ফ্যাটি লিভার একেবারে নির্মূল হয়ে যাবে? দুই ওষুধে তা সম্ভব বলে দাবি করেছেন ইউনিভার্সিটি অফ বার্সেলোনার গবেষকেরা। ওষুধ দু’টি নতুন নয়, বরং বহু দিনের চেনা। সেই ওষুধ দু’টিকেই নতুন ভাবে লিভারের চিকিৎসায় কাজে লাগানোর চেষ্টা করছেন গবেষকেরা। তাতে সাফল্যও এসেছে বলে দাবি।
একটি ওষুধ কোলেস্টেরল কমানোর, যার নাম পেমাফাইব্রেট। উচ্চ কোলেস্টেরলে ভুগছেন যাঁরা, তাঁদের জন্য এই ওষুধটি প্রেসক্রাইব করা হয়। অন্যটি, রক্তচাপ কমানোর ওষুধ টেলমিসারটান। এই ওষুধ দু’টি বাজারেও সহজলভ্য। এ বার এই দুই ওষুধকে নির্দিষ্ট অনুপাতে মিশিয়ে যে ওষুধ তৈরি করা হয়েছে, সেটি ফ্যাটি লিভার বা লিভার সিরোসিসের মতো জটিল লিভারের অসুখ সারাতে কাজে আসবে বলেই দাবি করা হয়েছে। ‘ফার্মাকোলজিক্যাল রিসার্চ’ জার্নালে এই গবেষণার খবর প্রকাশিত হয়েছে।
আরও পড়ুন:
পেট-কোমরে মেদ জমলে তা বাইরে থেকে বোঝা যায়। কিন্তু শরীরের ভিতরে লিভারে মেদ জমলে তা বোঝার কি আর সাধ্য আছে? ঠিক কোন সময় থেকে লিভারে মেদ জমতে শুরু করেছে, তা ঠাহর করতে পারেন না বেশির ভাগই। আর ব্যস্ত সময়ে স্বাস্থ্য পরীক্ষা করানোর কথা কত জনেরই বা মাথায় থাকে! তাই ফ্যাটি লিভার নামক রোগটি বেশ জাঁকিয়েই বসেছে ইদানীং সময়ে। সাম্প্রতিক সমীক্ষাতেও ভয় ধরানোর মতো রিপোর্টই পাওয়া গিয়েছে। দেশের কমবয়সিরাই নাকি সবেচেয়ে বেশি ভুগছেন লিভারের এই রোগে। সমীক্ষা বলছে, দেশের জনসংখ্যায় প্রাপ্তবয়স্কদের অন্তত ৩৮ শতাংশ ‘নন-অ্যালকোহলিক ফ্যাটি লিভার’-এর সমস্যায় ভুগছেন। শিশুরাও বাদ যাচ্ছে না। ফ্যাটি লিভার চুপিসাড়ে ডালপালা মেলে শেষে লিভারের আরও এক জটিল রোগ তৈরি করছে, যার নাম ‘মেটাবলিক ডিসফাংশন-অ্যাসোসিয়েটেড স্ট্যাটোটিক লিভার ডিজিজ়’ বা এমএএসএলডি। লিভারে যদি ১০ শতাংশের বেশি মেদ জমে যায়, তখন তা ধীরে ধীরে এই রোগের দিকে বাঁক নেয়। এই রোগ ফ্যাটি লিভারেরই একটি ধরন, তবে তার চেয়েও মারাত্মক। সহজে সারে না।
বার্সেলোনা ইউনিভার্সিটির গবেষক মার্তা অ্যালিগ্রেট তাঁর গবেষণাপত্রে লিখেছেন, ইঁদুরের উপর ওষুধ দু’টির প্রয়োগ করে সাফল্য পাওয়া গিয়েছে। দেখা গিয়েছে, দুই ওষুধের ‘কম্বিনেশন’ ফ্যাটি লিভার নির্মূল করতে সক্ষম। ওষুধ দু’টি ‘পিসিকে১’ নামক একটি প্রোটিনের ভারসাম্য ধরে রাখতে পারে যা লিভারে মেদ জমতে দেয় না। তবে মানুষের শরীরে প্রয়োগের পরে যদি একই রকম সাফল্য পাওয়া যায়, তবেই ওষুধ দু’টির কম্বিনেশন খুব তাড়াতাড়ি বাজারে নিয়ে আসা হবে বলে জানিয়েছেন গবেষকেরা।