Advertisement
E-Paper

৫ অভ্যাস বর্ষায় শিশুদের পেটের রোগ, টাইফয়েডের ঝুঁকি কমাবে, শুধু মানতে হবে কয়েকটি নিয়ম

বর্ষায় পেটের অসুখ, টাইফয়েড, আন্ত্রিকের ঝুঁকি বেড়ে যায় কয়েকগুণ। তবে সহজ কয়েকটি অভ্যাস রপ্ত করতে পারলে এমন অসুখ এড়ানো মোটেই কঠিন নয়। কোন অভ্যাস করা জরুরি?

আনন্দবাজার ডট কম ডেস্ক

শেষ আপডেট: ১৭ জুলাই ২০২৫ ১৪:১৫
সঠিক অভ্যাস রোগবালাই থেকে শিশুকে দূরে রাখতে সাহায্য করবে।

সঠিক অভ্যাস রোগবালাই থেকে শিশুকে দূরে রাখতে সাহায্য করবে। ছবি: সংগৃহীত।

বর্ষাকাল মানেই অসুখের মরসুম। এই সময় বাতাসে আর্দ্রতা বেড়ে যায়। স্যাঁতসেঁতে আবহাওয়ায় রোগ-জীবাণুর বাড়বৃদ্ধি হয় দ্রুত। ফলে, জলবাহিত অসুখের ভয় থাকেই, থাকে মশাবাহিত রোগের ঝুঁকিও। তেমনই একটি অসুখ হল টাইফয়েড। বর্ষাকালে টাইফয়েড, আন্ত্রিক মাথাচাড়া দিয়ে ওঠে।

চিকিৎসকেরা বলছেন, বর্ষায় রাস্তার খাবার থেকে ছড়াতে পারে অসুখ। নোংরা হাতে খাওয়া, অপরিচ্ছন্ন জায়গা থেকে খাবার কিনে খাওয়ার প্রবণতা পেটের অসুখের সমস্যা বাড়িয়ে দেয় কয়েক গুণ। বড়রা এই ব্যাপারে সতর্ক হলেও, শিশুদের বোঝানো কঠিন। কারণ, রঙিন ঠান্ডা পানীয়, বরফের গোলা, আইসক্রিমের দিকে তাদের নজর থাকে সব সময়েই। আর শিশুরা যে সব সময় হাত ধুয়ে খাবে, তা নয়। কলকাতার এক হাসপাতালের চিকিৎসক অরিন্দম বিশ্বাস বলছেন, ‘‘বর্ষার মরসুমে রাস্তার বরফ মেশানো জল, শরবত, আইসক্রিম এগুলো এড়িয়ে চলতেই হবে। কারণ, এই সমস্ত খাবারে টাইফয়েডের ব্যাক্টেরিয়া থাকার সম্ভাবনা অনেক বেশি। সুস্থ থাকতে হলে হাত ধোয়ার অভ্যাস করতেই হবে।’’ সালমোনেল্লা টাইফি নামে এক প্রকার ব্যাক্টেরিয়ার সংক্রমণেই টাইফয়েড হয়। চিকিৎসকের মতে, রাস্তার খোলা খাবার, কাটা ফল, কাঁচা স্যালাড বেশি খেলে এই রোগ হওয়ার আশঙ্কা থাকে। শুধু শিশু নয়, বড়দেরও এই ব্যাপারে সতর্ক হওয়া উচিত। পরিশোধিত জল বা ফোটানো জল ছাড়া রাস্তার জল একেবারেই খাওয়া উচিত নয়।

মুম্বইয়ের একটি হাসপাতালের পেটের রোগের চিকিৎসক পবন ধোবল বলছেন, ‘‘বর্ষায় খাবার জলের সঙ্গে বৃষ্টির জল বা দূষিত জল মিশে যাওয়ার সম্ভাবনা থাকে। তার উপর স্যাঁতসেঁতে আবহাওয়ায় খাবার দ্রুত নষ্ট হয়ে যেতে পারে। সেই কারণে রাস্তার খাবার খাওয়া এই সময় অনেক বেশি ঝুঁকির হয় এই মরসুমে।’’

কোন অভ্যাসে পেটের অসুখ এড়ানো যাবে?

১। সব সময় সঙ্গে জল রাখা দরকার। জল ফুটিয়ে খাওয়া ভাল। বাড়িতে জল পরিশোধনের যন্ত্র থাকলে, পরিশোধিত জলও খাওয়া যেতে পারে। বাইরে জল এড়ালেই বিপদ কমবে।

২। বর্ষায় রাস্তার খাবার বাদ দিলেও পেটের অসুখের ঝুঁকি কমবে। কাটা ফল, পানীয়, ভাজাভুজি— যে কোনও খাবারই এই সময় এড়িয়ে চলা ভাল।

৩। বাড়িতেও খাওয়ার বিষয়ে সতর্কতা জরুরি। যে কোনও ফল খুব ভাল করে ধুয়ে খেতে হবে। কাঁচা স্যালাড এবং সব্জি খাওয়ার বিষয়েও সতর্কতা জরুরি। খুব ভাল করে ধোয়ার পাশাপাশি সব্জি অল্প একটু ভাপিয়ে নিলে সংক্রণের ঝুঁকি কমবে। সামুদ্রিক খাবারও এই মরসুমে এড়িয়ে চলা ভাল।

৪। রাস্তাঘাট হোক, বাড়ি কিংবা রেস্তরাঁ—খাওয়ার আগে সাবান দিয়ে হাত ধোয়া জরুরি। পেটের অসুখ দূরে রাখার অন্যতম শর্ত এটিই। শুধু বর্ষাকাল নয়, এই অভ্যাস সব সময়ের জন্যই ভাল।

৫। বর্ষাকালে খুব তাড়াতাড়ি খাবার নষ্ট হয়। কৌটোর ঢাকা আলগা হলেই মশলাপাতি মিইয়ে যায়। পোকামাকড়, খাবারে ছত্রাক সংক্রমণের ঝুঁকি বাড়ে। তাই পরিষ্কার পাত্রে বা ফ্রিজে রাখতে হলে বায়ুনিরোধী কৌটোয় খাবার রাখা ভাল। পেটের অসুখ বা টাইফয়েড এড়ানোর শর্ত হল পরিচ্ছন্নতা।

রোগ প্রতিরোধ ক্ষমতা ভাল হলে ছোটখাটো সংক্রমণ শরীরকে কাবু করতে পারে না। সে জন্য দরকার উপযুক্ত পুষ্টি। ভিটামিন সি সমৃদ্ধ ফল, নানা রকম সব্জি পাতে রাখা দরকার। রসুন, আদা, হলুদ— হেঁশেলের নানা রকম মশলাপাতির হরেক গুণ। এগুলিও খাওয়া দরকার।

অরিন্দম বিশ্বাস বলছেন, ‘‘এই মরসুমে টানা ৩-৪ দিন জ্বর থাকলেই সতর্ক হওয়া দরকার। ডায়েরিয়া, কোষ্ঠকাঠিন্য—দু’টি কিন্তু টাইফয়েডের লক্ষণ হতে পারে। তবে এ নিয়ে ভয়ের কিছু নেই। অনেক রকম ওষুধ রয়েছে। পেটের অসুখ হোক বা জ্বর হলে বেশি সময় নষ্ট না করে চিকিৎসকের পরামর্শ নেওয়া দরকার।’’

Typhoid Monsoon Diseases Health Tips
Advertisement

আরও পড়ুন:

Share this article

CLOSE

Log In / Create Account

We will send you a One Time Password on this mobile number or email id

Or

By proceeding you agree with our Terms of service & Privacy Policy