প্রস্রাবের সময়ে জ্বালা-যন্ত্রণা বা ঘন ঘন প্রস্রাবের বেগ মানেই মূত্রনালির সংক্রমণ হবে, তা নয়। রাতের বেলা বারে বারে প্রস্রাবের বেগ এলে ডায়াবিটিস ভেবেও ভুল করেন অনেকে। এই সব লক্ষণ দীর্ঘ সময় ধরে দেখা দিতে থাকলে সতর্ক হতে হবে। চিকিৎসকেরা জানাচ্ছেন, প্রস্টেট ক্যানসারের উপসর্গ সকলের ক্ষেত্রে একরকম হয় না। অনেক সময়ে পিঠ-কোমর ও নিতম্বের নিদারুণ যন্ত্রণাও ক্যানসারের লক্ষণ হতে পারে। কোন কোন উপসর্গ এড়িয়ে যাওয়া উচিত নয়, তা জেনে রাখা ভাল।
‘ন্যাশনাল ইনস্টিটিউট অফ হেল্থ’ থেকে প্রকাশিত গবেষণাপত্রে লেখা হয়েছে, ৪০ থেকে ৫০ বছর বয়সের মধ্যে এই ক্যানসার হওয়ার ঝুঁকি সবচেয়ে বেশি থাকে। এই রোগের প্রাথমিক লক্ষণগুলি সম্পর্কে সতর্ক থাকা আবশ্যিক। বিশেষত, পঞ্চাশ পেরিয়ে গেলেও পরিবারে এই রোগের ইতিহাস থাকলে সতর্ক হতেই হবে। বার বার প্রস্রাব পাওয়া প্রস্টেট ক্যানসারের লক্ষণ হতে পারে। বিশেষত, রাতের দিকে বার বার মূত্রত্যাগের প্রবণতা বেশি হয়। প্রস্রাব ধরে রাখতে না পারা কিংবা প্রস্রাব পেলে ঠিক ভাবে মূত্রত্যাগ করতে না পারা এই রোগের আরও একটি লক্ষণ। মূত্রত্যাগের সময়ে ব্যথা হওয়া মোটেই ভাল লক্ষণ নয়। মূত্রত্যাগের সময়ে ব্যথা বা জ্বালা হওয়া, প্রস্রাবের সঙ্গে রক্ত বার হলে সতর্ক হতে হবে।
আরও পড়ুন:
প্রস্টেট ক্যানসারের আরও একটি লক্ষণ হল পিঠ-কোমর ও নিতম্বে যন্ত্রণা। ক্যানসার কোষ এত দ্রুত বিভাজিত হতে থাকে যে, তা মেরুদণ্ড অবধি ছড়িয়ে পড়ে। তখন পিঠ ও পেলভিক এলাকায় ব্যথা শুরু হয়। হাড় দুর্বল হতে থাকে। হাড় ভঙ্গুরও হয়ে যায়। তাই পেলভিক অঞ্চলে ব্যথা যদি দীর্ঘমেয়াদি হয়ে যায়, তা হলে চিকিৎসকের কাছে যেতেই হবে। কিছু পরীক্ষা করিয়ে নেওয়া খুব জরুরি। প্রথমেই যে পরীক্ষাটি করাতে হবে তা হল, আলট্রা সোনোগ্রাফি (ইউএসজি)। এই পরীক্ষায় প্রস্টেটের মাপ বোঝা যাবে, এর পর ট্রান্স-রেক্টাল আন্ডার সাউন্ড (ট্রাস) টেস্ট করাতে হবে। প্রস্টেট ক্যানসার চিহ্নিত করার আরও একটি পরীক্ষা হল ‘প্রস্টেট-স্পেসিফিক অ্যান্টিজেন টেস্ট’। পিএসএ অ্যান্টিজেনের মাত্রা প্রতি মিলিলিটার রক্তে যদি ৪.০ ন্যানোগ্রামের বেশি হয়, তা হলে অস্বাভাবিক বলে ধরে নেওয়া হয়। সে ক্ষেত্রে বায়োপসি করে ক্যানসার কোষের বিভাজন হচ্ছে কি না, তা দেখতে হবে।