চিনি নিয়ে জোর বিতর্ক। মিষ্টি এই উপাদান নাকি মোটেই উপকারী নয়, বলছেন চিকিৎসক থেকে পুষ্টিবিদেরা। তাঁদের পরামর্শ, সুস্থ থাকতে গেলে যথাসম্ভব কমিয়ে ফেলতে হবে চিনি খাওয়া। কারণ, সাদা চিনি শুধু ক্যালোরিই বাড়িয়ে দেয়। গুণের ছিটেফোঁটাও নেই এতে।
ঠিক সেই কারণে সাদা চিনি এড়িয়ে চলেন বলিউড বাদশা শাহরুখ খান থেকে বি-টাউনের বহু অভিনেতা-অভিনেত্রীই। কিন্তু চা থেকে কফি, তরকারি থেকে চাটনি— চিনি ছাড়া স্বাদ হবে কি? স্বাস্থ্যকর বিকল্প কোনটি হবে ব্রাউন সুগার না কি গুড়?
সাদা চিনি এবং ব্রাউন সুগারে তফাত কোথায়?
মূলত দু’টিই পাওয়া যায় আখের রস থেকে। রস থেকে প্রক্রিয়াকরণ এবং পরিশোধনের মাধ্যমে সাদা চিনি তৈরি হয়। সাদা চিনি হল শুধুই সুক্রোজ়। সাদা চিনি শরীরে দ্রুত শক্তি জোগানোর জন্য উপযোগী হলেও, এর মধ্যে আখের রসের কোনও পুষ্টিগুণই বর্তমান থাকে না। প্রক্রিয়াকরণের সময় বাদ চলে যায় ভিটামিন এবং খনিজ।
আরও পড়ুন:
ব্রাউন সুগারও তৈরি হয় আখের রস থেকেই। তবে এতে কিছুটা হলেও ভিটামিন এবং খনিজ বর্তমান থাকে। আখের রস থেকে হয় গুড়। তা থেকে প্রক্রিয়াকরণের মাধ্যমে সাদা চিনি এবং ব্রাউন সুগার। তবে গুড়ের কিছু গুণ রয়েছে ব্রাউন সুগারেই। এর রং বাদামি, স্বাদ এবং গন্ধও কিছুটা ভিন্ন। খুব স্বল্প পরিমাণে হলেও ব্রাউন সুগারে পটাশিয়াম, ক্যালশিয়াম এবং আয়রন থাকে।
কিন্তু গ্লাইসেমিক ইনডেক্সের বিচারে সাদা চিনি এবং ব্রাউন সুগারে তফাত কিছুই নেই। অর্থাৎ দুই ধরনের চিনিই রক্তে আচমকা শর্করার মাত্রা বাড়িয়ে দিতে পারে। ডায়াবেটিকদের জন্য বিশেষ ভাবে ক্ষতিকর।
গুড়ের সঙ্গে তফাত কি?
খেজুর বা আখের রস থেকে তৈর হয় গুড়। এটি ঘন তরল হয় আবার জমাট বাঁধা অবস্থাতেও মেলে। খাবারে মিষ্টত্ব আনার জন্য গুড়ও ব্যবহার করেন অনেকে। তবে পুষ্টিবিদেরা বলছেন, ক্যালোরির দিক থেকে গুড় আর চিনিতে বিশেষ কোনও ফারাক নেই। তবে গুড়ে কিছু ভিটামিন, খনিজ মেলে, যা এর পুষ্টিগুণ বাড়িয়ে দেয়।
পুষ্টিগুণে এগিয়ে কে?
সাদা চিনি অতিরিক্ত মাত্রায় পরিশোধিত। ক্যালোরি ছাড়া কোনও রকম পুষ্টিগুণই নেই এতে। অন্য দিকে, ব্রাউন সুগারে স্বল্প মাত্রায় খনিজ থাকলেও ক্যালোরি দুই চিনিতেই প্রায় সমান। গুড়ে ক্যালোরির পরিমাণ চিনির সমান। তবে এতে কিছুটা হলেও আয়রন, ক্যালশিয়াম মেলে। ১ টেবিল চামচ সাদা এবং ব্রাউন সুগারে ক্যালোরির পরিমাণ প্রায় ১৬ ক্যালোরি। ১ টেবিল চামচ গুড়ে মেলে ১৫-২০ ক্যালোরি। সুতরাং ওজন কমাতে চাইলে— মিষ্টি বাদ দেওয়া দরকার। যদিও পুষ্টিগুণের বিচারে একটু হলেও এগিয়ে থাকে গুড়।
পুষ্টিবিদেরা বলছেন, শরীরের কথা ভাবলে বরং মধু, স্টিভিয়া তুলনামূলক ভাল উপায় হতে পারে। ফলের প্রাকৃতিক মিষ্টত্বও খাবারে ব্যবহার করা যেতে পারে।