শরীর সুস্থ রাখতে হলে প্রতি দিনের যাপনে কিছু বদল আনতেই হবে। ভেবেই দেখুন না, ডায়েট করছেন, শরীরচর্চাও অল্পবিস্তর করছেন, তা-ও শরীর সব সময়ে সুস্থ থাকছে না। আজ মাথাব্যথা, তো কাল গাঁটে গাঁটে ব্যথা। গ্যাস-অম্বলের সমস্যা প্রায়ই লেগে থাকে। মরসুম বদলের সময়ে হাঁচি-কাশি, অ্যালার্জির সমস্যাও ভোগায়। এর কারণই হল এমন কিছু বদভ্যাস, যা অজান্তেই করে চলেন বেশির ভাগই। কেবল শরীর সুস্থ রাখা নয়, মনও ভাল রাখা জরুরি। তাই সুস্থ থাকতে ও অসুখবিসুখ দূরে রাখতে হলে ৫টি কাজ রোজ করতেই হবে।
কোন কোন অভ্যাসে বদল আসবে শরীর-মনে?
রোজ ১০ মিনিট হাঁটা
সকালে হোক বা বিকেলে, রোজ মিনিট দশেক হাঁটলেও শরীর ভাল থাকবে। হাঁটলে সারা শরীরের ব্যায়াম হয়। রক্ত সঞ্চালন ঠিকমতো হয়। ঘুমের সমস্যাও দূর হয়। ভারী খাবার খাওয়ার পরে শুয়ে না পড়ে যদি হাঁটাহাঁটি করা যায়, তা হলে অম্বল-বদহজমের সমস্যা হবেই না। ফিটনেস প্রশিক্ষকেরা বলেন, হাঁটলে কার্ডিয়ো ও স্ট্রেংথ ট্রেনিংয়ের মতো ব্যায়াম হয়। যাঁরা সময়ের অভাবে জিমে যেতে পারছেন না, তাঁরা রোজ মিনিট দশেক হাঁটলেই উপকার পাবেন।
দিন শুরু হোক লেবু-আদা খেয়ে
মেদ ঝরানোর নানা ধরনের উপায় খোঁজার চেষ্টা করেন অনেকে। নেটমাধ্যম খুললেই ওজন ঝরানোর নানা মন্ত্র চোখে পড়ে। কেউ বলেন দীর্ঘ ক্ষণ উপোস করলেই মেদ ঝরবে। কেউ বলেন ঘণ্টার পর ঘণ্টা ব্যায়াম করলেই ফল পাবেন দ্রুত। যদি ওজন কমাতে চান, তা হলে রোজ সকালে ঘুম থেকে উঠে দুধ চা বা দুধ দিয়ে বানানো কফিতে চুমুক না দিয়ে খেতে পারেন আদা ও লেবু দিয়ে বানানো ডিটক্স পানীয়। এতে এক চামচ মধু মিশিয়ে দিলেই হল। এই পানীয় রোজ খেলে রক্তে খারাপ কোলেস্টেরলের মাত্রা কমবে, অন্ত্রে উপকারী ব্যাক্টেরিয়ার সংখ্যা বাড়বে, অতিরিক্ত ক্যালোরিও পুড়বে।
প্রাণায়াম
শ্বাসের ব্যায়াম রোজ অন্তত ১০ মিনিট করতে পারলে ভাল হয়। এতে ফুসফুসের জোর বাড়বে। শরীর সুস্থ রাখতে হলে রোগ প্রতিরোধ শক্তি বাড়াতেই হবে। সে জন্য নিয়ম করে শ্বাসের ব্যায়াম অভ্যাস করা জরুরি। ম্যাটের উপরে শিরদাঁড়া সোজা করে পা মুড়ে বসুন। মাথা ও ঘাড় টান টান রাখুন। দু’হাত থাকুক দুই হাঁটুর উপরে। দরকার হলে কোমরের পিছনে একটা কুশন রাখতে পারেন। এ বার চোখ বন্ধ করে এই অবস্থানে আরামদায়ক ভাবে বসুন। এ বার নাক দিয়ে গভীর ভাবে শ্বাস টেনে ১০ গুনুন, তার পরে ধীরে ধীরে শ্বাস ছাড়ুন। এই ব্যায়াম অভ্যাস করলে মনঃসংযোগও বাড়বে।
আরও পড়ুন:
৩০ মিনিটের স্ট্রেচিং
একটানা কাজ নয়, বিরতি নিয়ে যে কোনও কাজই করতে হবে। ঘণ্টার পর ঘণ্টা বসে থাকা বা দাঁড়িয়ে থাকা কোনওটাই ভাল নয়। এতে পেশির নমনীয়তা কমে। তাই দিনে অন্তত আধ ঘণ্টা সময় বার করে স্ট্রেচিং করতে পারলে ভাল হয়। সহজ স্ট্রেচিংই করবেন, যেমন অফিসের চেয়ারে একটানা বসে না থেকে ১০ মিনিট অন্তর এক বার উঠুন, আর বসুন। এই ওঠাবসা ২০ বার করুন। এতেও পেশির ব্যায়াম হবে।
ঘাড় সোজা করে বা ঝুঁকিয়ে কম্পিউটার বা ল্যাপটপের দিকে একটানা তাকিয়ে থাকার কারণে ঘাড়ের পেশির নমনীয়তা কমতে থাকে। এর থেকে স্পন্ডিলাইটিসের সমস্যাও বাড়ে। শ্বাস-প্রশ্বাস স্বাভাবিক রেখে ঘাড়-মাথা ডান দিকে থেকে বাঁ দিকে ঘুরিয়ে আনুন ১০ বার। মাথা সোজা করুন। এ বার বাঁ দিক থেকে ডান দিকে ১০ বার। এ বার মাথা পিছন দিকে হেলিয়ে দিন যথাসম্ভব। এই ভাবে ঘাড় ও কাঁধের ব্যায়ামও হবে।
রাতে চা-কফি নয়
রাতের খাবার ৮-৯টার মধ্যে সেরে ফেলতে হবে। বেশি রাতে চা বা কফি কোনওটাই খাওয়া চলবে না। যাঁরা রাত জাগেন ও ঘন ঘন চা বা কফি খান, তাঁদের শরীরে ক্য়াফিনের মাত্রা বাড়ে। এর থেকে নানা অসুখবিসুখ দেখা দেয়।