৃহীত।
১. কালো কফি: এতে ক্যালোরির সংখ্যা শূন্য। কালো কফিতে অ্যান্টি-অক্সিড্যান্ট ভরপুর। হজমশক্তিকে উন্নত করতে পারে কালো কফি। অনেকেই শরীরচর্চা করার আগে কালো কফি খাওয়ার পক্ষপাতী, কারণ এতে শরীরের শক্তিবৃদ্ধি হয়। রেশমীর পরামর্শ, যদি চিনি ছাড়া কালো কফি খেতে ভাল না লাগে, তা হলে কফির মধ্যে দারচিনি গুঁড়ো ছড়িয়ে দিলে তা স্বাস্থ্যকরও হবে, মিষ্টিও হবে। শরীরচর্চা করার আধ ঘণ্টা আগে খাওয়া যেতে পারে কালো কফি।
২. এসপ্রেসো: ক্যালোরি থাকলেও তার পরিমাণ ন্যূনতম। এতে অ্যান্টি-অক্সিড্যান্ট ঘনীভূত অবস্থায় থাকে। কাজের সময়ে বা পড়াশোনার সময়ে মনোযোগের ক্ষমতা বৃদ্ধি করতে পারে এসপ্রেসো। এসপ্রেসো ঘনীভূত থাকে বলে ১-২টি শট নিলেই যথেষ্ট। তার বেশি খেলে বদহজম হয়ে যেতে পারে।
৩. ক্যাপুচিনো: এই কফির অর্ধেক অংশ জুড়ে থাকে এসপ্রেসো, এক-তৃতীয়াংশ থাকে ফ্যাটহীন দুধ, তার সঙ্গে ফেনাও থাকে ক্যাপুচিনোতে। এতে ক্যাফিনের ভারসাম্য বজায় থাকে। ক্যাপুচিনোয় প্রোটিন এবং ক্যালশিয়ামের পুষ্টিগুণ পাওয়া যায়। চিনি ছাড়া খাওয়ার পরামর্শ দিচ্ছেন পুষ্টিবিদ। তবে বেশি খেলে হজমের সমস্যায় ভুগতে হতে পারে।
৪. লাতে: এতে ভর্তি ক্যালোরি, তাই পেট দীর্ঘ ক্ষণ ভরা থাকে। তবে অনেকেরই বদহজম এবং পেটফাঁপার সমস্যা দেখা দেয়।
৫. কোল্ড ব্রিউ: যাঁরা দীর্ঘকালীন পেটের রোগে ভোগেন, তাঁদের জন্য এই ধরনের কফি উপকারী। এটি হজমের সমস্যা কমিয়ে দিতে পারে। তবে মিষ্টি ছাড়া খেলেই ভাল। প্রয়োজনে সুগারফ্রি ব্যবহার করা যেতে পারে। ক্যালোরি কম বলে ওজন কমানোর ডায়েটেও রাখতে পারেন। যদি শরীরচর্চা করার পর কোল্ড ব্রিউ খান, তা হলে এর মধ্যে অল্প পরিমাণে ইলেকট্রোলাইট মিশিয়ে নিতে পারেন। এতে যেটুকু শক্তিক্ষয় হয়েছে, তা ফিরে আসবে।
৬. ফিল্টার কফি: ভারতীয় কায়দায় বানানো ফিল্টার কফি মানসিক চাপ দূর করার ক্ষমতা রাখে। শীতের সময়ে শরীরের জন্য আরামদায়ক হতে পারে ফিল্টার কফি। এতে ক্যাফিন কম পরিমাণে থাকে বলে স্বাস্থ্যের জন্য উপকারী বলে মত পুষ্টিবিদের।
এর পর থেকে দোকানে গিয়ে কফি অর্ডার দেওয়ার সময়ে অথবা বাড়ির জন্য কেনার সময়ে, স্বাস্থ্যের কথা ভেবে, প্রয়োজন বুঝে সিদ্ধান্ত নেওয়া উচিত।