শরীরে অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ একটি প্রত্যঙ্গ হল কিডনি। শরীর থেকে দূষিত পদার্থ বার করে দেওয়াই তার কাজ। কিডনি বিকল হলে, তার প্রভাব পড়ে সমগ্র শরীরে। এমনকি, সময়ে চিকিৎসা না হলে মৃত্যু পর্যন্ত হতে পারে।
ইদানীং গতিময় জীবন, সঠিক সময় খাওয়াদাওয়া না করা, জল কম খাওয়া, ধূমপান, মদ্যপানের প্রবণতা— অনেক কারণই কিডনির অসুখের কারণ হয়ে দাঁড়াচ্ছে। বিশ্ব জুড়েই বাড়ছে এমন সমস্যা। চিকিৎসকেরা বলছেন, সমস্যা হল, কিডনির অসুখ অনেক সময় ধরা পড়তেই দেরি হয়ে যায়। কিডনি ক্ষতিগ্রস্ত হওয়ার পর ধীরে ধীরে তার লক্ষণ প্রকাশ পায়। অথচ সমস্যা যদি শুরুতেই চিহ্নিত করা যায়, চিকিৎসাও সহজ হয়ে যায়।
আরও পড়ুন:
‘ইন্টারন্যাশানাল সোসাইটি অফ নেফ্রোলজি’-র জার্নালের নির্দেশিকা এবং ন্যাশনাল লাইব্রেরি অফ মেডিসিনের জার্নালে প্রকাশিত ২০২৪ সালের একটি গবেষণাপত্রের ফল বলছে, কোনও মানুষের ওজন অনুযায়ী প্রস্রাবের পরিমাণ নির্ধারিত হয়। কেজি প্রতি ওজন পিছু ০.৫ থেকে ১ মিলিলিটার প্রস্রাব তৈরি হওয়ার কথা। কারও ওজন ৬০ কেজি হলে, প্রতি ঘণ্টায় ৩০-৬০ মিলিলিটার প্রস্রাব তৈরি হবে। দশ ঘণ্টায় সেই পরিমাণ হবে ৩০০-৬০০ মিলিলিটার।
কী ভাবে বাড়িতে সেই পরীক্ষা করবেন?
প্রস্রাব করার সূচক দেওয়া পাত্রের প্রয়োজন এ ক্ষেত্রে।
১০ ঘণ্টা ধরে কতটা প্রস্রাব উৎপাদন হচ্ছে, তা দেখতে হবে। বোতলের সাহায্যে তা মাপা যাবে।
ওজন অনুযায়ী সঠিক পরিমাণে প্রস্রাব তৈরি হচ্ছে কি না, এ ভাবে বোঝা যাবে।
মাসে অন্তত একটি দিন তা করা দরকার।
ডায়াবিটিস, হাইপারটেনশনের মতো সমস্যা থাকলে বা শারীরিক কারণে ব্যাথারোধক ওষুধ খেয়ে যেতে হলে কিডনিতে তার প্রভাব পড়ে। ফলে, এমন অসুখ থাকলে প্রস্রাবের এই সহজ পরীক্ষাটি মাসে এক থেকে দু’দিন করে নেওয়া যেতে পারে।
প্রস্রাব কম হলেই কি সতর্ক হওয়া প্রয়োজন?
এক বার পরীক্ষায় যদি দেখা যায় প্রস্রাবের পরিমাণ কম হচ্ছে, তা হলে কিছু দিন পর আবার সেই পরীক্ষা করা প্রয়োজন। কিডনির অসুখ, ঝুঁকি নিয়ে কাজ করা সংস্থা ‘ন্যাশনাল কিডনি ফাউন্ডেশন’-এর তথ্য বলছে, মূত্রের পরিমাণ কমে যাওয়া, কিডনির সমস্যার অন্যতম লক্ষণ।
আর কোন লক্ষণ দেখলে সতর্ক হওয়া দরকার?
· পরিশ্রম ছাড়াও ক্লান্তিবোধ
· ওজম কমা এবং খিদে কমে যাওয়া
· চোখের চারপাশে, পায়ে ফোলা ভাব
· মূত্রের বর্ণ এবং গন্ধ বদল, প্রস্রাবের সময় জ্বালা
· প্রস্রাবে রক্তের উপস্থিতি