হার্টের রোগ এখন যে কোনও বয়সেই হয়। কিছু গবেষণায় এ-ও দেখা যাচ্ছে যে, অল্পবয়সিদের অতিরিক্ত স্ক্রিনটাইম বা মোবাইল, টিভি, ল্যাপটপ থেকে চোখ না সরানোর অভ্যাস হার্টের রোগের ঝুঁকি বাড়িয়ে দিচ্ছে। বড়দের জীবন যাপনের নানা সমস্যার কারণে কোলেস্টেরল, মেদ বৃদ্ধি এবং উচ্চ রক্তচাপের মত সমস্যাও বাড়ছে। যা হার্টের রোগের ঝুঁকি বাড়িয়ে দিচ্ছে আরও। এমতাবস্থায় হার্টের স্বাস্থ্য ভাল রাখতে অনেকেই খাওয়াদাওয়ায় রাশ টানছেন। কেউ বা ওজন কমানোর চেষ্টা করছে জিমে গিয়ে শরীরচর্চা করে। এ ব্যাপারে সাহায্য করতে পারে কয়েকটি যোগাসনও। যা নিয়মিত করলে হার্টের স্বাস্থ্য ভাল থাকার পাশাপাশি হার্টের ক্ষমতা বৃদ্ধিও হবে।
বৃক্ষাসন
শারীরিক ও মানসিক ভারসাম্য রক্ষা করে বৃক্ষাসন। তাছাড়া মনকে একমুখী করতে এবং স্নায়ুতন্ত্রকে শান্ত রাখতেও সাহায্য করে। মানসিক স্থিরতা হার্টের স্বাস্থ্য ভাল রাখার জন্য অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ। এই আসন মানসিক উদ্বেগ ও উৎকণ্ঠা কমায়। মন শান্ত থাকলে এবং মানসিক চাপ নিয়ন্ত্রণে থাকলে তার সুফল পায় হার্ট এবং শরীর। তাছাড়া এই আসন রক্ত সঞ্চালনেও সাহায্য করে।
কী ভাবে করবেন: ১. সোজা হয়ে দাঁড়ান। পা দুটো একসঙ্গে জোড়া করে রাখুন, হাত শরীরের দু'পাশে স্বাভাবিক রাখুন। ২. এবার ডান পা ভাঁজ করে ডান পায়ের পাতাটি বাঁ উরুর ভেতরের দিকে যতটা উপরে সম্ভব রাখুন। ৩. শরীরের ভারসাম্য বজায় রেখে, ধীরে ধীরে দু'হাত মাথার উপরে নমস্কারের ভঙ্গিতে নিয়ে যান। ৪.এই অবস্থানে ৩০ সেকেন্ড থেকে ১ মিনিট থাকুন। দৃষ্টি সামনে কোনও একটি বিন্দুতে স্থির রাখুন। শ্বাস-প্রশ্বাস স্বাভাবিক রাখুন। ৫.এর পরে হাত নামিয়ে, পা সোজা করে আরাম করুন। আবার বাঁ পা দিয়ে একই প্রক্রিয়া পুনরাবৃত্তি করুন।
কত ক্ষণ করবেন: প্রতি পায়ে ১ মিনিট করে মোট ২ মিনিট।
আরও পড়ুন:
অর্ধ মৎস্যেন্দ্রাসন
বুকের পেশি প্রসারিত হয় এই আসন করলে। যা ফুসফুসের ক্ষমতা বৃদ্ধি করে। ফলে শরীরের প্রতিটি কোষে বিশুদ্ধ অক্সিজেনের সরবরাহ বাড়ে। ফুসফুসের কার্যকারিতা বৃদ্ধি পেলে হৃদপিণ্ডকে কম পরিশ্রম করতে হয়, যা হার্ট সুস্থ রাখতে সাহায্য করে।
কী ভাবে করবেন: ১.পা সোজা করে সামনে ছড়িয়ে বসুন। ২. বাঁ পা ভাঁজ করে ডান নিতম্বের পাশে রাখুন এবং ডান পা ভাঁজ করে বাঁ হাঁটুর উপর দিয়ে এনে বাঁ পায়ের বাইরে মেঝের উপর রাখুন। ৩. ডান হাত পিঠের পেছনে মেঝের উপর রাখুন। বাঁ হাত দিয়ে ডান হাঁটুকে ধরে ডানদিকে শরীর ঘোরান, অথবা বাঁ হাত ভাঁজ করে ডান হাঁটুর উপর দিয়ে এনে ডান পায়ের আঙ্গুল ধরুন। ৪. ঘাড় ঘুরিয়ে ডান কাঁধের উপর দিয়ে পেছন দিকে তাকান। ৩০ সেকেন্ড থেকে ১ মিনিট ওই ভাবেই থাকুন।
এরপর অন্য দিকে একই প্রক্রিয়া পুনরাবৃত্তি করুন।
কত ক্ষণ করবেন: প্রতি দিকে ৩০ সেকেন্ড থেকে ১ মিনিট।
আরও পড়ুন:
শবাসন
উপকারিতা: এই আসন করলে শরীরের পেশি এবং স্নায়ু শিথিল হয়। ফলে মানসিক চাপ কমে। কমে রক্তচাপও। দুটি বিষয়ই হার্টের স্বাস্থ্যে প্রভাব ফেলে। বিশেষ করে উচ্চ রক্তচাপ হার্টের জন্য ক্ষতিকর, তাই শবাসন হার্ট সুস্থ রাখার ক্ষেত্রে একটি উপকারী আসন। নিয়মিত শবাসন করলে হৃৎস্পন্দন নিয়ন্ত্রণে আসে।
কী ভাবে করবেন: ১. চিৎ হয়ে শুয়ে পড়ুন। পা দুটো সামান্য ফাঁক করে রাখুন। ২. হাত দুটো শরীরের থেকে একটু দূরে রাখুন, হাতের তালু আকাশের দিকে থাকবে। চোখ বন্ধ করুন। ৩. শরীরের প্রতিটি অঙ্গকে সম্পূর্ণরূপে শিথিল করুন। মনকে শান্ত রেখে শ্বাস-প্রশ্বাসের উপর মনোযোগ দিন। এই আসনে বিশ্রাম নিন।
কত ক্ষণ করবেন: সব রকম শরীরচর্চা এবং যোগাসন করা শেষ হলে ১০-১৫ মিনিট।