Advertisement
E-Paper

বাঁ চোখ না ডান চোখ কাঁপছে সারা ক্ষণ? কুসংস্কার নয়, কেন হয় এমন? কোন জটিল রোগের পূর্ব লক্ষণ?

সাধারণত চোখের পাতা কাঁপা খুব বড় কোনও রোগের কারণ নয়, কিন্তু যদি দীর্ঘ সময় ধরে এক চোখ বা দু’চোখেই এমন হতে থাকে, সেই সঙ্গে দৃষ্টি ঝাপসা হয়, তা হলে সতর্ক হতে হবে।

আনন্দবাজার ডট কম ডেস্ক

শেষ আপডেট: ১৮ অগস্ট ২০২৫ ০৯:০২
Understanding the reason of Eye Twitching and recognizing eye stroke warning signs

চোখের পাতা কাঁপছে সর্ব ক্ষণ, কী বিপদ ঘনাতে পারে? ছবি: ফ্রিপিক।

চোখ কাঁপা মানেই অশুভ কোনও লক্ষণ, এমন ভেবে নেন অনেকেই। বাঁ চোখ কাঁপলে শুভ, আর ডান চোখ কাঁপলে কতটা অর্থহানি হতে পারে, সে সব ধারণার বাছবিছার না করে বরং খেয়াল করুন, এতে স্বাস্থ্যহানি ঠিক কতটা হবে। চোখ কাঁপা মানে হল চোখের উপরের পাতায় কম্পন, কখনও চোখের নীচের ‘ওয়াটার লাইন’-এও কাঁপুনি হতে থাকে। এর সঙ্গে শুভ-অশুভের কোনও যোগসূত্র নেই, চিকিৎসা বিজ্ঞানের পরিভাষায় একে বলে ‘অকুলার মায়োকেমিয়া’। সাধারণত চোখের পাতা কাঁপা খুব বড় কোনও রোগের কারণ নয়, কিন্তু যদি দীর্ঘ সময় ধরে এক চোখ বা দু’চোখেই এমন হতে থাকে, সেই সঙ্গে দৃষ্টি ঝাপসা হয়, তা হলে সতর্ক হতে হবে। অনেক সময়েই স্ট্রোকের আগে চোখের পাতায় এমন কাঁপুনি ধরে।

স্ট্রোকের নাম শুনলেই আতঙ্ক হয়। তবে এ স্ট্রোক মস্তিষ্কে নয়, হয় চোখে। চিকিৎসকেরা বলেন, ‘আই স্ট্রোক’। চোখে স্বাভাবিক রক্ত চলাচল ব্যাহত হলে চোখের রক্তনালিগুলির উপরে চাপ বাড়ে। রেটিনা রক্তবর্ণ হয়ে ওঠে। চোখের ভিতর প্রদাহ শুরু হয়। স্ট্রোক কিন্তু একই সঙ্গে দু’টি চোখে হয় না। তবে, রোগ নির্ণয়ে বা চিকিৎসায় গাফিলতি ঘটলে দু’টি চোখেরই দৃষ্টিশক্তি নষ্ট হতে পারে। দীর্ঘ দিন ধরে রক্তচাপ বা শর্করা অনিয়ন্ত্রিত অবস্থায় থাকলেও কিন্তু তার প্রভাব চোখের উপর পড়ে। হঠাৎ ঘটা কোনও দুর্ঘটনায় চোখে আঘাত লাগলে বা সর্ব ক্ষণ কম আলোয় মোবাইল বা ল্যাপটপে দৃষ্টি দিয়ে রাখলে, তা থেকে চোখের দফারফা হতেই পারে। চোখের স্ট্রোক যে হঠাৎ করে হবে, তা নয়। এর কিছু লক্ষণ আগেই ফুটে ওঠে। তার মধ্যে একটি হল চোখের পাতা কাঁপা বা অকুলার মায়োকেমিয়া।

‘নেচার’ পত্রিকায় প্রকাশিত একটি গবেষণাপত্রে দাবি করা হয়েছে, অকুলার মায়োকেমিয়া যদি বাড়াবাড়ি পর্যায়ে পৌঁছে যায়, তা স্ট্রোকের ইঙ্গিত দিতে পারে। চোখের স্ট্রোককে চিকিৎসা বিজ্ঞানের পরিভাষায় বলে ‘রেটিনাল আর্টারি অক্লুশন’। রেটিনায় রক্ত সরবরাহকারী ধমনী বা শিরায় রক্ত জমাট বেঁধে বা অন্য কোনও কারণে ব্লক হয়ে যায়। এর ফলে রেটিনার কোষগুলি অক্সিজেনের অভাবে নষ্ট হতে থাকে। এতে এক চোখে আংশিক বা সম্পূর্ণ দৃষ্টিশক্তি নষ্ট হয়ে যেতে পারে।

দেশের ‘ন্যাশনাল ইনস্টিটিউট অফ হেল্‌থ’ থেকে এই বিষয়ে একাধিক গবেষণাপত্র প্রকাশিত হয়েছে। গবেষকেরা দাবি করেছেন, বেশির ভাগ ক্ষেত্রেই চোখে স্ট্রোক হলে তা রোগী বুঝতে পারেন না। কারণ, চোখের মধ্যে বিশেষ কোনও কষ্ট বা যন্ত্রণা হয় না। তবে, চোখের উপর অতিরিক্ত চাপ সৃষ্টি হয়। সে কারণেই চোখের পাতায় কম্পন হতে পারে। তা যদি দীর্ঘমেয়াদে চলতে থাকে তা হলে সতর্ক হতেই হবে। সে ক্ষেত্রে চক্ষু পরীক্ষা করিয়ে নেওয়াই বাঞ্ছনীয়।

চোখ ভাল রাখতে

১) নিয়মিত প্রাণায়াম করলে উচ্চ রক্তচাপ এবং ডায়াবিটিস নিয়ন্ত্রণে থাকে। ফলে চোখের উপরেও চাপ কম পড়ে। চোখের স্ট্রোক এড়ানোর একটি অন্যতম পন্থা হল প্রাণায়াম।

২) রোজের ডায়েটে বিটা-ক্যারোটিন যুক্ত খাবার, যেমন গাজর, পালংশাক, ব্রকোলি, মিষ্টি আলু রাখা যেতে পারে। ভিটামিন সাপ্লিমেন্ট যদি খান, তা হলে চিকিৎসকের পরামর্শ নিতে হবে।

৩) চোখকে পর্যাপ্ত বিশ্রাম দিতে হবে। দিনে যত ক্ষণ চোখ দু’টিকে কাজ না করালেই নয়, সেইটুকু ছাড়া বাকি সময় চোখকে বিশ্রাম দিন। রাতে শুয়ে মোবাইল ঘাঁটাঘাঁটি, কম আলোয় বই পড়া বা ল্যাপটপ একটানা দেখে গেলে চোখের ক্ষতি হবে।

৪) দিনে কত কাপ চা বা কফি খাচ্ছেন, সেটা খেয়াল রাখেন কি? অতিরিক্ত ক্যাফিন কিন্তু শরীরের জন্য ভাল নয়। গবেষণা বলছে, বেশিমাত্রায় ক্যাফিন শরীরে ঢুকলে তা ‘স্ট্রেস হরমোন’-এর ক্ষরণ বাড়িয়ে দেয়। তখন মানসিক ক্লান্তি বাড়ে। তার থেকেও চোখ কাঁপার লক্ষণ দেখা দিতে পারে।

৫) চোখের কিছু পরীক্ষা করিয়ে রাখা জরুরি। উচ্চ রক্তচাপ, ডায়বিটিস থাকলে রেটিনোপ্যাথি, ম্যাকুলার এডিমা, ম্যাকুলার ডিজেনারেশনের মতো রোগে আক্রান্ত হওয়ার ঝুঁকি বাড়ে। তাই বয়স ত্রিশ পেরোলে ভিস্যুয়াল অ্যাক্টিভিটি টেস্ট, আই রিফ্র্যাকশন টেস্ট, স্লিট-ল্যাম্প টেস্ট, আই মাসল টেস্ট, টোনোমেট্রির মতো কিছু পরীক্ষা করিয়ে রাখলে ভাল।

Eye Cate Tips Eye Twitching
Advertisement

আরও পড়ুন:

Share this article

CLOSE

Log In / Create Account

We will send you a One Time Password on this mobile number or email id

Or

By proceeding you agree with our Terms of service & Privacy Policy