ঘণ্টার পর ঘণ্টা বসে কাজ করলেও মেদ বাড়বে না, রক্তে শর্করাও থাকবে নিয়ন্ত্রণে। শুধু মানতে হবে ‘২-২০ সিটিং-ওয়াকিং রুল’। ৩০ থেকে ৪০ বছর বয়সিদের উপর সমীক্ষা চালিয়ে এমনটাই দাবি করেছেন গবেষকেরা। এতে জীবনধারায় আমূল বদল আনার প্রয়োজন নেই, খুব কড়া ডায়েটও করতে হবে না। কেবল মানতে হবে একটিই নিয়ম।
‘ডায়াবিটিস কেয়ার’ মেডিক্যাল জার্নালে নতুন এই পদ্ধতিটি নিয়ে খবর প্রকাশিত হয়েছে। গবেষকেরা জানিয়েছেন, ৮-১০ ঘণ্টা বসে কাজ করে নানা শারীরিক সমস্যা দেখা দিচ্ছে। ভুগছেন কমবয়সিরাই। আগে মনে করা হত, কেবল খাওয়াদাওয়ায় অনিয়ম করলেই রক্তে শর্করা বেড়ে যেতে পারে, কিন্তু এখন দেখা যাচ্ছে একটানা বসে থাকার কারণেও রক্তে শর্করা বিপজ্জনক ভাবে বাড়ছে। এই সমস্যা দূর করতেই ‘২-২০ সিটিং-ওয়াকিং রুল’-এর পরামর্শ দিচ্ছেন গবেষকেরা।
কী এই পদ্ধতি?
একটানা বসে না থেকে মাঝেমধ্যে উঠে ব্যায়াম বা স্ট্রেচিং করার পরামর্শ দেন অনেক ফিটনেস প্রশিক্ষকই। কিন্তু অফিসে বা কাজের জায়গায় তা নিয়ম মেনে করা সম্ভব নয়। সেই পরিস্থিতি ও পরিবেশও থাকে না। তাই সে ক্ষেত্রে সিটিং-ওয়াকিং পদ্ধতি কার্যকর হতে পারে। পদ্ধতিটি হল টানা ২০ মিনিট বসে থাকার পরে ২ মিনিটের জন্য উঠতে হবে ও কিছুটা হেঁটে আসতে হবে। দেখা গিয়েছে, প্রতি ২০ মিনিট অন্তর এমন করতে থাকলে রক্তে শর্করার মাত্রা ২০-৩০ শতাংশ কমতে পারে। কেবল তা-ই নয়, এই অভ্যাসে রক্তে খারাপ কোলেস্টেরল ও ট্রাইগ্লিসারাইডের মাত্রাও কমবে। যাঁদের উপর সমীক্ষা চালানো হয়েছিল, তাঁরা এই পদ্ধতিটি মেনে উপকৃত হয়েছেন বলে দাবি করা হয়েছে। অনেক ডায়াবিটিসের রোগীও এই নিয়ম মানলে উপকার পাবেন বলেই জানাচ্ছেন গবেষকেরা।
আরও পড়ুন:
২-২০ সিটিং-ওয়াকিং পদ্ধতিটি বিজ্ঞানসম্মত। কী ভাবে? একটানা বসে থাকার সময়ে পেশির সঙ্কোচন-প্রসারণ হয় না। ফলে সেই সময়ে ‘এনার্জি’ পেতে শরীর বেশি পরিমাণে গ্লুকোজ়ের নিঃসরণ করতে থাকে। ফলে রক্তে গ্লুকোজ়ের মাত্রা বাড়তে থাকে। ঘণ্টার পর ঘণ্টা বসে থাকলে ভাজাভুজি বা মিষ্টিজাতীয় খাবার খাওয়ার ইচ্ছা বেড়ে যায়। অনেকেই জাঙ্ক ফুড বা ঘন ঘন চা-কফি খেতে থাকেন। এতে হিতে বিপরীত হয়। তাই প্রতি ২০ মিনিট অন্তর উঠলে পেশির সঙ্কোচন-প্রসারণ সঠিক নিয়মে হলে শরীরও তার প্রয়োজনীয় শক্তির জোগান পাবে। এতে মেদও জমবে না আর রক্তে শর্করার মাত্রাও বাড়বে না। সারা শরীরে রক্ত সঞ্চালন ভাল হবে, হরমোনের ক্ষরণ ঠিকমতো হবে। ফলে ক্লান্তিও আসবে না আর বার বার খিদে পাওয়ার প্রবণতাও কমবে।