হার্ট অ্যাটাক বা হৃদ্রোগ মানেই যে বুকে তীব্র যন্ত্রণা হবে, তা নয়। অনেক সময়ে নীরবে এসে প্রাণ কেড়ে নিতে পারে এই রোগ। সম্প্রতি জর্জিয়ার এক মেডিসিনের চিকিৎসক জেরেমি লন্ডন ভিডিয়ো করে জানিয়েছেন, ছবি, ওয়েবসিরিজ় বা ধারাবাহিকে যেমন হার্ট অ্যাটাক দেখানো হয়, তা হল, আকস্মিক যন্ত্রণায় বুকে হাত দিয়ে মাটিতে লুটিয়ে পড়া। কিন্তু এমন ঘটনা সব সময়ে না-ও ঘটতে পারে। কোনও কোনও ক্ষেত্রে হয়তো কোনও ব্যথাই হল না! আবার অনেকেই ভাবেন, এটি হৃদ্রোগের একমাত্র উপসর্গ।
হার্ট অ্যাটাক যে সব সময়ে জানান দিয়ে আসবে, তা না-ও হতে পারে। ছবি: সংগৃহীত।
সাইলেন্ট হার্ট অ্যাটাক নিয়ে বিস্তারিত জানালেন কলকাতার দুই চিকিৎসক। তাঁদের মতে, নীরবে হার্ট অ্যাটাক হয়ে যাওয়ার প্রবণতা বেশি দেখা যায় ডায়াবিটিসের রোগীদের মধ্যে। পাশাপাশি যাঁদের স্নায়বিক সমস্যা রয়েছে, তাঁদের মধ্যেও নীরবে হার্ট অ্যাটাক হয়ে যাওয়ার ঝুঁকি থাকে। হার্টের চিকিৎসক উদয়শঙ্কর দেব বলছেন, ‘‘সাইলেন্ট মানে কোনও উপসর্গই থাকবে না। এমন অনেক সময়ে হয়, হার্ট অ্যাটাকের সময়ে কিছুই বোঝা যায়নি, অন্য কোনও কারণে পরে রোগী এসে পরীক্ষা করানোর পর জানা গেল, হার্ট অ্যাটাক হয়ে গিয়েছে। কিন্তু বুঝতে বুঝতে দেরি হয়ে যায় বলে তত দিনে হার্টের পেশিগুলি ক্ষতিগ্রস্ত হয়ে যায়, পাম্পিংয়ের ক্ষমতা কমে যায়। অধিকাংশ সময়ে এমনটা ঘুমের মধ্যেও হয়। ডায়াবিটিস, স্থূলত্বের সমস্যা থাকলে এই ঝুঁকি বেশি।’’ চিকিৎসক জানাচ্ছেন, হার্ট অ্যাটাকের মাস খানেক পরে শ্বাসকষ্ট হতে পারে। এ ছাড়া খুব একটা কিছুই বোঝা যায় না।
মেডিসিনের চিকিৎসক অরিন্দম বিশ্বাসও উদয়শঙ্করের সঙ্গে সহমত। তাঁর পরামর্শ, ‘‘ডায়াবিটিসের সমস্যা থাকলে নিয়মিত পরীক্ষানিরীক্ষা করানো দরকার। এক মাত্র তাতেই বোঝা যাবে, অজান্তে হার্ট অ্যাটাক হয়ে গিয়েছে কি না। সাইলেন্ট অ্যাটাকে বুকে কোনও রকম ব্যথা হবে না। কেবল হালকা অস্বস্তি হতে পারে। এ ছাড়া উপসর্গ বলতে অল্প শ্বাসকষ্ট, প্রবল ক্লান্তি, বাঁ হাতে ব্যথা, রক্তচাপ হঠাৎ নেমে যাওয়া ইত্যাদি। গ্যাস, অম্বল ভেবে অবহেলা করা উচিত নয়।’’ সঙ্গে সঙ্গে চিকিৎসকের পরামর্শ নিয়ে ইসিজি বা ইকোকার্ডিয়োগ্রাম করানো দরকার।