বয়সের সঙ্গে মস্তিষ্কের কর্মক্ষমতা কমে আসে। ফলে চিন্তাশক্তি, বা স্মৃতি সংরক্ষণের ক্ষমতাও কমে। অ্যালঝাইমার্স বা ডিমেনশিয়ার মতো রোগের ঝুঁকি বাড়ে। সম্প্রতি একটি গবেষণায় দেখা গিয়েছে, অবসাদ থেকেও মস্তিষ্কের সুস্থতার উপরে প্রভাব পড়তে পারে।
সম্প্রতি কেমব্রিজ ইউনিভার্সিটি প্রেসের তরফে ‘সাইকোলজিক্যাল মেডিসিন’ জার্নালে প্রকাশিত একটি গবেষণায় দেখা গিয়েছে, অবসাদ থেকে মস্তিষ্কের ‘এজিং’ দ্রুত হয়। অর্থাৎ প্রকৃত বয়সের তুলনায় মস্তিষ্কের ‘বয়স’ বাড়িয়ে দিতে পারে অবসাদ। শুধু তা-ই নয়, অবসাদ থেকে মস্তিষ্কের গঠনগত পরিবর্তনও ঘটতে পারে বলে দাবি করা হয়েছে ওই গবেষণায়।
৬৭০ জনের ব্রেন স্ক্যানিংয়ের মাধ্যমে গবেষণাটি করা হয়েছে। তার মধ্যে ২৩৯ জন অবসাদের শিকার। বাকিদের ক্ষেত্রে অবসাদের কোনও লক্ষণ ছিল না। যাঁদের অবসাদ ছিল, তাঁদের ক্ষেত্রে মস্তিষ্কের বিভিন্ন অংশে ‘স্থূলত্ব’ লক্ষ করা গিয়েছে। অর্থাৎ, সেই অংশগুলি আকারে মোটা হয়ে গিয়েছে। ফলে তাঁদের ক্ষেত্রে গাণিতিক সিদ্ধান্ত গ্রহণ, স্মৃতিরক্ষা, সংযমের মতো একাধিক কাজ প্রভাবিত হয়েছে।
আরও পড়ুন:
কেন ‘মোটা হয়’ মস্তিষ্ক?
অবসাদ থেকে মস্তিষ্কের গঠনে পরিবর্তন কী ভাবে হতে পারে, গবেষণায় সে দিকেও আলোকপাত করা হয়েছে। ডোপামিন, সেরোটোনিন বা গ্লুটামেটের মতো মস্তিষ্কে অজস্র নিউরোট্রান্সমিটার রয়েছে। দেখা গিয়েছে, অবসাদের সঙ্গে এই নিউরোট্রান্সমিটারগুলির কার্যক্ষমতা হ্রাস পায়। সমতা বজায় না থাকার জন্য তখন মস্তিষ্কের গঠনগত পরিবর্তন হতে শুরু করে।
অবসাদের ফলে সংক্রমিত অংশে কিছু জিন অবশ্য কর্মক্ষম থাকে বলেই দাবি করা হয়েছে গবেষণায়। সেই জিনগুলি প্রোটিন বাইন্ডিংয়ে সাহায্য করে। আবার অনেক সময়েই অবসাদ জিনগত কারণে হতে পারে। সে ক্ষেত্রে কিছু কিছু নির্দিষ্ট জিনও মানুষের অবসাদ বৃদ্ধি করতে পারে।
অবসাদ থেকে দূরে থাকতে
শারীরিক সুস্থতার পাশাপাশি মানসিক সুস্থতাও এখন চর্চিত বিষয়। তাই মনের মধ্যে অবসাদ দানা বাঁধলে অবশ্যই কোনও মনোবিদের সঙ্গে পরামর্শ করা উচিত। অনেক সময়েই ‘অবসাদ’কে শনাক্ত করা যায় না। তাই সমস্যা শুরু হলে পরিবার এবং নিকট বন্ধুদের সঙ্গে খোলা মনে কথা বলা উচিত।