Advertisement
E-Paper

বড় কঠিন অসুখ পালমোনারি ফাইব্রোসিস, শীতে শ্বাসকষ্ট বাড়ে, আবহাওয়ার বদলকে মানিয়ে না নিলেই বিপদ

পালমোনারি ফাইব্রোসিস একদিন বা দু’দিনের অসুখ নয়। গোটা ফুসফুসেরই ক্ষয় হতে থাকে। আবহাওয়া বদলের সময়ে সাধারণ সর্দি-কাশি, দূষণ, ইনফ্লুয়েঞ্জা বা নিউমোনিয়ার মতো জ্বর এই রোগকে আরও বাড়িয়ে তোলে। তাই সাবধানে থাকা জরুরি।

আনন্দবাজার ডট কম ডেস্ক

শেষ আপডেট: ২৮ ডিসেম্বর ২০২৫ ০৮:৫৮
What is pulmonary fibrosis, causes, symptoms and treatment tips

পালমোনারি ফাইব্রোসিস বিপজ্জনক, উস্তাদ জ়াকির হুসেনের মৃত্যু হয় এই রোগেই। গ্রাফিক: আনন্দবাজার ডট কম।

সিওপিডি, হাঁপানি তবুও সহনযোগ্য। কিন্তু পালমোনারি ফাইব্রোসিস ফুসফুসের এমন এক রোগ যা ওষুধেও সারে না। ফুসফুস ধীরে ধীরে শক্ত হতে থাকে। ক্ষয়ে যেতে থাকে তার কোষগুলি। ফাইব্রোসিস এক দিন বা দু’দিনে হয় না। দীর্ঘ সময় ধরে ক্ষয় হতে হতে শেষে বপিদ ঘনায়। তাই সিওপিডি, হাঁপানির মতো রোগ থাকলে আবহাওয়ার বদলের সময়ে অনেক বেশি সতর্ক থাকতে হয়। ঘন ঘন ঠন্ডা লাগা, নিউমোনিয়া বা ইনফ্লুয়েঞ্জার সংক্রমণ অথবা যে এলাকার বায়ু দূষিত, সেখানে দীর্ঘমেয়াদে থাকার কারণে ফাইব্রোসিস হানা দিতেই পারে। ধূমপান বা প্যাসিভ স্মোকিং, বাতাসের ধুলোবালি, সিলিকার মতো উপাদান ফুসফুসে ঢুকলে তার কোষগুলির ক্ষয় ঘটাতে থাকে। তবলাবাদক উস্তাদ জ়াকির হুসেন এই রোগেই প্রয়াত হয়েছিলেন।

পালমোনারি ফাইব্রোসিসেস আহত হয় ফুসফুস

ফুসফুসের কোষ ক্ষতিগ্রস্ত হয় ও ধীরে ধীরে স্থূল ও শক্ত হয়ে শ্বাসপ্রশ্বাসে বাধা তৈরি করে। শক্ত হয়ে যাওয়া কোষসমূহের ফলে ফুসফুস স্বাভাবিক ভাবে কাজ করতে পারে না। তখনই শুরু হয় শ্বাস নেওয়ার সমস্যা। রক্তে অক্সিজেনের ঘাটতি দেখা দেয়। ফুসফুস ক্রমশ তার নমনীয়তা হারাতে শুরু করে। ধীরে ধীরে শুকিয়ে যেতে শুরু করে। শুধু তাই নয়, শ্বাসযন্ত্রের ভিতর যে ছোট ছোট বায়ুথলি বা অ্যালভিয়োলাই রয়েছে, সেগুলিও ক্রমশ শক্ত এবং পুরু হতে শুরু করে। ফলে পালমোনারি হাইপারটেনশন বা শ্বাসকষ্ট শুরু হয়। সেখান থেকে কিন্তু হৃদ্‌যন্ত্র বিকল হয়ে যাওয়ার আশঙ্কাও থাকে।

কী কী লক্ষণ দেখা দেবে

ফুসফুসের সমস্যায় শ্বাসকষ্ট স্বাভাবিক একটি লক্ষণ। তবে ফাইব্রোসিস হলে সামান্য হাঁটাচলা, হালকা শরীরচর্চাতেও শ্বাস নিতে কষ্ট হয়। এ ছাড়া বছরভর শুকনো কাশি, ক্লান্তির মতো একেবারে সাধারণ কিছু উপসর্গ দেখা দিতে পারে। সাধারণ ঠান্ডা লাগা বা ইনফ্লুয়েঞ্জাজনিত জ্বর-সর্দি হলে ফাইব্রোসিস বাড়াবাড়ি পর্যায়ে চলে যেতে পারে।

এই রোগের তেমন কোনও নির্দিষ্ট চিকিৎসা নেই। সমস্যা থেকে চিরতরে মুক্তি পেতে গেলে ফুসফুস প্রতিস্থাপন করাতে হয়। সে সব বেশ খরচসাপেক্ষ। তা ছাড়া বয়স্কদের ক্ষেত্রে এই অস্ত্রোপচার বেশ ঝুঁকিপূর্ণ। তবে এমন ওষুধ বাজারে রয়েছে, যা ফুসফুসের কার্যক্ষমতা নষ্ট করার এই গতি শ্লথ করে দিতে পারে। তাতে কষ্ট খানিকটা লাঘব হয়। চিকিৎসকেরা সাবধানে থাকারই পরামর্শ দেন। শীতের সময়ে যেহেতু দূষণের মাত্রা বাড়ে, তাই ফাইব্রোসিস থেকে বাঁচতে হলে মাস্ক পরা খুব জরুরি। ঠান্ডা লাগানো যাবে না কোনওভাবেই। সামান্য জ্বর হলেও দ্রুত চিকিৎসকের কাছে যেতে হবে। আর নিয়মিত শ্বাসের ব্যায়াম করাও জরুরি।

উস্তাদ জ়াকির হুসেন দীর্ঘদিন ইডিয়োপ্যাথিক পালমোনারি ফাইব্রোসিস অসুখে ভুগেছিলেন। এ ক্ষেত্রে ফুসফুসের কোষ ক্ষতিগ্রস্ত হয় ও ধীরে ধীরে স্থূল ও শক্ত হয়ে গিয়ে শ্বাসকার্যে বাধার সৃষ্টি করে। তখনই শুরু হয় শ্বাস নেওয়ার সমস্যা। এই রোগের সে ভাবে চিকিৎসা নেই। এটাকে প্রতিরোধ করাও কঠিন। কিছু ওষুধ ব্যবহার করা চলে, তবে সেগুলিও আংশিক কাজ করে। তাই সতর্ক ভাবে চিকিৎসা করতে হবে।

Lung Diseases Breathing Problems
Advertisement

আরও পড়ুন:

Share this article

CLOSE

Log In / Create Account

We will send you a One Time Password on this mobile number or email id

Or

By proceeding you agree with our Terms of service & Privacy Policy