বাসে দাঁড়িয়ে আছেন। আচমকাই মনে হবে চারদিক দুলে উঠল। ঘুম থেকে ওঠার সময়ে দেখবেন, চারপাশটা বনবন করে ঘুরছে। তার পর আরও খানিক ক্ষণ ঝিমুনি ভাব। মনে হবে মাথার উপর কয়েক মণের বোঝা চাপিয়ে দিয়েছে কেউ। ঘাড় নিচু করে মোবাইল দেখার সময়ে মনে হবে, মাথাটা ঘুরেই চলেছে। মাথা বুঝি আর সোজা করাই যাবে না। এমনই সব সমস্যা দেখা দিতে থাকলে চিকিৎসকেরা ভার্টিগো বলেই সন্দেহ করেন। রোগটা চেপে বসলে শুধু মাথা ঘোরা নয়, হাঁটাচলা করার সময়ে শরীরের ভারসাম্যও টালমাটাল হয়ে যাবে। রক্তচাপ যখন তখন লাফিয়ে উঠবে আবার তরতরিয়ে নেমে যাবে। এমন রোগে ওষুধেই ভরসা রাখেন বেশির ভাগই। তবে ব্যায়ামেও যে ভার্টিগো কমে, সে ধারণা অনেকেরই নেই।
রক্তচাপ কম, তার উপরে ভার্টিগো থাকলে সব ব্যায়াম করা যায় না। শৌখিন যন্ত্রপাতি দিয়ে ব্যায়াম, ওজন তুলে ব্যায়াম করাই যাবে না সে ভাবে। আবার সব রকম যোগাসনও অভ্যাস করতে পারবেন না। কারণ, মাথা ঝোঁকালেই তা ঘুরতে শুরু করবে। তা হলে উপায়?
বিশেষ কিছু ব্যায়াম আছে, যা ভার্টিগোর জন্যই উপযুক্ত। রক্তচাপ যখন তখন নেমে যায় যাঁদের, তাঁরাও দিব্যি করতে পারেন। শুধু শিখে নিতে হবে সঠিক পদ্ধতি।
ব্র্যান্ড-ডেরফ হ্যবিচুয়েশন ব্যায়াম
ভার্টিগোর সমস্যা দূর হবে সহজ কিছু ব্যায়ামে। ছবি: এআই।
ভার্টিগোর সমস্যা কমানোর খুব কার্যকরী ব্যায়াম এটি। পদ্ধতিও সহজ। শুরুতে ম্যাটের উপরে সুখাসনে বসুন। দুই হাত থাকবে কোলের উপরে। খাটের উপর পা ঝুলিয়েও বসতে পারেন। শ্বাসপ্রশ্বাস স্বাভাবিক ভাবে নিতে হবে। এর পর ধীরে ধীরে পাশ ফিরে শুয়ে পড়ুন। ওই অবস্থাতেই মাথা ঘুরিয়ে সিলিংয়ের দিকে তাকান। অর্থাৎ, মাথা ৪৫ ডিগ্রি কোণে থাকবে। দৃষ্টি স্থির করে ওই ভাবেই থাকুন অন্তত ৩০ সেকেন্ড। আবার সোজা হয়ে বসুন। শুরুতে যদি বাঁ দিকে পাশ ফিরে শুয়ে থাকেন, তা হলে এ বার ডান দিকে পাশ ফিরে শুয়ে পড়ুন। একই পদ্ধতিতে বাকিটা করুন। এই ভাবে রোজ তিন থেকে পাঁচ সেট অভ্যাস করুন।
আরও পড়ুন:
থাম্ব ট্র্যাকিং
এই ব্যায়ামে মাথা ঘোরা, দৃষ্টি ঝাপসা হয়ে আসার মতো সমস্যা কমবে। পাশাপাশি, শরীরের ভারসাম্যও ঠিক থাকবে। সোজা হয়ে বসে যে কোনও একটি বস্তুর দিকে দৃষ্টি নিবদ্ধ করুন। দেওয়ালে টাঙানো কোনও ছবি বা ঘরের কোনও বস্তুর দিকে একদৃষ্টিতে চেয়ে থাকুন। এ বার দৃষ্টি সে ভাবেই স্থির রেখে ধীরে ধীরে মাথা ডান দিক-বাঁ দিক এবং উপর-নীচে ঘোরাতে থাকুন। মাথা ঘোরানোর সময়েও আপনার চোখ যেন ওই বস্তুর দিকেই স্থির থাকে।
ব্যালান্স ট্রেনিং
সোজা একটি লাইনে হাঁটতে হবে। যখন হাঁটবেন, তখন এক পায়ের আঙুল অন্য পায়ের গোড়ালিতে যেন স্পর্শ করে। শুরুতে সাপোর্ট নিয়ে হাঁটবেন। পরে অভ্যাস হয়ে গেলে কোনও কিছু না ধরেই হাঁটতে পারবেন। এতে হাঁটাচলার সময়ে শরীরের ভারসাম্য ঠিক থাকবে।