সকালের তাড়াহুড়ো যতই থাক, মাত্র পাঁচ মিনিটেই এক গ্লাস স্মুদি খেয়ে ফেলা যায়। এর উপকারিতাও কম নয়। বানানোও সহজ। ফাইবার, প্রোটিন, ভিটামিন, খনিজ, স্বাস্থ্যকর ফ্যাট সবই একসঙ্গে পাওয়া যায় এতে। সে কারণে ওজন কমানোই হোক বা স্বাস্থ্যের খেয়াল রাখা— স্মুদি খাওয়ার চল বাড়ছে।
স্বাস্থ্যকর খাবারের তালিকাতেই পড়ে স্মুদি। তবে উপকরণের সামান্য ভুলেই, ওজন কমানোর জন্য যে স্মুদিতে চুমুক দেওয়া হচ্ছে সেই পানীয়ই হয়ে উঠতে পারে ওজনবৃদ্ধির কারণ। কী ভাবে সেই ভুল এড়াবেন?
ইয়োগার্ট: ইয়োগার্ট পেটের জন্য অত্যন্ত ভাল। অন্ত্রের উপকারী ব্যাক্টেরিয়ার সংখ্যা বৃদ্ধিতে সাহায্য করে এতে থাকা প্রোবায়োটিক। স্মুদিতে ব্যবহারের আগে জেনে নিন, যে ইয়োগার্ট বেছে নিচ্ছেন তাতে চিনি আছে কি না। অনেক সময় বাজারচলতি ইয়োগার্টে স্বাদের জন্য চিনির ব্যবহার হয়। স্মুদিতে মিষ্টি রসালো ফল ব্যবহার করলে, শর্করা নিয়ে বেশি সতর্ক হওয়া দরকার। ইয়োগার্টের বদলে ঘরে পাতা টক দই ব্যবহার করা যায় কি না, দেখতে পারেন।
কৌটোজাত ফল: ইদানীং কৌটোজাত, হিমায়িত ফলের ব্যবহার বাড়ছে। এর কিছু সুবিধাও যেমন আছে, তেমনই অসুবিধাও আছে। কৌটোজাত ফল কেটে বিক্রি হয় বলে ছাড়ানো, কাটাকুটির সমস্যা থাকে না। তাড়াহুড়োয় স্মুদিতে চট করে দিয়ে ফেলা যায়। তবে কৌটোজাত ফলে অনেক সময় সিরাপ ব্যবহার হয়, যাতে চিনি থাকে। হিমায়িত ফল দীর্ঘ দিন ভাল রাখার জন্য প্রক্রিয়াজাত রাসায়নিক ব্যবহার হয়। সেটিও স্বাস্থ্যর পক্ষে ভাল নয়। ফলে ওজন কমাতে চাইলে স্মুদিতে টাটকা এবং কম ক্যালোরিযুক্ত ফল ব্যবহার করাই ভাল।
আরও পড়ুন:
প্রোটিন পাউডার: স্মুদিতে প্রোটিন যোগ করতে বাজারচলতি প্রোটিন পাউডার মেশান? অনেক ধরনের প্রোটিন পাউডারে উচ্চ মাত্রার ক্যালোরি, চিনি থাকে। বাজারচলতি প্রোটিনের বদলে উদ্ভিজ্জ প্রোটিন, বিভিন্ন বীজ ব্যবহার করা যেতে পারে।
দুধ: স্মুদিতে দুধ দিচ্ছেন। তবে সেটি কিন্তু ফ্যাটবিহীন হওয়া জরুরি। দুধ সুষম খাবারের তালিকায় পড়ে। প্রচুর ভিটামিন, খনিজে যেমন এতে মেলে, তেমনই পাওয়া যায় ফ্যাটও। ঘন দুধে স্মুদির স্বাদ বাড়লেও ওজন কমানোর পক্ষে তা সহায়ক নয়। অনেক সময় দুধ হজমেও সমস্যা হয়। দুধ ব্যবহার করলে তা ফ্যাটমুক্ত হওয়া জরুরি।
ফল, বাদাম: ওজন কমানোর জন্য স্মুদি খেলে ফল, বাদাম ব্যবহারেও সচেতন হওয়া দরকার। কলা, আমে ক্যালোরির পরিমাণ আপেল, পেঁপের চেয়ে বেশি থাকে। কলা, আম উপকারী অবশ্যই, তবে ওজন কমাতে গেলে বেরি জাতীয় ফল, আপেল-সহ কম ক্যালোরি যুক্ত ফল বেছে নিতে পারেন। স্মুদিতে খেজুর, বাদাম যোগ করা হয়। খেজুরে অনেকটাই ক্যালোরি মেলে। বাদামে হেলদি ফ্যাট পাওয়া যায়। তবে তার মাপ নির্দিষ্ট হওয়া দরকার। প্রচুর ড্রাই ফ্রুটস, একগাদা খেজুর দিয়ে স্মুদি খেলে, সারা দিনে যদি ক্যালোরির মাপ ঠিক করা না যায় তা হলে ওজন কমাতে তা সহায়ক হবে না।
উপকরণের মাপ: স্বাদ এবং স্বাস্থ্যের কথা ভেবে কেউ স্মুদিতে বাদামের মাখন, হ্যাজেলনাট স্প্রেড, ম্যাপেল সিরাপ, মধুও ব্যবহার করেন। তবে সেই সব উপকরণের ঢালাও ব্যবহারে ক্যালোরি নিয়ন্ত্রণ করা সমস্যার হতে পারে। স্মুদিতে কোন উপাদান কত দেবেন, সেটাও জরুরি।