প্রচণ্ড গরমের সময়েই কানের এই রোগ হয়। সুইমার’স ইয়ার মানে এই নয় যে, সাঁতার কাটলেই রোগটি হবে। কানের এই সংক্রমণ ব্যাক্টেরিয়া বা বিষাক্ত ছত্রাকের কারণে হয়। আদতে, কানে জল ঢুকে যদি তা ঘণ্টার পর ঘণ্টা কানে আটকে থাকে, তা হলে সেখানে জীবাণু সংক্রমণ হয়ে ব্যথা, পুঁজ হতে পারে। তার থেকে কানে ঘা, কানের চারপাশের ত্বকে এগজ়িমাও হতে দেখা যায়।
সুইমার’স ইয়ার এক সময়ে সাঁতারুদের বেশি হত। একটানা জলে সাঁতার কাটাতেন যাঁরা, তাঁদের কানে জল আটকে থেকে সেখানে সংক্রমণ ঘটত। তা থেকেই রোগটির নাম দেওয়া হয়েছে সুইমার’স ইয়ার। এই রোগটিকে ‘ওটিটিস এক্সটার্না’ও বলা হয়। গরমের সময়ে ঘাম জমেও এই সংক্রমণ ঘটতে পারে। বাতাসে যদি আর্দ্রতা বেশি থাকে এবং দীর্ঘ সময় ঘামে ভেজা জামাকামড় পরে থাকেন, তা থেকেও সংক্রমণ ঘটতে পারে। বহিঃকর্ণে সংক্রমণ বেশি ঘটে।
কেন হয় সুইমার’স ইয়ার?
ভিজে জায়গায় ব্যাক্টেরিয়া তাড়াতাড়ি বংশবিস্তার করে। কানের ভিতরে ঘাম জমে থাকলে বা দীর্ঘ সময় জল ঢুকে থাকলে সেখানে বংশবিস্তার করার উপযুক্ত পরিবেশ পেয়ে যায় ব্যাক্টেরিয়া। কয়েক ধরনের ছত্রাকও জন্মায়। তা ছাড়া, পুলের জলে ক্লোরিন-সহ নানা রাসায়নিক থাকায়, সেখানে বেশি ক্ষণ সাঁতার কাটলে কানে সংক্রমণ ঘটতে পারে। অপরিষ্কার জলে স্নান করলে বা সাঁতার কাটলেও এ সমস্যা হতে পারে।
আরও পড়ুন:
সুইমার’স ইয়ার আরও নানা কারণে হতে পারে, যেমন অপরিষ্কার ইয়ার বাড থেকে কানে জীবাণু সংক্রমণ ঘটতে পারে। কানে যে ‘ওয়াক্স’ জমে, তার একটা নির্দিষ্ট পিএইচ থাকে, যা জীবাণু থেকে কানকে রক্ষা করে। অনেকেই কটন বাড, চুলের ক্লিপ, সেফটিপিন, কাঠি ইত্যাদি দিয়ে কান পরিষ্কার করেন। এতে তাঁদের কানে পিএইচ-এর ভারসাম্য বিঘ্নিত হয়। ফলে সহজেই কানে সংক্রমণ হতে পারে। ক্রমাগত খোঁচাখুঁচিতে কানের ভিতরের ত্বকেরও ক্ষতি হয়। সেখান থেকেই জীবাণু বাসা বেঁধে গোটা কানে ছড়িয়ে পড়ে। ইয়ার ফোন কিংবা কানের দুল থেকেও জীবাণু সংক্রমণ হতে পারে।
লক্ষণ কী কী?
সুইমার’স ইয়ার একসঙ্গে দু’কানেই হয়। প্রাথমিক ভাবে এ ক্ষেত্রে কানে অল্প ব্যথা, চুলকানি হতে পারে। কখনও কান লাল হয়ে ফুলে যায়। কান থেকে পুঁজ বার হতে পারে। জ্বরও আসতে পারে।
কানে ব্যথা হলে বা পুঁজ বার হলে দেরি না করে চিকিৎসকের কাছে যাওয়াই ভাল। সাধারণত এ ক্ষেত্রে সাকশন পদ্ধতিতে কান পরিষ্কার করা হয়। অ্যান্টিবায়োটিক কিংবা অ্যান্টিফাঙ্গাল ড্রপও দেন চিকিৎসকেরা।