Advertisement
E-Paper

‘স্ট্রেস ফ্র্যাকচার’ কী? কেন পুরুষদের চেয়ে বেশি ভোগেন মহিলারাই, কোন বয়সে বেশি সতর্ক থাকা জরুরি?

মহিলারা বেশি ভোগেন স্ট্রেস ফ্র্যাকচারে। কোন বয়স থেকে হাড় দুর্বল হতে শুরু করে, কী ভাবে সাবধান থাকবেন?

আনন্দবাজার ডট কম ডেস্ক

শেষ আপডেট: ১৮ মে ২০২৫ ১৩:০০
What are the factors that make women more prone to stress fractures over men

‘স্ট্রেস ফ্র্যাকচার’-এর লক্ষণ কী কী, কখন চিকিৎসকের কাছে যাবেন? ছবি: ফ্রিপিক।

দাঁত থাকতে দাঁতের মর্ম যেমন কম জনেই বোঝেন, তেমনই হাড়ের মর্মও বিশেষ কেউ বোঝেন না। আলাদা করে হাড়ের যত্নআত্তি করতে হয় না বলে তা নিয়ে খুব একটা মাথা ঘামান না কেউই। তবে যখন আঘাত লাগে, হাড় ভাঙে বা হাড়ে চিড় ধরে, তখন কষ্টের শেষ থাকে না। আর যত্নআত্তির প্রয়োজনও সেই সময়েই পড়ে। তখন সাবধানে থাকতে কী করা উচিত, হাড় ভাল রাখার কী কী ব্যায়াম আছে, কী খেলে হাড় মজবুত হবে— ইত্যাদি বিষয়গুলি নিয়ে ভাবনাচিন্তা শুরু হয়। হাড় কী ভাবে ভাঙে, কখন ভাঙে, কাদের বেশি হয়— এই নিয়ে সচেতনতা কম মানুষেরই আছে। বড় কোনও দুর্ঘটনা বা আঘাত লাগা ছাড়াও কিন্তু হাড় ভাঙে বা হাড়ে চিড় ধরে, যাকে ‘বোন ফ্র্যাকচার’ বল হয়। তেমনই একটি হল ‘স্ট্রেস ফ্র্যাকচার’ যা কিন্তু মহিলাদেরই বেশি হয়।

দেশের ‘ন্যাশনাল ইনস্টিটিউট অফ হেল্‌থ’ থেকে প্রকাশিত একটি গবেষণাপত্রে উল্লেখ করা হয়েছে, পুরুষের চেয়ে মহিলারাই হাড়ের স্ট্রেস ফ্র্যাকচারে বেশি ভোগেন। যাঁরা খেলাধূলা বেশি করেন, জিমে গিয়ে ঘণ্টার পর ঘণ্টা দৌড়ন, জগিং বা ওয়েট ট্রেনিং করেন, অথবা নাচ, অ্যারোবিক্স করেন, তাঁদের এই ফ্র্যাকচার বেশি হয়।

‘স্ট্রেস ফ্র্যাকচার’ কী ভাবে হয়?

হাড়ের অনেক স্তর থাকে। একেবারে বাইরে একটা পর্দা থাকে, যাকে পেরিঅস্টিয়াম বলা হয়, তার পর থাকে কর্টিকাল বোন, তার মাঝে থাকে মজ্জা। এটি অনেকটা রডের মতো, ত্রিমাত্রিক গঠনের। ওই অংশটি যদি ভেঙে যায় বা থেঁতলে যায়, তখন বলা হয় হাড়ে ‘ফ্র্যাকচার’ হয়েছে। এই বিষয়ে অস্থি চিকিৎসক সুব্রত গড়াই জানাচ্ছেন, প্রধানত ফ্র্যাকচার হয় কোনও ট্রমা বা ইনজুরি থেকে। তাতে হয় হাড় সম্পূর্ণ ভাবে ভেঙে যায় বা তাতে চিড় ধরতে পারে। হাড়ের সঙ্গে যে পেশি জুড়ে থাকে, সেগুলিতে ক্ষত হয়, হাড়ের লিগামেন্ট ছিঁড়ে বেরিয়ে আসতে পারে। শরীরের কোনও একটি অংশের হাড় ও পেশিতে ক্রমাগত চাপ পড়ার কারণে যখন ওই অংশের পেশি দুর্বল হয় ও হাড়ে চিড় ধরে, তখন তাকে স্ট্রেস ফ্র্যাকচার বলে। এটি গোড়ালি মচকে যাওয়া বা হাত ভেঙে যাওয়ার মতো হঠাৎ করে ঘটা দুর্ঘটনা নয়। দীর্ঘ সময় ধরে হাড়ে চাপ পড়তে পড়তে বা আঘাত লেগে হাড় দুর্বল হয়ে গিয়ে ফ্র্যাকচার হয়।

এটি খেলোয়াড়দের বেশি হয়, তবে যাঁরা খুব বেশি দৌড়োদৌড়ি বা ভারী ব্যায়াম করেন, তাঁদেরও হতে পারে। অস্টিয়োপোরোসিস থেকেও ‘স্ট্রেস ফ্র্যাকচার’ হতে পারে। হাড়ের ভিতরে টিউমার বা কোনও সংক্রমণের কারণে হাড়ের শক্তি কমে গিয়েও এমন হতে পারে। মহিলাদের রজোনিবৃত্তির পরে ‘স্ট্রেস ফ্র্যাকচার’ হওয়ার ঝুঁকি বাড়ে। কারণ ওই সময়ে ইস্ট্রোজেন হরমোনের মাত্রা কমতে থাকে, ফলে শরীরের প্রতিরোধ শক্তিও দুর্বল হয়ে পড়ে।

শরীরে ভিটামিন ডি ও ক্যালশিয়ামের ঘাটতির কারণেও ‘স্ট্রেস ফ্র্যাকচার’ হতে পারে। যাঁরা দীর্ঘ সময় ধরে স্টেরয়েড খান, তাঁদেরও হতে পারে। তাই চল্লিশের পর থেকে খাওয়াদাওয়ায় বিশেষ ভাবে নজর দেওয়া জরুরি। যাঁরা খেলাধূলার সঙ্গে জড়িত, নাচ, সাঁতারের মতো শারীরিক কসরতও করেন, তাঁদের ডায়েটে ভিটামিন, খনিজ ও ফাইবার সমৃদ্ধ খাবার রাখতেই হবে।

চিকিৎসক জানাচ্ছেন, দীর্ঘ সময় ধরে হাড়ে ব্যথা, ফুলে যাওয়া, শরীরের ওই অংশ নীল হয়ে যাওয়ার মতো লক্ষণ দেখা দিলে প্রথমেই এক্স-রে, সিটি স্ক্যান, কিছু ক্ষেত্রে এমআরআই করে জায়গাটি দেখে নেওয়া জরুরি। ফ্র্যাকচারের নিরাময় সম্পূর্ণ নিজে থেকেই হয়। বয়স অনুযায়ী হয়তো সময় কম কিংবা বেশি লাগতে পারে। তাই চিকিৎসকের কাছে সঠিক সময়েই যাওয়া প্রয়োজন।

Stress Fracture Bone Health
Advertisement

আরও পড়ুন:

Share this article

CLOSE

Log In / Create Account

We will send you a One Time Password on this mobile number or email id

Or

By proceeding you agree with our Terms of service & Privacy Policy