কেমোথেরাপিতে চুল উঠে যায় ক্যানসার আক্রান্তদের। তাতে অনেকে হতাশাগ্রস্ত হয়ে পড়েন। বাড়ি থেকে বার হতে চান না। ক্যানসারে চুল ওঠার সমস্যা বেড়ে যায়। একে চিকিৎসা বিজ্ঞানের ভাষায় ‘ক্যানসার অ্যালোপেসিয়া’ বলা হয়। বার বার কেমোথেরাপি, রেডিয়োথেরাপি বা হরমোনের চিকিৎসা হলে তখন অস্বাভাবিক হারে চুল ঝরতে থাকে। এই সমস্যা থেকে রেহাই দিতে পারে ‘স্ক্যাল্প কুলিং থেরাপি’। এত দিন ইউরোপ, আমেরিকার নানা দেশে হত, এখন এ দেশেও এই থেরাপি শুরু হয়েছে।
স্ক্যাল্প কুলিং থেরাপি কী?
স্ক্যাল্প কুলিং থেরাপিকে বলা হয় ‘স্ক্যাল্প হাইপোথারমিয়া’। ‘আমেরিকান ক্যানসার সোসাইটি’-র গবেষকেরা জানিয়েছেন, এই পদ্ধতিতে মাথার ত্বকের তাপমাত্রা কমিয়ে প্রদাহ কমানোর চেষ্টা করা হয়, যাতে চুল পড়া বন্ধ হয়। মূলত মাথা ঠান্ডা রাখার জন্য এমন কিছু ডিভাইস ব্যবহার করা হয়, যা ক্যানসার রোগীদের কষ্টও কমাতে পারে। দু’রকমের ডিভাইস ব্যবহার করেন চিকিৎসকেরা— ১) অটোমেটেড বা স্বয়ংক্রিয় এবং ২) ম্যানুয়াল।
আরও পড়ুন:
অটোমেটেড সিস্টেমের মধ্যে রয়েছেন ‘স্ক্যাল্প কুলিং ক্যাপ’ বা ‘কোল্ড ক্যাপ’। এক ধরনের ক্যাপ পরিয়ে দেওয়া হয় ক্যানসার রোগীর মাথায়। এই ক্যাপে জেল বা কোনও জলীয় বস্তু থাকে, যা মাথার ত্বককে ঠান্ডা রাখতে সাহায্য করে। এই ধরনের ক্যাপ সেই রোগীদের দেওয়া যায়, যাঁদের টিউমার রয়েছে। রক্তের ক্যানসারের রোগীদের এমন ক্যাপ পরানো হয় না।
ম্যানুয়াল স্ক্যাল্প কুলিং ডিভাইস হিসেবে ‘ফ্রোজ়েন জেল ক্যাপ’ ব্যবহার করা হয়। এটি স্বয়ংক্রিয় পদ্ধতিতে কাজ করে না। ক্যাপে ড্রাই আইস ভরে দেওয়া হয়। রোগীর মাথায় পরালে তাঁর মাথা ঠান্ডা থাকে ঠিকই, তবে এই ক্যাপ বেশি ক্ষণ ঠান্ডা ধরে রাখতে পারে না। ঘরের স্বাভাবিক তাপমাত্রায় এলে গরম হতে শুরু করে। প্রতি ৩০ মিনিট অন্তর ক্যাপ বদল করার প্রয়োজন হয়। এই ধরনের ক্যাপের দামও অটোমেটেড ক্যাপের চেয়ে কম।
গবেষকেরা জানাচ্ছেন, স্ক্যাল্প কুলিং ক্যাপ চিকিৎসকের পরামর্শেই পরা উচিত। কী ধরনের থেরাপি চলছে, তার উপর নির্ভর করবে রোগীকে ক্যাপ পরানো যাবে কি না। অনেক সময়েই খুব আঁটসাঁট করে ক্যাপ পরিয়ে রাখলে তার থেকে মাথা যন্ত্রণা, বমি ভাব, শুষ্ক ত্বকের সমস্যা হতে পারে। তবে দেখা গিয়েছে, এমন কুলিং ডিভাইস অত্যধিক হারে চুল পড়া কমিয়ে দিতে পারে। কেমোথেরাপির কারণে শরীরে যে প্রদাহ হয়, তা-ও অনেকাংশেই কমিয়ে দিতে পারে।