শপিং মলে গিয়ে কাঁচা আনাজ বা প্যাকেটজাত খাবার কেনার খুব চল হয়েছে এখন। বাজারে গিয়ে দরদাম করে কেনার সময় অনেকেরই নেই। সে ক্ষেত্রে চটজলদি প্যাকেটবন্দি জিনিসপত্র কিনে নেওয়া অনেক সহজ। সে আনাজ থেকে ডাল, মশলা, বিস্কুট-চিপ্স থেকে ছোটদের হেল্থ ড্রিঙ্ক— ব্র্যান্ডের নাম ও দাম দেখেই কিনে নিচ্ছেন বেশির ভাগই। কিন্তু পণ্যগুলো আদৌ স্বাস্থ্যসম্মত কি না, তা নজর করা হয় না। অধিকাংশ প্যাকেটজাত খাবারে নানা ধরনের প্রিজ়ারভেটিভ থাকে, যেগুলো শরীরের জন্য ক্ষতিকর। দীর্ঘ দিন ধরে এ জাতীয় খাবার খেতে থাকলে শরীরে নানা রোগ বাসা বাঁধবে।
কিন্তু সমস্যা হচ্ছে, সাধারণ মানুষ বুঝবেন কী ভাবে, প্যাকেটের খাবারে থাকা কোন উপকরণটি ভাল, আর কোনটি ক্ষতিকর। শুধু তা-ই নয়, কোনটিতে প্রিজ়ারভেটিভ মেশানো আছে, তা-ও বোঝা সহজ নয়। তাই এই ব্যাপারে কিছু পরামর্শ রইল।
দেখুন উপকরণ
চিনি, ময়দা, হাইড্রোজেনেটেড অয়েল প্রথমেই থাকবে। এই ধরনের উপকরণ দেখলে কিনবেন না। ভাজাভুজি বা চিপ্সে অনেক সময়েই পাম অয়েল মেশানো থাকে। উপকরণে পাম অয়েল দেখলেও কিনবেন না।
সার্ভিং সাইজ়
ক্যালোরির পরিমাণ বোঝা যাবে। যদি দেখেন একটি বিস্কুটের প্যাকেটে ‘প্রতি সার্ভিংয়ে ৫০ ক্যালোরি’ লেখা আছে, তা হলে বুঝতে হবে প্রতিটি বিস্কুটে ক্যালোরির মাত্রা অনেক বেশি। ‘লো ফ্যাট’, ‘অর্গ্যানিক’, ‘ন্যাচারাল’ এমন অনেক শব্দই লেখা থাকে খাবারের প্যাকেটে। কিন্তু খুঁটিয়ে দেখে নিতে হবে উপকরণে ঠিক কী কী লেখা রয়েছে। যদি উপকরণের তালিকায় ডেক্সট্রোজ়, মল্টোজ়, ফ্রুক্টোজ় লেখা থাকে, তা হলে বুঝতে হবে সেগুলিতে শর্করার মাত্রা বেশি।
আরও পড়ুন:
নো সুগার
‘নো সুগার অ্যাডেড’। প্যাকেটের গায়ে এ রকম লেখা দেখে ভাবছেন, এতে চিনি নেই। ফলে এগুলি খেলে ডায়াবিটিসের সমস্যা বাড়বে না। তাতেও ক্ষতি হবে। কারণ চিনির বিকল্প হিসেবে এতে বেশির ভাগ ক্ষেত্রে স্টেভিয়া-র মতো উপাদান থাকে। সেটিও রক্তের চিনির মাত্রা বাড়িয়ে দেয়।
আইএনএস নম্বর
প্যাকেটের লেবেলে আইএনএস (ইন্টারন্যাশনাল নাম্বারিং সিস্টেম ফর ফুড অ্যাডিটিভস) কোড দেওয়া থাকে। সেই কোড দেখে বোঝা যায়, কোনটিতে কী কী রাসায়নিক আছে। অনেক সময়ে আইএনএস-এর বদলে ‘ই’ দিয়ে নম্বর লেখা থাকে। সেটা হল ইউরোপিয়ান স্ট্যান্ডার্ড। আইএনএস ২১১ মানে তাতে সোডিয়াম বেঞ্জোয়েট আছে, যা স্থূলত্বের কারণ হতে পারে। এই রাসায়নিক শিশুদের জন্য খুবই ক্ষতিকর।
আরও পড়ুন:
আইএনএস ২৫০ মানে হল সোডিয়াম নাইট্রাইট, যা স্নায়ুর রোগ ও ক্যানসারের ঝুঁকি বাড়াতে পারে।
আইএনএস ২২০ মানে এতে প্রচুর পরিমাণে সালফার ডাইঅক্সাইড আছে, যা শ্বাসের সমস্যা, ফুসফুসের রোগ, বিভিন্ন ধরনের অ্যালার্জির কারণ হতে পারে।
আইএনএস ১০২ মানে তাতে সিন্থেটিক রং মেশানো আছে, যা থেকে লিভার, কিডনির রোগ, অ্যালার্জি হতে পারে।
ফ্রোজ়েন ডেজ়ার্টে আইএনএস ৪৭১, ৪৩৩, ৪৬৬ থাকে। সমীক্ষায় দেখা গিয়েছে, এগুলি হার্টের ক্ষতি করে।